ইবি ভিসির অফিসে তালা, অডিও ক্লিপ বাজিয়ে আন্দোলন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের অডিও ফাঁসের ঘটনায় তৃতীয় দিনেও ভিসি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্ত্বা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন। একের পর এক নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করার পরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নিচ্ছেনা। এতে দিনি দিনে তার এসব কর্মকাণ্ডের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সর্বশেষ গত ১৬ অক্টোবর সন্ধায় নাহিদ নামের এক ভ্যান চালককে পিটিয়ে তার পা ভেঙ্গে দিয়েছে সুদীপ্ত শাহিন।
জানা যায়, ভ্যানচালক নাহিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের এক শিক্ষকের ছোট বোনকে বাসায় পোঁছে দেন। ফেরার সময় তাকে আটক করেন সুদীপ্ত শাহিন। তারপর তাকে নিরাপত্তা অফিসের কনট্রোল রুমে নিয়ে যান এবং লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। লাঠি দিয়ে মারার পাশাপাশি উপর্যুপরি কিল ঘুষিও মারেন!
এই বিষয়ে মারধরের শিকার নাহিদ হক বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্যম্পাসে রিক্সা চালানোর সময় সুদীপ্ত শাহিন আমাকে আটক করেন। আমাকে কনট্রোল রুমে ধরে নিয়ে গিয়ে লাঠি দিয়ে বেধরক পেটাতে থাকে এবং গায়ে মুখে কিল ঘুষি দিতে থাকে। প্রায় চার ঘন্টা আমাকে ঐ রুমে আটকে রাখে। মারধরের ঘটনা বাইরে বলবো না এই শর্তে আমাকে মুক্তি দেয়, নতুবা ড্রাগের ব্যবসায়ী হিসেবে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেয়।'
এদিকে এই ঘটনায় ক্যাম্পাস জুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। সবাই ফেসবুকে বিভিন্ন প্রতিবাদমূলক পোস্ট দিয়ে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার অপসারণ দাবি করছেন।
ইমরান হোসেন নামের একজন লিখেছেন, ‘একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কতটা অনিরাপদ, সুদীপ্ত শাহীন তার জ্বলন্ত উদাহরণ। ইতঃপূর্বে বহু ন্যাক্কারজনক ঘটনার সৃষ্টিকারী হিসেবে তিনি বহুল আলোচিত ও পরিচিত।’
এর আগেও এই প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাদক সেবন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারিকে মারধর, রিকশা চালককে মারধর, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করা, বর্তমান শিক্ষার্থীদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা, নারী সংবাদকর্মীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ রয়েছে।
এসব অভিযোগে বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ, ভিসির বাসভবন ঘেরাওয়ের মত কর্মসূচী পালন করলেও কোন বিচার হয়নি এই কর্মকর্তার।
এ বিষয়ে সুদীপ্ত শাহিনকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে পাওয়া যায়নি। তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। ঘটনা ঘটানোর পর তিনি এরকমটা আগেও করেছেন।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ বলেন, সুদীপ্ত শাহীনের নামে একাধিক অভিযোগ ইতোমধ্যে আমাদের কাছে এসেছে। প্রো-ভিসি নুরুল আলমকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দিলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। আর নাহিদের মারধরের বিষয়টি আমি শুনেছি। আগামীকাল নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও অন্যান্যদের সাথে কথা বলবো। অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
সুদীপ্ত শাহীনের বিরুদ্ধে তদন্তকারীর প্রধান প্রো-ভিসি নুরুল আলম বলেন, সুদীপ্ত শাহীন বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর তদন্ত শেষ হয়েছে। শুধু একজন আইন কর্মকর্তাকে দিয়ে অভিযোগগুলো লেখার কাজ বাকী আছে। আমরা খুব তাড়াতাড়ি তদন্তের রিপোর্ট জমা দিবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।