Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বাড়ছে ট্রান্সফ্যাটজনিত হৃদরোগের ঝুঁকি

বিশ্ব হার্ট দিবস আজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ বা হৃদরোগ পৃথিবীব্যাপী মৃত্যুর একক কারণ হিসেবে শীর্ষে। যেসব কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাাড়ে ট্রান্সফ্যাট তারমধ্যে অন্যতম। আশঙ্কার কথা হলো ট্রান্সফ্যাটজনিত হৃদরোগে মৃত্যুর সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশে প্রতিবছর ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় হৃদরোগে। যার মধ্যে ৪ দশমিক ৪১ শতাংশের জন্য দায়ী ট্রান্সফ্যাট। বিশ্বে ট্রান্সফ্যাটের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষের। কিন্তু ট্রান্সফাট নিয়ন্ত্রনে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় এ সংক্রান্ত মৃত্যু নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

আজ মঙ্গলবার বিশ্ব হার্ট দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘হৃদয় দিয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধ’। এ উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ট্রান্সফ্যাটের প্রধান উৎস পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড অয়েল বা পিএইচও। যা বাংলাদেশে ডালডা বা বনস্পতি ঘি নামে পরিচিত। ভেজিটেবল অয়েল বা উদ্ভিজ্জ তেল (পাম, সয়াবিন ইত্যাদি) যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পারশিয়ালি হাইড্রোজেনেশন করা হলে তেল তরল অবস্থা থেকে কঠিন আকার ধারণ করে। এই প্রক্রিয়ায় ট্রান্সফ্যাটও উৎপন্ন হয়। এছাড়া ভাজা পোড়া খাদ্যে একই ভোজ্য তেল উচ্চ তাপমাত্রায় বারবার ব্যবহারের কারণেও খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট সৃষ্টি হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির দৈনিক ট্রান্সফ্যাট গ্রহণের পরিমাণ হওয়া উচিত মোট খাদ্যশক্তির ১ শতাংশের কম। অর্থাৎ দৈনিক ২০০০ ক্যালোরির ডায়েটে ট্রান্সফ্যাট হতে হবে ২ দশমিক ২ গ্রামের কম।

সম্প্রতি ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট এর গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকার পিএইচও নমুনার ৯২ শতাংশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুপারিশকৃত ২ শতাংশ মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্সফ্যাট রয়েছে। এই গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ১০০ গ্রাম পিএইচও নমুনায় সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ৯ গ্রাম পর্যন্ত ট্রান্সফ্যাটের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। যা ডব্লিউএইচও’র সুপারিশকৃত মাত্রার তুলনায় ১০ গুণেরও বেশি। উচ্চমাত্রায় ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ হার্ট অ্যাটাকসহ হৃদরোগজনিত মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়।

জানা গেছে, ট্রান্সফ্যাটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাংলাদেশে এখনও কোনো আইন বা নীতিমালা হয়নি। তবে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করেছে। কমিটির আওতায় ইতোমধ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে একটি ধারণা পত্র তৈরি করা হয়েছে।

এদিকে বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষ্যে এক প্রতিক্রিয়ায় গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণে সারাবিশ্ব একত্রিত হচ্ছে। খাদ্যে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ এমন এক সাশ্রয়ী পদক্ষেপ যা হৃদরোগজনিত অসুস্থতা ও মৃত্যুঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখবে। পাশপাশি অসংক্রামক রোগ সংক্রান্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ৩ দশমিক ৪ অর্জনে সহায়তা করবে।

উল্লেখ্য, হার্ট অ্যাটাককে চিকিৎসকেরা মূলত মেডিকোসিস মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বলেন। হার্টে দুটো রক্তনালি থাকে। একটি হলো রাইট (ডান) করোনারি আর্টারি, আরেকটি হলো লেফট (বাম) করোনারি আর্টারি। এই রক্তনালিতে যদি কোনো কারণে চর্বি জমে থাকে, একে প্ল্যাক বা ব্লক বলা হয়। সেই ব্লকের ওপর যদি রক্ত জমাট বাঁধে, তখন এটি পুরোপুরি ব্লক হয়ে যায়। ১০০ ভাগ ব্লক হলেই যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, অর্থাৎ বুকে ব্যথা বা হঠাৎ করে মৃত্যু হওয়া, এ ধরনের যে পরিস্থিতি হয়, তাকে হার্ট অ্যাটাক বলা হয়।

যারা ধূমপান করেন বা উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস রয়েছে বা শরীরে কোলস্টোরেলের পরিমাণ বেশি বা পরিবারে যাদের হার্টের সমস্যা থাকে, তাদের ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেশি। এ ছাড়া স্থূলতা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এগুলোর কারণেও দেখা যায় রক্তনালি ব্লকজনিত হার্টের সমস্যা বেশি হয়।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্ব হার্ট দিবস আজ

২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ