Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সঠিকতা যাচাইয়ে সাত নির্দেশনা হাইকোর্টের

ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

মানুষের হয়রানি এবং ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা রোধে সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিট পিটিশনের শুনানি শেষে গতকাল বুধবার বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চ এ নির্দেশনা দেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কৃষি বিভাগের প্রোগ্রাম অফিসার মো.আওলাদ হোসেনের ভুয়া পরোয়ানা নিয়ে রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়া হয়।
নির্দেশনাগুলো হচ্ছে: (১) গ্রেফতারি পরোয়ান ইস্যুর সময় পরোয়ানা প্রস্তুকারী ব্যক্তিকে ফৌজদারী কাবিধির ধারা ৭৫ এর বিধান মতে নির্ধারিত ফরমে উল্লেখিথ চাহিদা অনুযায়ী সঠিক ও সুস্পষ্টভাবে তথ্যপূরণ করতে হবে।(১. ক) যে ব্যক্তি বা যেসব ব্যক্তি পরোয়ানা কার্যকর করবেন,তার বা তাদের নাম এবং পদবী ও ঠিকানা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। (খ) যার প্রতি পরোয়ানা ইস্যু করা হচ্ছে অর্থাৎ অভিযুক্তের নাম ও ঠিকানা এজাহার নালিশী মামলা কিংবা অভিযোগপত্রে বর্ণিত সংশ্লিষ্ট মামলার নম্বর ও ধারা এবং ক্ষেত্রমতে আদালতের মামলার নম্বর ও ধার সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। (গ) সংশ্লিষ্ট জজ (বিচারক)/ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষরের নিচে নাম ও পদবীর সিল এবং ক্ষেত্রমত দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারকের নাম ও পদবীর সিলসহ বামপাশে বর্ণিত সংশ্লিষ্ট আদালতের সুস্পষ্ট সীল ব্যবহার করতে হবে। (ঘ) গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রস্তুতকারী ব্যক্তির (অফিস স্টাফ) নাম,পদবী ও মোবাইল ফোন নম্বরসহ সিল ও তার সংক্ষিপ্ত স্বাক্ষর ব্যবহার করতে হবে,যাতে পরোয়ানা কার্যকরকারী ব্যক্তি পরোয়ানার সঠিকতা সম্পর্কে কোনো সন্দেহের উদ্বেগ হলে পরোয়ানা প্রস্তুতকারি সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে সঠিকতা নিশ্চিত হতে হবে। (২) গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রস্তুত করা হলে স্থানীয় অধিক্ষেত্র কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট পিয়ন বইতে এন্ট্রি করে বার্তা বাহকের মাধ্যমে তা পুলিশ সুপারের কার্যালয় কিংবা সংশ্লিষ্ট থানায় প্রেরণ করতে হবে। এবং পুলিশ সুপারের কার্যালযের/থানার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্তৃক উক্ত পিয়ন বইতে স্বাক্ষর করে তা বুঝে নিতে হবে। গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রেরণ ও কার্যকর করার জন্য পর্যায়ক্রমে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার কাজে লাগানো যেতে পারে। (৩) স্থানীয় অধিক্ষেত্র বাইরের জেলায গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরের ক্ষেত্রে পরোয়ানা ইস্যুকারী কর্তৃফক্ষ গ্রেফতারি পরোয়ানা সিলগালা করে এবং অফিসের সিল ছাপ দিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেরণ করবেন। (৪) সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকতা সিল মোহরকৃত খাম খুলে প্রাপ্ত গ্রেফতারি পরোয়ানা পরীক্ষা করে এর সঠিকতা নিশ্চিত পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য ব্যবস্থা নিবেন তবে কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানার ক্ষেত্রে সন্দেহের উদ্রেক হলে পরোয়ানায় উল্লেখিত পরোয়ানা প্রস্তুতকারীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে এর সঠিকতা নিশ্চিত হয়ে পরবর্তী কার্যক্রমের ব্যবস্থা নেবেন। (৫) গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরের জন্য পরোয়ানা গ্রহণকারী কর্মকর্তা গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রাপ্তি অন্তে তা কার্যকরের আগে পুনরায় পরীক্ষা করে যদি কোনো সন্দেহের উদ্রেক হয়, সেক্ষেত্রে পরোয়ানায় উল্লেখিত পরোয়ানা প্রস্তুতকারির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে সঠিকতা নিশ্চিত হয়ে পরোয়ানা কার্যকর করবে। (৬) গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুসারে আসামিকে/আসামিদের গ্রেফতারের পর সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে উক্ত ১৫ আসামি/আসামিদের আইন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিকট ম্যাজিস্ট্রেট/জজ আদালতে গ্রেফতারি পরোয়ানাসহ উপস্থাপন করতে হবে। এবং ম্যাজিস্ট্রেট/ গ্রেফতারকৃত আসামি বা আসামিদের জামিন না দিলে আদেশের কপিসহ হেফাজতি পরোয়ানা মুলে আসামি/আসামিদের জেল হাজতে প্রেরণসহ ও ক্ষেত্রমত সম্পূরক নথি তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যুকারী জজ/ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বরাবর প্রেরণ করবেন এবং (৭) সংশ্লিষ্ট জেল সুপার কিংবা অন্য কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেফাজতি পরোয়ানামুলে প্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট আসামি/আসামিদের গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যুকারী আদালতে এই মর্মে অবিলম্বে অবহিত করবেন, কোন থানার কোন মামলার সূত্রে বা কোন আদালতে কোন মামলায় বর্ণিত আসামিদের উক্ত আদালতের ইস্যুকৃত পরোয়ানামুলে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং পরে আসামিদের নতুন কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানাপ্রাপ্ত হলে জেল সুপার ঐ গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে পরোয়ানা কার্যকর করবেন।
আদেশটি বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব,সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব, আইন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, মহা-কারাপরিদর্শক ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বলা হয়েছে। আদেশের কপি প্রত্যেকে দায়রা জজ ও মেট্টোপলিটন দায়রা জজ,সব ট্রাইব্যুনাল বিশেষ জজ আদালতের বিচারক, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চীফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের অবগত করতে নির্দেশ দেন আদালত। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কৃষি বিভাগের প্রোগ্রাম অফিসার মো.আওলাদ হোসেনের ভুয়া পরোয়ানা নিয়ে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেয়া হয়। এর আগে গত বছর ১০ ডিসেম্বর ভুয়া ওয়ারেন্ট কোথায় থেকে ইস্যু হয় এবং কারা ইস্যু করে তা খুঁজে করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাইকোর্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ