Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নোয়াখালীতে ২০ বছর পর মায়ের বুকে ফিরে গেল আসমা

নোয়াখালী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০২০, ৬:২০ পিএম

২০বছর আগে পরিবারের সাথে চট্টগ্রামে গিয়ে হারিয়ে যায় আসমা নামের একটি শিশু। রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে বাসায় কাজ করার জন্য জনৈক ব্যক্তি। একদিন মারধর করলে সে পুনঃরায় রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। দীর্ঘ বিশ বছর পর নিজের বাড়ী ব্রাক্ষনবাড়িয়া জেলার নড়াই গ্রামে মা, ভাই ও আতœীয়স্বজদের ফিরে পেল আসমা।

রবিবার দুপুরে নোয়াখালী পৌরসভার কনভেনশন হলে পুনএকত্রীকরণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জোহরা খাতুন আসমাকে তার মা, ভাই ও বোনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহিদ উল্যাহ খান সোহেল, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, আসমার আশ্রয়দাতা লালন-পালনকারী ফাতেমাতু জোহরা সীমা, মনোয়ারা বেগমসহ উপস্থিত অতিথিবৃন্দ আসমাকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেন।

বাংলা সিনেমার গল্পকেও হার মানিয়েছে আসমার এই গল্প। ২০বছর আগে ২০০১ সালে চট্টগ্রামে হারিয়ে যায় শিশু আসমা। এক পরিবার তাকে বাসায় কাজ করাতে নিয়ে যায়। একদিন মারধর করলে সে আবার রাস্তা বেরিয়ে পড়ে। পরে নোয়াখালীর জনৈাক ফেরদৌসী কান্নারত আসমাকে কয়েকদিন নিজের হেফাজতে রাখেন। কিন্তু কোন আত্মীয় স্বজনের খোঁজ না পেয়ে নিজের এলাকা নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুরে নিয়ে আসেন।

তারপর থেকে আসমা পাঁচ বছর ছিলো নোয়াখালীর টেলিফোন বিভাগের কর্মচারী ফরহাদ কিসলুর বাসায়। এরপর আরো দুই বাসায় আরো ছয় বছর থেকে পুনরায় ফরহাদ কিসলুর বাসায় ফিরে যায়। ফরহাদ কিসলুর সহধর্মিণী ফাতেমা জোহরা সীমা আসমাকে তার বাবার বাড়ি একলাশপুরে পাঠিয়ে দেন। তখন ফাতেমা জোহরা সীমার বাবার বাড়িতে গৃহ নির্মাণের কাজ চলছিলো। ওইসময় আসমার সাথে এক নির্মাণ শ্রমিকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে তারা পালিয়ে চট্টগ্রাম চলে যায়। সেখানে বিয়ে করে তিন বছরের দাম্পত্য জীবনে একটা কন্যা সন্তানের মা হয় আসমা। সুখে দুঃখে কাটে তার সংসার। হঠাৎ তার স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ায় আবার নোয়াখালীতে ফিরে আসে আসমা। আশ্রয় নেয় ফরহাদ কিসলুর বাসায়।

সেখান থেকে নিজের জীবনের শেকড়ের খোঁজ পাওয়ার জন্য ফরহাদ কিসলু'র সহধর্মিণী সীমা স্থানীয় সাংবাদিক মেজবাহ উল হক মিঠুর সহযোগিতা চান। কিন্তু নিজের বাড়ী ব্রাক্ষনবাড়ীয়ার নড়াই গ্রামে একটুকু জানে আসমা। এর সূত্র ধরে সাংবাদিক মিঠু ব্রাক্ষনবাড়িয়া নবীনগরের বিটিভি ও ইত্তেফাক প্রতিনিধির মাধ্যমে তৃতীয়বারের প্রচেষ্টায় খুঁজে পান আসমার পরিবারকে। পরে চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ইমুতে ভিডিও কলে কথা হয় আসমার মা ও ভাইয়ের সাথে। সে এক আবেগপূর্ণ দৃশ্য, আসমাকে দেখে তার মা, বোন ও ভাই আবেগ সংবরণ করতে পারেননি। এদিকে আসমারও যেনো মুখে কথা ফুটেনা। আসমার পরিবার ফিরে পাওয়ার নেপথ্য কারিগর ফাতেমাতু জোহরা সীমা ও সাংবাদিক মেজবাহ উল হক মিঠু দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন।



 

Show all comments
  • Emdad ৫ অক্টোবর, ২০২০, ৮:১৯ এএম says : 0
    Jara take sohojugita korce tader ke Onek donnobad
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ