বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাজশাহী মহানগর নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আয়োজনে নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে আজ শনিবার সকালে ঘন্টাকালব্যাপি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সরকারী দলের দুর্বৃত্তদের হাতে সিলেটের এমসি কলেজ চত্বরে নববধুর সমভ্রমহানি এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধুর উপর নারকীয় বিভৎসতাসহ দেশব্যাপি অব্যাহত নারী ও শিশুর উপর ঘৃন্য সহিংতার প্রতিবাদে ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
রাজশাহী মহানগর নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আহবায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজাশাহী মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক রাসিক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসন বুলবুল। বিশেষ অতিথি ছিলেন মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিউল হক রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক সাফিকুল ইসলাম শাফিক, জিয়া পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী মহাসচিব প্রফেসর সেলিম আরিফ আই.বি.এ, রাবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষা ফোরামের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য প্রফেসর ড. মাসুদুল হাসান খান মুক্তা, রাজশাহী বারের সাধারণ সম্পাদক পারভেজ তৌফিক জাহেদী ও জাসাস রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা।
প্রধান অতিথি বুলবুল বলেন, এই সরকারের আমলে নারী শিশু নিরাপদ নয়। প্রতিদিন দেশের কোন না কোন স্থানে নারী ও শিশু ধর্ষিত হচ্ছে। আর এর সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। তিনি বলেন, দেশে ছয় মাস থেকে বৃদ্ধ নারী পর্যন্ত ধর্ষিত হচ্ছে। সরকারের দোসর ও প্রধানমন্ত্রীর সব থেকে প্রানপ্রিয় সংগঠন এবং আস্থাভাজন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ছোবল থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা কেউ। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ও দুস্কৃতিকারী নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত দেশে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম করে গেলেও প্রধানমন্ত্রী নিরব থাকেন।
এর কারন হিসেবে তিনি বলেন, বিনা ভোটের সরকারের কোন আদর্শ, নৈতিকতা ও শালিনতাবোধ থাকেনা। তারা শুধু চায় ক্ষমতায় টিকে থাকতে। ধর্ষনের প্রতিবাদে দেশব্যাপি প্রতিবাদের ঝড় বইছে। এই ঝড় থামানোর জন্য সরকার ইতোমধ্যে আইনশৃংখলা বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনে বাধা প্রদান করছে। প্রধান অতিথি আরো বলেন, মেজর সিনহা হত্যাকে আড়াল করতে তার দলের সন্ত্রাসীদের দিয়ে দেশব্যাপি ধর্ষনের রাজত্ব কায়েম করেছে।
এতে করে জনগণের চোখ যেন ঘুরে এদিকে না আসে সে চেষ্টা করছে সরকার। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। এই ধরনের নীল নকশা করে সরকার রেহাই পাবেনা বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, করোনাকালে বর্তমানে দেশের সকল প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। দেশ পূর্বের ন্যায় চলতে শুরু করলেও এইচ.এস.সি পরীক্ষা না নিয়ে অটোপাস করানো হলো। এতে করে শিক্ষাব্যবস্থাকে আরো হেয় প্রতিপন্ন করা হলো। কিন্তু এই অটোপাস দিয়ে সরকার এই আন্দোলন রুখতে পারছেনা। বিচার না হওয়ার পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরবে না তিনি বক্তব্যে উল্লেখ করেন। সেইসাথে সকল ধর্ষনের সুষ্ঠু বিচার চান, এবং ধর্ষনকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান বুলবুল।
সভাপতি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩১৩৬ জন নারী ও শিশু ধর্ষনের শিকার হয়েছে। আর ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিচার হয়েছে মাত্র ১৬৪টি। ২০১৯ সালে শিশু ধর্ষিত হয়েছে ১০০৫ জন। গড়ে প্রতিদিনি ৩জন করে শিশু ধর্ষনের শিকার হচ্ছে। এরমধ্যে ৪৭জন শিশুকে গণধর্ষনের পর হত্যা করা হয়েছিলো বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, ২০১৮ সালে শিশু ধর্ষনের ঘটনায় দেশে কমপক্ষে ৫৭১টি মামলা হয়েছে। ২০১৯ সালে মোট ১৪১৩ জন নারী ধর্ষনের শিকার হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সভাপতি বলেন, এর মধ্যে ৭৬ জন ধর্ষনের পরে হত্যা এবং ১০জন নিজেই আত্মহত্যা করে। ২০১৮ সালের থেকে ২০১৯ সালে ধর্ষনের সংখ্যা দ্বিগুন ছিলো। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির তথ্য মতে চলতি বছরের জানুয়ারী মাস থেকে আগষ্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পত্রিকার মাধ্যমে তারা এই ধর্ষন ও হত্যা নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরী করেন। সেখানে চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত ৯৮২টি ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করা হয়। এরমধ্যে ৪১ জন ধর্ষনের পর আহত হয়ে মারা যায়, আর ৯জন আত্মহত্যা করে। এই সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর শাস্তির দাবী জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।