বিএনপি নেতা সাজুর তত্ত্বাবধানে বিজয় দিবস র্যালিতে বিপুল নেতাকর্মীর অংশগ্রহন
ঢাকা-১৪ আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও দারুসসালাম থানা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তার এই বক্তব্য আইওয়াশ ছাড়া কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আইনমন্ত্রীর আইন সংশোধনের বক্তব্য চরম ধাপ্পাবাজি। দেশজুড়ে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে যে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠছে সেই আন্দোলনকে প্রশমিত করার জন্যই নতুন আইন তৈরীর উদ্যোগের কথা বলা হচ্ছে। বিদ্যমান যে যাবজ্জীবন সাজার বিধান আছে সেটি প্রয়োগ হয়নি কেন? কারন বর্তমান সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় গুম, খুন, ধর্ষণ মহামারী রুপ ধারণ করেছে।
রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
অপরাধীদের অধিকাংশই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পায় অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাদের শাস্তি দেয়া দুরের কথা, বরং প্রেসিডেন্ট ফাঁসির আসামিকে ক্ষমা করে দিয়েছে। ফলে অপরাধীরা যা খুশী তাই করার উৎসাহ পাচ্ছে। অপরাধ করে রেহাই পাওয়ার সংস্কৃতির জন্যই দেশে নারী ও শিশুর ওপর নির্যাতন ও সম্ভ্রমহানীসহ অন্যান্য সামাজিক অপরাধগুলো জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলেছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুম, খুন, ধর্ষণ ও দুর্নীতি করলে পার পাওয়া যায়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে আটক করে না-এটি যেন দেশের অলিখিত বিধান হয়ে গেছে। খুন, জখম ও নারীর শ্লীলতাহানীকে তারা নিজেদের অধিকার মনে করছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের ৭ হাজারের বেশী মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এই মামলাগুলোর মধ্যে খুন ও ধর্ষণের মামলাও ছিল। এদিকে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লা নুর বাবুকে প্রকাশ্য দিবালোকে ছাত্রলীগ-যুবলীগ হত্যার ১২ বছর পার হয়ে গেলেও এখনও আসামাীদের গ্রেফতার করা হয়নি এবং চার্জশিটও হয়নি। সুতরাং বিচারহীনতার সংস্কৃতি যেখানে সরকারের আদর্শ সেখানে আইন করে নারী সম্ভ্রমহানীর আসামীদের বিচারের বিষয়টি নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে।
নির্বাচনে সহিংসতার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, শনিবার চাঁদপুর ও জয়পুরহাটের কালাইয়ে দুটি পৌরসভা নির্বাচন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ৪৪ নং ওয়ার্ডে কমিশনার নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপি হয়েছে। শতভাগ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হলেও সেসব এলাকায় বিএনপি’র এজেন্ট ও ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে, মারধর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। জোর করে শুধুমাত্র নৌকার সমর্থকরাই ভোটকেন্দ্রে ঢুকে নৌকা প্রতীকে সিল মেরেছে। চাঁদপুরে পৌর নির্বাচনে ভোটার’রা ভোটকেন্দ্রে গেলে তাদের ওপর আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। জয়পুরহাটের কালাই পৌরসভায় এপর্যন্ত কোনদিন নৌকা বিজয় লাভ করেনি। কিন্তু সেখানে এবার জোর করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে কেন্দ্র করে দখল করে নৌকায় সিল মেরে তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কেবল একটি মাত্র ওয়ার্ডের ভোট, সেটিও তারা জোর করে কেন্দ্র দখলের মাধ্যমে ছিনিয়ে নিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায় হামলার ঘটনার পেছনে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, নারী ও শিশুর ওপর নির্যাতনের ঘটনায় সরকারের অবিমৃশ্যকারী আইনের শাসনবিরোধী ভয়ঙ্কর রুপটি ফুঠে উঠেছে। সারাদেশ নারী ও শিশুর ওপর নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। গুম, খুন, নারী ও শিশু নির্যাতনের যে মহামারী চলছে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিতেই সরকারের এজেন্টরা দলের মহাসচিবের বাসভবনে এই হামলা চালিয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এই অনাকাক্সিক্ষত সন্ত্রাসী ঘটনার তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বাক্ষর জাল করে একটি জালিয়াতচক্র চাঁদপুর জেলাধীন হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি উপজেলা ও সংযুক্ত দুইটি পৌরসভার বিএনপি’র কমিটি বাতিল করা হয়েছে বলে মিথ্যা, বানোয়াট ও সম্পূর্ণরুপে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি পত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে উক্ত কমিটিসমূহ দলের মহাসচিব কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে-এর বাইরে আর নতুন কোন সিদ্ধান্ত দেয়া হয়নি। সুতরাং আমার স্বাক্ষর জাল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে চিঠিটি প্রকাশ করেছে সেই বিষয়ে বিভ্রান্ত না হতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।