পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইতিহাসে প্রথমবারের মত একজন সেনা কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে যিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত সাত বছরের বেশি সময় ধরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে কোমায় রয়েছেন। লে. কর্নেল দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজার চাকরির মেয়াদের শেষ দিন ১২অক্টোবরে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে কর্নেল র্যাংকে উন্নীত করা হয়। তার পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে হাসপাতালের কক্ষেই সম্পন্ন হয় পদোন্নতির আনুষ্ঠানিকতা।
২০১৩ সালের মার্চ মাসে হার্ট অ্যাটাকের পর থেকেই কোমায় চলে যান তিনি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় তার অসুস্থতাকে বলা হয় হাইপোস্কিক স্কিমিক ইনজুরি টু ব্রেইন ইফেক্টস। চিকিৎসকরা বলছেন যে তার মস্তিষ্কের নিচের অংশ ভালো আছে, কিন্তু মস্তিষ্কের যে অংশ মানুষের চিন্তা-চেতনার সাথে জড়িত, ওই অংশের কোষগুলো সুস্থ হয়নি। অসুস্থ হওয়ার পর থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আছেন তিনি। এর মধ্যে এই কর্মকর্তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত তার শারীরিক অবস্থার খুব একটা উন্নতি হয়নি।
আইএসপিআরের পরিচালক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা একজন মেধাবী ও পেশাদার কর্মকর্তা। এই পদোন্নতি দেশে ও দেশের বাইরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি আরো উজ্জল করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সেনা সূত্রে জানা গেছে, প্রিয় মানুষটির চেতনা ফিরে আসার দীর্ঘ ক্লান্তিহীন অপেক্ষায় তার স্ত্রী মোসলেহা মুনিরা রাজা, ছেলেমেয়ে ও সহকর্মীরা। এর মধ্যে এমন পদোন্নতির ঘটনা সবার চোখে আনন্দের জল এনে দেয়। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থেকে চাকরিজীবনের শেষ দিনে তাছাওয়ার রাজাকে পদোন্নতি দিয়ে এক বিরল সম্মানে ভূষিত করেন সেনাবাহিনী-প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
আইএসপিআর জানায়, তাছাওয়ারের ৩১ বছর ৩ মাস চাকরিজীবনের সমাপ্তি ঘটল এই পদোন্নতির মধ্য দিয়ে। ‹কিং অব দ্য ব্যাটেল› বা সাঁজোয়া কোরের এই চৌকস কর্মকর্তার ছিল বর্ণাঢ্য কর্মজীবন। প্রশিক্ষক, অধিনায়ক হিসেবে সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তার রয়েছে গবেষক ও লেখক হিসেবে খ্যাতি। সহকর্মীদের মধ্যে ছিলেন সদালাপী, জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য কর্মকর্তা। চাকরিজীবনে দেশ-বিদেশে স্টাফ কোর্স’সহ সম্পন্ন করেছেন বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ। ১৯৮৯ সালে ২০তম লং কোর্সের সঙ্গে সাঁজোয়া কোরে কমিশন লাভ করেন দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা। তিনটি সাঁজোয়া রেজিমেন্টে বিভিন্ন পদে চাকরিসহ ঘাটাইল সেনানিবাসে একটি রেজিমেন্টের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। তার অধীন ইউনিটটি ২০০৮ সালে ডিভিশনে সেরা ইউনিট হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
তাছাওয়ার রাজার এই পদোন্নতির সিদ্ধান্ত সেনাপ্রধানের এক মহানুভবতার পরিচয় বলে মন্তব্য করে মুনিরা রাজা বলেন, এমন ঘটনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে আরও সমৃদ্ধ করল। আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি সেনাপ্রধান আমার স্বামীকে এমন সম্মান দেবেন। এ সম্মানে আমরা গর্বিত। বিদায়বেলায় প্রত্যাশার চেয়ে এটি অনেক বড় এক অর্জন।
সিএমএইচের আইসিইউ প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ মজুমদার জানান, কর্নেল দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজার অসুস্থতাকে চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় ‹হাইপোস্কিক স্মিমিক ইনজুরি টু ব্রেইন ইফেক্টস›। ওনার (দেওয়ান মোহাম্মদ তাছাওয়ার রাজা) হার্টের কার্যকারিতা ফিরে এসেছে, কিন্তু ব্রেইনের ফিরে আসেনি। পুরো প্রক্রিয়ার সময় তার ব্রেইনে সার্কুলেশন ৫ মিনিটের অতিরিক্ত ছিল, কিন্তু ১৫ মিনিটের কম ছিল। এ জন্য তার ব্রেইনের নিচের অংশ ভালো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।