Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঝিনাইদহে নিখোঁজ জামায়াত নেতার লাশ সড়কে, "বন্দুকযুদ্ধে" নিহত ডাকাত

প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : ঝিনাইদহের শৈলকূপা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ মাদ্রাসা শিক্ষক ইদ্রিস আলী পান্নার (৫০) লাশ মিলেছে জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার জোড়াপুকুরিয়া গ্রামে। রঘুনাথপুর গ্রামের গোলাম কওছার আলী মণ্ডলের ছেলে পান্না হরিণাকুন্ডুর উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি ছিলেন। এদিকে একই দিন হরিণাকুন্ডুর ফলসি গ্রামে শহিদুল ইসলাম পচা (৪৫) নামে এক চরমপন্থি র‌্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। নিহত শহিদুল হরিণাকুন্ডু উপজেলার পারদখলপুর গ্রামের মৃত তোরাপ আলীর ছেলে। শুক্রবার ভোরে এ দুই জনের লাশ উদ্ধার করে হরিণাকুন্ডু থানায় আনা হয়। হরিণাকুন্ডু থানার ওসি মাহাতাব উদ্দীন জানান, শুক্রবার ভোরে হরিনাকুন্ডু পৌরসভা এলাকার জোড়া পুকুরিয়া মাঠে জামায়াত নেতা ইদ্রিস আলীর লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। নিহত ইদ্রিস আলী পান্নার বিরুদ্ধে নাশকতাসহ ৮/৯টি মামলা রয়েছে। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি মুসলীম বিবাহ ও তালাক রেজিস্টার ছিলেন। এছাড়া শৈলকূপা উপজেলার মহিষাগাড়ি জামে মসজিদের ঈমামতিও করতেন তিনি। গত ৪ আগস্ট থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। ওসির দাবী পান্না হুজুর সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এদিকে নিখোঁজ হওয়ার পর গত ৯ আগস্ট ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন তার স্ত্রী মোছা বেগম ইদ্রিস। তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে তার স্বামীকে পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকের লোকজন তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান। সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়েছিলো, গত ৪ আগস্ট রাত ৮টার দিকে শৈলকূপার রামচন্দ্রপুর বাজার থেকে কাপড় স্ত্রী করে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলেন। ইদ্রিস আলী রামচন্দ্রপুর পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পৌঁছালে ৩/৪ জনের সাদা পোশাকের পিস্তল ও ওয়ারলেসধারী লোক তাকে তুলে নিয়ে যায়। স্বামীকে ক্রসফায়ারে হত্যার আশংকা করেন স্ত্রী। শুক্রবার লাশ উদ্ধারের পর ঝিনাইদহ হাসপাতাল মর্গে পান্নার ছেলে ফরহাদ, ভাই আব্দুল মান্নান, ভগ্নীপতি মহিউদ্দীনসহ তার স্বজনরা অভিযোগ করেন, পুলিশ বিশেষ কায়দায় হত্যা করে এখন সড়ক দুর্ঘটনার নাটক সাজাচ্ছে। তাদের প্রশ্ন সাদা পোশাকের লোকজন তুলে নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ একজন মানুষ কি ভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ? ইদ্রিস আলীর মৃত দেহের পাশে পড়ে ছিল তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও স্ত্রী করা কাপড়ের ব্যাগ। এদিকে র‌্যাবের ঝিনাইদহ কোম্পানি কমান্ডার মেজর মনির আহমেদ জানান, শুক্রবার ভোরে দিকে হরিণাকুন্ডু উপজেলার ফলসি এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন একদল ডাকাত। এ সময় র‌্যাবের টহল গাড়ি সেখানে পৌঁছালে ডাকাতরা গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে র‌্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। পাল্টাপাল্টি গুলিতে শহিদুল ইসলাম পচা নিহত হন। অন্য ডাকাতেরা পালিয়ে যান। শহিদুল ইসলাম পচার নামে হরিণাকুন্ড ও ঝিনাইদহ থানায় হত্যা, অপহরণ, বোমাবাজি ও চাঁদাবাজির কয়েকটি মামলা রয়েছে বলেও তিনি জানান। এ সময় র‌্যাবের দুই সদস্য এএসআই খায়রুল হোসেন ও এপিসি মিজানুর রহমান আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে র‌্যাব অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে। রাতেই তার লাশ থেকে উদ্ধার করে হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। এদিকে পরিবারের ভাষ্য শহিদুল দীর্ঘ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ