বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নদনদীর পানি কমে কুড়িগ্রামে ৫ম দফা বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে।তবে এখনও দুর্ভোগ রয়েছে বন্যায় কবলিত নি¤œাঞ্চল ও চরের মানুষজনের। শুক্রবার স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়,ব্রহ্মপুত্র নদ চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ অন্যান্য নদনদী বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানির কমার সাথে সাথে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। ভাঙনে গত এক সপ্তাহে কুড়িগ্রাম সদরের ভোগডাঙা, যাত্রাপুর ও মোগলবাসায় ৩৪৩টি বসতভিটা ধরলা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। অতিবৃষ্টি ও বন্যায় জেলার ৪৩১টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। বন্যায় জেলার ১৮ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। কর্মহীন লোকের সংখ্যা বেড়ে গেছে তাদের ঘরে চলছে চরম খাদ্যসংকট।নদী ভাঙনে গৃহহীন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা খাদ্য সহায়তার আশায় ভির করছে জনপ্রতিনিধিদের বাড়ীতে বাড়ীতে।তাদেরকে নিয়ে জনপ্রতিনিধিরাও ভীষণ চিন্তিত।
পঞ্চম দফা বন্যায় জেলায় ৬০হাজার মানুষ পানির সাথে যুদ্ধকরে বেঁচে আছে।নি¤œাঞ্চলের ডুবে থাকা বাড়িঘর থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় চর ও দ্বীপচরের বানভাসি মানুষগুলোর এখনও দুর্ভোগ রয়েছে।
কুড়িগ্রাম সদরের ভোগডাঙা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: সাইদুর রহমান জানান, গত এক সপ্তাহে তার ইউনিয়নের ধরলা নদীর করাল গ্রাসে জগমহনের চর এলাকার ১০৫টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে।সেই সাথে ইউনিয়নের নন্দদুলালের ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী গর্ভে বিলিন হয়। বন্যায় দুই হাজার পরিবারের ১০ হাজার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।জেলা ত্রান ও দুর্যোগ দপ্তর থেকে এক মেট্রিকটন চাল পেয়েছেন তা প্রয়োজনের তূলনায় অপ্রতূল বলে তিনি জানান। নদী ভাঙনে গৃহহীন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা সহায়তা পাবার আশায় তার বাড়ীতে ভির করছে। তাদেরকে নিয়ে তিনি ভীষণ চিন্তিত।
কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আইয়ুব আলী জানান, গত এক সপ্তাহে তার ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদেরর করাল গ্রাসে পোরারচর,ভগবতীপুর,শিবেরপাচি,খাসেরচর,বলদিপাড়া, পার্বতীপুর এলাকার ৯০টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে।গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে একটি চাহিদাপত্র দিয়েছেন। তবে বরাদ্দ পাওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
কুড়িগ্রাম সদরের মোগলবাসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: নুরজামাল বাবলু জানান, গত এক সপ্তাহে তার ইউনিয়নের ধরলার করাল গ্রাসে মালভাঙা,পল্লীগ্রাম, চরকৃষ্ণপুর এলাকার ১৪৪টি বসতভিটা নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে।গৃহহীন পরিবারগুলোকে কোথায় আশ্রয় দিবেন এ নিয়ে তিনি ভীষণ চিন্তিত।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, এবারে বন্যায় জেলায় ৪৩১টি পুকুরের প্রায় ১০০দশমিক ২৯ মেট্রিক টন মাছ বের হয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৯০ লাখ ২১ হাজার টাকা।অবকাঠামো ক্ষতির পরিমাণ ৪ লাখ টাকা।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফুল ইসলাম জানান, নদীর পানি কমা-বাড়া করলেও বড় ধরনের বন্যার কোন আশংকা নেই।নদী ভাঙন রোধে কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, এবারে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৮৫ মে.টন চাল, ২হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, নগদ ২লাখ ৫০হাজার টাকা, গোখাদ্য বাবদ ৪ লাখটাকা ও শিশু খাদ্য বাবদ ১লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।