পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা সংক্রামণের মতোই দেশে ‘দুর্নীতি-নারী নির্যাতনে’রও মহামারী চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন শুধু কোভিড মহামারী না, দুর্নীতির মহামারী, নারী নির্যাতনের মহামারী চলছে। এই মহামারী থেকে আমাদেরকে রক্ষা পেতে হবে, জনগণকে রক্ষা করতে হবে। গতকাল সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, পেঁয়াজের দাম ‘শ খানেক টাকার কাছাকাছি। যে কোনো শাক-সবজী ৮০/৯০/১০০ টাকার নিচে পাওয়া যায় না। সাধারণ গরীব মানুষ খাবে কী? এমনকি যারা চাকরি-বাকরি করেন, হালাল উপার্জন দিয়ে তারা চলবেন কি করে, ছেলে-মেয়েদের মুখে খাবার দেবেন কি করে, তাদের লেখা-পড়ার খরচ চালাবেন কি দিয়ে, তাদের চিকিৎসা করাবেন কি দিয়ে- ভাবুন একবার।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপাত্ত তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, পারিবারিক পর্যায়ের ব্যক্তির আয় যেটা ২০১০ সালে ছিলো যা তার চেয়ে প্রায় শতকরা ৭ ভাগ কমে গেছে। অনানুষ্ঠানিক খাতে যারা কাজ করেন তাদের আয় ২০১০ সালের তুলনায় কমেছে শতকরা ১২ ভাগেরও বেশি। এক হাজার টাকা যে বেতন পেতো তার ১২০ টাকা কমে গেছে। যখন উপার্জন কমে যাচ্ছে তখন যদি জিনিসের দাম বাড়ে তখন তো কষ্ট তো বেশি হয়। এই সাধারণ সোজা কথাটা সরকারকে বুঝতে হবে।
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সবচেয়ে ধনী ৫ ভাগ মানুষ তাদের আয় বেড়েছে শতকরা ৫৭ ভাগ। ২০১০ সালে আমাদের দেশের সবচেয়ে গরীব যারা তাদের আয় ছিলো ১৭‘শ ৯১ টাকা এখন তাদের আয় হলো ৭৩৩ টাকা।
সিলেটে এমসি কলেজে নববধু ধর্ষিত হওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, এমসি কলেজের প্রিন্সিপাল সাহেব সাংবাদিকদের কাছে বলেছেন, আমি অসহায়। আপনি অসহায় হতে পারেন কিন্তু যাদের সামর্থ আছে, সাহস আছে তারা তো নামতে পারে ময়দানে। আর যদি তারাও না নামে। তাহলে সবসময়, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের সময় যারা মাঠে নামেছে, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা মাঠে নেমেছে, ৯০এর গণঅভ্যুত্থানের সময়ে যারা মাঠে নেমেছে, জনগণ মাঠে নামবে, নামবেই। এটাই বাস্তবতা, এটাই বার বার প্রমাণিত।
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীনদের সেঞ্চুরির শেষ নেই। শুধু দ্রব্যমূল্যে সেঞ্চুরি নয়, নারীর সম্ভ্রমহানির সেঞ্চুরিতে ঐতিহ্য রয়েছে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের। আর্ত চিৎকার করছে এমসি কলেজের সেই দম্পত্তি, তার স্বামীর কাছে যখন ফিরে এসছে তার নির্যাতনের মাধ্যমে, বর্বর বলতকারের মাধ্যমে তখন তার স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে তার আর্তনাদ, কান্না। আর এদিকে গণভবনের চলছে প্রধানমন্ত্রী জন্মদিনের উৎসব। সংবাদপত্রের প্রথম পাতায় শুধু আপনার জন্মদিনের খবর। বাকশাল একদলীয় শাসন থাকলে কারো কোনো খবর নেই।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রীর একটা ফ্যাক্টরি আছে। সেই ফ্যাক্টরি হচ্ছে গুজবের ফ্যাক্টরি, মিথ্যা কথা রচনার ফ্যাক্টরি। তিনি প্রতিদিন বিএনপির বিরুদ্ধে, জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। আমি বলব, নিজেরা নিজের আয়নার দিকে তাঁকান। আপনারা যে শিক্ষা দিয়েছেন, সেই শিক্ষায় দীক্ষিত হয়ে ছাত্রলীগের নেতারা নতুন দম্পত্তির নববুধকে হোস্টেলের রুমে নিয়ে নির্যাতন করলো। আজকে মানুষ কাঁদছে, বিশ্ব বিবেক কাঁনছে। এতো পাপ, এতো অন্যায় জনগণ সহ্য করবে না।
কথিত ‘ইনডেমনিটি’ নামক নাটক তৈরি করে ক্ষমতাসীনরা জিয়াউর রহমানের ভাবমূর্তি বিনষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, যারা জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাটক লিখছেন। আজকে তো টাকা পাচ্ছেন, পয়সা পাচ্ছেন। জানি যে আপনাদের কিছু হবে না। আমি বলে দিয়ে রাখি, এটা প্রত্যাহার করুন। না হলে যে টেলিভিশনে এগুলো প্রচার হবে, যে জায়গায় এসব প্রচার হবে, জাতীয়তাবাদী শক্তির জনগণ তাদের ঘেরাও করবে।
সংগঠনের সদস্য আজিজুল বারী হেলালের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এই মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা অংশ নেন। দ্রব্য মূলে বৃদ্ধির প্রতিবাদের বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড বহন করে নেতা-কর্মীরা। মানববন্ধন শেষে ‘ইনডেমনিটি’র নির্মাতা পরিচালকের কুশপুত্তলিকা দাহ করে একদল কর্মী।
এদিকে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাফরুল হাসানের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় নয়াপল্টন কার্যালয়ের নিচ তলায়। এতে নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মীর সরফত আলী সপু, আনোয়ার হোসেইনসহ শ্রমিক দলের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।