পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দু’দিনের সফরে আজ ঢাকা আসছেন মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন বাইগান। বিকালে স্পেশাল ফ্লাইটে তিনি ঢাকা পৌঁছাবেন। ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে যাবেন ১৬ই অক্টোবর সকালে। সে হিসেবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় ব্যস্ত সময় কাটাবেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের আস্থাভাজন এই উপ-মন্ত্রী।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরকে সরকার হাই প্রোফাইল সফর বলেই গণ্য করছে। এজন্য এই সফরকে যথাযথ গুরুত্বে সফল করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। বাইগানের সাথে আনুষ্ঠানিক ও দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ এই অতিথির সম্মানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে একটি নৈশভোজ আয়োজনের চেষ্টা রয়েছে বাংলাদেশের। ১৪ই অক্টোবর সন্ধ্যায় ওই ভোজ-বৈঠক হতে পারে। পরদিন বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের সঙ্গে পৃথক বৈঠক ছাড়াও সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তার সৌজন্য সাক্ষাতের অ্যাপয়েন্টমেন্ট চাওয়া হয়েছে। ওই দিনে সরকার প্রধানের পূর্ব নির্ধারিত কোনো কর্মসূচি না থাকলে বাইগান দেখা পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, একাধিক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফর করলেও স্টেট ডিপার্টমেন্টের নাম্বার টু বা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদধারীর এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর। তাছাড়া ওই পদে বাইগানের মতো হাই প্রোফাইল ব্যক্তিত্ব, যিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অত্যন্ত আস্থাভাজন (উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে নেগোসিয়েশনের মূল দায়িত্ব পালনকারী) তার কাছ থেকে বাংলাদেশের অনেক কিছু আদায়ের সুযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, বাইগানের সরকারি কর্মসূচিতে প্রতিনিয়ত নতুনমাত্রা যুক্ত হচ্ছে। চূড়ান্ত মুহূর্ত পর্যন্ত তাতে সংযোজন-বিয়োজন চলবে জানিয়ে একটি সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত সূচি মতে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কস্থ জাদুঘর পরিদর্শন করতে পারেন তিনি। সরকারি কর্মসূচি ছাড়াও নাগরিক সমাজ, শ্রম খাতের প্রতিনিধি, এনজিও ব্যক্তিত্বসহ অন্যদের সঙ্গে তার পৃথক সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় হতে পারে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্রের দপ্তর গত শুক্রবার এক মিডিয়া নোটে জানিয়েছে, ঢাকা সফরকালে বাইগান বাংলাদেশের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন। মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার অংশীদারি সম্পর্কের নানা দিক ও বিভাগ নিয়ে ঢাকার বৈঠকগুলোতে আলোচনা করবেন তিনি। বাইগানের ঢাকার এনগেজমেন্টে সবার সমৃদ্ধির জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত অবাধ, মুক্ত, সমন্বিত, শান্তিপূর্ণ এবং নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিক রিজিওন প্রতিষ্ঠার যে প্রয়াস তা এগিয়ে নেয়ার বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা হবে।
করোনা পরিস্থিতিতে এই সফরে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে তা নিয়ে কথা হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের নানা দিক ও চ্যালেঞ্জ প্রশ্নে পারস্পরিক সহযোগিতা কতটা বাড়ানো যায় তা নিয়ে আলোচনা হবে।
ঢাকার কূটনৈতিক সূত্র জানায়, মার্কিন উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন বাইগানের সফরটির বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে। তার সফরে দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্বের গুরুত্বপূর্ণ অনেক ইস্যু আসবে। তবে সার্বিকভাবে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী রাশেদ চৌধুরীকে মুজিব শতবর্ষে ফেরত চায় ঢাকা। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তার দন্ড কার্যকর করা জরুরি বলে মনে করে সরকার। তাছাড়া মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ অ্যাকাউন্টে একসেস চায় বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ অন্য পণ্যের বিশেষ সুবিধাও চায় ঢাকা। অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি বাস্তবায়নে ভূ-রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের সক্রিয়তা চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে গত মাসে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ড. মার্ক টি এসপার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করে সহায়তা চান। সে সময় একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকের প্রতি যৌথ প্রতিশ্রুতি নিয়ে তারা আলোচনা করেন। বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে যুক্তরাষ্ট্রের তাগিদ রয়েছে। ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের বিশাল টিম থাকার পরও এখানে স্বতন্ত্র একটি ফরেন কমার্শিয়াল সার্ভিস অফিস খুলছে যুক্তরাষ্ট্র। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, করোনাকালে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা বাইগানের ঢাকা সফরটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।