পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। এখন পর্যন্ত আহরণ পাঁচ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে গেছে। মিলছে বড় সাইজের সুস্বাদু ইলিশ। দামও সাধারণের নাগালে। ব্যাপক গবেষণা, সরকারের নানা উদ্যোগ এবং জেলেদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইলিশ উৎপাদনে একের পর এক রের্কড গড়ছে দেশ। করোনায় টানা লকডাউনে দূষণের মাত্রা কিছুটা হলেও কমে যায়। আর তা আশীর্বাদ হয়েছে ইলিশের প্রজননে। এ খাতে দেখা দিয়েছে অপার সম্ভাবনা।
জাতীয় মাছ ইলিশে আশার আলোও দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রজনন সময় বিবেচনায় দেশে চলছে মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিযান সফল হলে কমপক্ষে ৩৭ হাজার কোটি জাটকা উৎপাদন হবে। আর তাতে বছর শেষে ইলিশের উৎপাদন ছয় লাখ টনে উন্নীত হবে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে দেশের জেলেরা ডিমওয়ালা ইলিশ শিকার করা থেকে বিরত থাকলেও দেশের সমুদ্রসীমায় ভারত ও মিয়ানমারের জেলেদের আনাগোনা রয়েছে বলে জানান জেলেরা। জেলেদের শঙ্কা তাদের নিবৃত্ত করা না গেলে অভিযানে সুফল মিলবে না।
তবে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ ইনকিলাবকে জানিয়েছেন, বিদেশী জেলেদের মাছ শিকার বন্ধে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডকে সর্তক রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে হেলিকপ্টারে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের প্রস্তুতি রয়েছে। গত ১৪ অক্টোবর থেকে মা ইলিশ সংরক্ষণে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
মা ইলিশ রক্ষায় বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা নিয়ে আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে ভিত্তি ধরে মৎস্য সংরক্ষণ আইন সংশোধন করে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধের এ সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। বিশিষ্ট ইলিশ গবেষক ও মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আনিছুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, প্রতিটি মা ইলিশ গড়ে ১০ থেকে ১২ লাখ ডিম ছাড়ে। দেশে গড়ে ৪৯ থেকে ৫৫ শতাংশ ডিম নিষিক্ত হয়। চলমান অভিযান সফল হলে ৩৭ হাজার কোটি জাটকা উৎপাদন সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনের মধ্যে এবার একটি অমাবস্যা ও পূর্ণিমা রয়েছে। করোনায় লকডাউনের কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশেও ভারসাম্য এসেছে। এতে এবার জাটকা উৎপাদন বাড়তে পারে। তিনি বলেন, এখন মাছ ধরা বন্ধ থাকলেও নিষেধাজ্ঞার পর ব্যাপকহারে ইলিশ মাছ ধরা পড়বে। জেলেরা তখন তাদের সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ ফ্যাকাল্টির ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নুরুল আবসার খান বলেন, সরকারের নানা উদ্যোগ, ব্যাপক গবেষণা এবং কৃষকদের সচেতনতার ফলে দেশে ইলিশের উৎপাদন দ্রুত বাড়ছে। গড়ে ইলিশের ওজন ৫শ গ্রাম পর্যন্ত বেড়েছে। গত ১০ বছরে উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। সাগর, নদী সর্বত্রই বড় সাইজের ইলিশ মিলছে। এখন ইলিশের প্রজনন সীমিত পানিতে কিভাবে করানো যায় সেটি নিয়ে গবেষণার সময় এসেছে। আর তা করা গেলে এ খাতে ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, সারাদেশের মতো চট্টগ্রাম অঞ্চলেও ইলিশের উৎপাদন বাড়েছে। গত দুই মাস সাত দিনে তিন হাজার ৫শ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ করা হয়েছে। তার আগের বছরের এ সময়ে এর পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৯শ মেট্রিক টন। চট্টগ্রাম অঞ্চলে মা মাছ ধরা বন্ধ রয়েছে। তবে বিভিন্ন সময় দেখা গেছে, বরিশাল অঞ্চল থেকে কিছু জেলে এ অঞ্চলে এসে এখানকার বোট মালিকদের হয়ে মাছ ধরে। এবার এ ধরনের মাছ ধরা বন্ধ করারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ বলেন, প্রায় পাঁচ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ হয়েছে। দেশে ইলিশ উৎপাদন এবং আহরণ দ্রুত বাড়ছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে ডিমওয়ালা ইলিশ সংরক্ষণে ২২ দিনের অভিযান চলছে। তিনি বলেন, অভিযান চলাকালে অন্য দেশের জেলেরা যাতে মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ এবং র্যাবকে অভিযানে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। প্রয়োজনে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার ব্যবহার করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে।
বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের ৮৬ শতাংশের বেশি বাংলাদেশের নদ-নদী মোহনা ও সাগর থেকে আহরিত হয়। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার বড় আকারের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। ইলিশ মাছের উৎপাদন বাড়ায় দেশে দামও কমে আসছে। একসময় দুষ্প্রাপ্য হতে যাওয়া সুস্বাদু ইলিশের স্বাদ এখন কমদামেই নেয়া যাচ্ছে। ক্রমবর্ধমান ইলিশ উৎপাদনের এ প্রবৃদ্ধির কারণে ইলিশ উৎপাদন, আহরণ এবং রফতানি দ্রুত বাড়ছে। একইসঙ্গে ইলিশ উৎপাদনেও বাংলাদেশ রয়েছে প্রথম স্থানে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।