Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ষণের বিচার ও শাস্তি বনাম অসহায় ভুক্তভোগীর করণীয়-১

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৫ এএম

ইসলামপূর্ব যুগকে বলা হয় আইয়ামে জাহিলিয়্যাত বা অন্ধকার যুগ। যে যুগে ন্যায় ও ইনসাফের কোনো বালাই ছিল না। নারীদের বাঁচার কোনো অধিকার ছিল না। মেয়ে সন্তান জন্মানো যেখানে ছিল অপরাধ। তারপরও যেই সমস্ত নারী বেঁচে যেত, তারা হতো ভোগের বস্তু। ভোগপন্য ছাড়া অন্যকোনো পরিচয় তাদের ছিল না। ব্যভিচার ও ধর্ষণ যেখানে ছিল নিত্ত নৈমিত্তিক ব্যাপার।

ইসলাম একমাত্র ধর্ম যে নারীকে পুরুষের চেয়ে বেশি মর্যাদা দিয়েছে। ব্যভিচারকে অশ্লীল ও নিকৃষ্ট কাজ ঘোষণা করেছে। নারীর সম্মান ও নিরাপত্তার জন্য পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য পর্দার বিধান দিয়েছে। শালীন ও ভদ্র পোশাক পরিধানের কথা বলেছে। নারী-পুরুষকে চক্ষু অবনত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে।

ব্যভিচার ও ধর্ষণ বন্ধে ইসলামে দুনিয়া ও আখেরাতে কঠিন শাস্তির বিধান দিয়েছে। ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণী বিবাহিত হলে পাথর মেরে মৃত্যুদÐ কার্যকর করার বিধান দিয়েছে। আর ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণী অবিবাহিত হলে ১০০ বেত্রাঘাত করার নির্দেশ দিয়েছে। এ ব্যাপারে আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী তাদের প্রত্যেককে ১০০ কশাঘাত করবে...।’ (সুরা : নূর : ২)। মনে রাখতে হবে, এ শাস্তি কার্যকর করবে রাষ্ট্রের সরকার ও প্রশাসন।

এ তো গেল ব্যভিচারের শাস্তির কথা। ব্যভিচারের চেয়েও জঘন্য ও ভয়ঙ্কর অপরাধ হচ্ছে ধর্ষণ। হত্যার পর সবচেয়ে বড় গুনাহ ধর্ষণ করা। ধর্ষণের বেলায় একপক্ষ থেকে ব্যভিচার হয়ে থাকে। অন্যপক্ষ হয়ে থাকে নির্যাতিত বা মজলুম। মনে রাখতে হবে, এ ক্ষেত্রে তার কোনো পাপ নেই। কেননা ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার ওপর বল প্রয়োগ করা হয়েছে।

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার উম্মতের ভুলবশত করা অপরাধ, ভুলে যাওয়া কাজ ও বল প্রয়োগকৃত বিষয় ক্ষমা করে দিয়েছেন।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২০৪৫)। ধর্ষণের ক্ষেত্রে তিনটি অপরাধ হয়ে থাকে। এক. সম্ভ্রম লুণ্ঠন। দুই, ব্যভিচার। তিন, বল প্রয়োগ। ব্যভিচারের জন্য কোরআনে বর্ণিত ব্যভিচারের শাস্তিই সে পাবে। ব্যভিচারী যদি বিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে মৃত্যুদÐ দিতে হবে। আর যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রকাশ্যে ১০০ বেত্রাঘাত করা হবে। এতে যদি তার মৃত্যুও হয়।

আখেরাতে ব্যভিচারের শাস্তির কথা বলতে গিয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর যারা আল্লাহতাআলার পাশাপাশি অন্য কোনো উপাস্যকে ডাকে না। আল্লাহতাআলা যাকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন যথার্থ (শরী‘আত সম্মত) কারণ ছাড়া তাকে হত্যা এবং ব্যভিচার করে না। যারা এগুলো করবে তারা অবশ্যই কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে। কিয়ামতের দিন তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে এবং তারা ওখানেই চিরস্থায়ীভাবে লাঞ্ছিতাবস্থায় থাকবে, তবে যারা তাওবা করে নেয়, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে; আল্লাহতাআলা তাদের পাপগুলো পুণ্য দিয়ে পরিবর্তন করে দিবেন। আল্লাহতাআলা অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা আল-ফুরকান : ৬৮-৭০)। আল্লাহতাআলা পবিত্র কোরআনে ব্যভিচারের কঠিন নিন্দা করেন। তিনি বলেন, তোমরা যিনা তথা ব্যভিচারের নিকটবর্তীও হয়ো না। কারণ, তা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ। (সূরা আল-ইসরা : ৩২)।



 

Show all comments
  • Jaker ali ১০ অক্টোবর, ২০২০, ১:৫৮ এএম says : 0
    সুন্দর কথা লিখেসেন
    Total Reply(1) Reply
    • ABU ABDULLAH ১০ অক্টোবর, ২০২০, ১০:৫৬ এএম says : 0
      যেদিন মেয়েরা উত্তেজক ও সেক্সচুয়াল ড্রেস পরা বন্ধ করবে ধর্ষণ মর্শন সব বন্ধ হয়ে যাবে
  • হাবিব ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৪৭ এএম says : 0
    কোন রাজনৈতিক দল কোনদিনই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেনি কারন তারা সব সময় নিজের সার্থের কথা বিবেচনা করেছে..যেদিন তারা মানুষের কথা বিবেচনা করবে,আপসহীন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন সেদিনই অপরাধ কমবে বলে মনে করি
    Total Reply(0) Reply
  • কাদের শেখ ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৪৯ এএম says : 0
    এমন একটি পর্যায়ে দেশ আসতো না যদি বিশ বছর আগে আইনের শাসন কঠোর হতো
    Total Reply(0) Reply
  • কাদের শেখ ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫২ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ, ইসলামে নারী নির্যাতন অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং এর প্রতিকারের উপযুক্ত বিধান রয়েছে
    Total Reply(0) Reply
  • মেহেদি ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৪ এএম says : 0
    ইসলামে নারী নির্যাতনের স্থান নেই। নারীদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের প্রিয়া নবী (সা) সর্বদা চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Unit chief ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৫ এএম says : 0
    বিদায় হজের ভাষণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘হে মানুষ! নারীদের সম্পর্কে আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। তাদের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করো না। তাদের ওপর যেমন তোমাদের অধিকার রয়েছে, তেমনি তোমাদের ওপর তাদেরও অধিকার রয়েছে। সুতরাং তাদের কল্যাণের দিকে সবসময় খেয়াল রেখো।’
    Total Reply(0) Reply
  • Unit chief ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৫ এএম says : 0
    বিদায় হজের ভাষণে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘হে মানুষ! নারীদের সম্পর্কে আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। তাদের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করো না। তাদের ওপর যেমন তোমাদের অধিকার রয়েছে, তেমনি তোমাদের ওপর তাদেরও অধিকার রয়েছে। সুতরাং তাদের কল্যাণের দিকে সবসময় খেয়াল রেখো।’
    Total Reply(0) Reply
  • Neamat Ullah ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৬ এএম says : 0
    রাস্তায়, কর্মস্থলে ও যত্রতত্র নারীদেরকে হয়রানি করা তো দূরের কথা বরং ইসলাম নারীদের সৌন্দর্যের প্রতি দৃষ্টি না দিয়ে অবনত রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Jaker ali ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৭ এএম says : 0
    ইসলাম ব্যভিচার, দেহব্যবসা, নগ্নতা, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা ও দেহপ্রদর্শনীকে নিষিদ্ধ করেছে। আল্লাহ বলেন, ‘ আর তোমরা ব্যভিচারের নিকটবর্তী হয়ো না। নিশ্চয় তা অশ্লীলতা ও খারাপ পথ [সূরা আল-ইসরা: ৩২]’।
    Total Reply(0) Reply
  • রিমা ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৮ এএম says : 0
    নারীকে যে কোন অযুহাত তোলে দৈহিকভাবে কিংবা মানসিকভাবে নির্যাতন করা শরীয়তে বৈধ নয়। স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের জীবনে তার কোনো স্ত্রী কিংবা কন্যার গায়ে হাত তোলেননি। নারীকে অপবাদ দিয়ে মানসিক নির্যাতন করা ইসলামে নিষিদ্ধ।
    Total Reply(0) Reply
  • আব্দুল্লাহ ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৬:৫৯ এএম says : 0
    এই পৃথিবীতে নারী ও পুরুষ অখণ্ড মানব সমাজের দু’টি অপরিহার্য অঙ্গ। পুরুষ মানব সমাজের একটি অংশের প্রতিনিধিত্ব করলে আরেকটি অংশের প্রতিনিধিত্ব করে নারী।
    Total Reply(0) Reply
  • জয়নাল আবেদিন ১০ অক্টোবর, ২০২০, ৭:০৪ এএম says : 0
    ইসলামের দৃষ্টিতে নারী সমাজে নারীর অবস্থান যখন ছিল অমানবিক এবং অতি করুণ তখন থেকেই ইসলাম নারীর অধিকার ও মর্যাদা উন্নয়নের জন্য নজীরবিহীন পদক্ষেপ নিয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Jack Ali ১০ অক্টোবর, ২০২০, ১১:২৪ এএম says : 0
    We don't address the root cause of these heinous crime like rape/adultery/fornication/Bribery/Extortion money... Our country is ruled by man made law. Human being cannot legislate his own law. Only Allah have the sole right to legislate the Law . Our Country is ruled by the Man made law. Man made law is kufri, those who legislate the Law they just come out the fold of Islam. Allah created us and He knows what is best for us. Until and Unless we rule our beloved country by the Law of Allah, we will suffer more and more by the government and their supporter.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিচার


আরও
আরও পড়ুন