Inqilab Logo

রোববার ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১, ৩০ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

সচিবালয়েই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর সচিবালয়ের চার নম্বর ভবনে প্রবেশমুখে একটি গেইটের সামনে বেসিন বসিয়ে হ্যান্ডওয়াশ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু এখন সেখানে হ্যান্ডওয়াশ বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার নেই। কেউ আর এই বেসিনটি ব্যবহারই করেন না। বেশ কিছু কর্মকর্তা তাদের কক্ষে প্রবেশের সময় মাস্ক পরার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে দরজার নোটিস ঝুলিয়েছেন।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নান ইনকিলাবকে বলেন, এগুলো নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের দেখার দায়িত্ব। আমরা সারাদেশে যে ব্যবস্থা নিয়েছে তা সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে সকলকে। জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন ইনকিলাবকে বলেন, সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন কি না, সেটি তারা নজর রাখা হচ্ছে। এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর গত এপ্রিল মাসে কোনো কোনো মন্ত্রণালয় নিজ উদ্যোগে হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ মুখে জীবাণুনাশক টালেন বসালেও সেগুলোর বেশিরভাগই এখন আর কাজ করছে না। আবার অনেক মন্ত্রণালয়ে জীবাণুনাশক টালেন গুলো নষ্ট। অনেক মন্ত্রণালয়ের মতো স্থানীয় সরকার বিভাগের এই জীবাণুনাশক টানেলটি আর সচল নেই। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের একটি জীবাণুনাশক টানেলে বিদ্যুৎ সংযোগই লাগানো নেই। নৌ মন্ত্রণালয়ের জীবাণুনাশক টানেলগুলো কাজ না করলেও কোভিড-১৯ নিয়ে সতর্কবার্তা ফটকে ঝুলছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ না কমলেও প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানায় অনেকটা ঢিলেমি ভাব দেখা যাচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব বলেন, সকল মন্ত্রণালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি মনে করিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কি কারণে স্বাস্থ্যবিধি না। তা চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হবে।

সচিবালয়ে ঢোকার সময় কারও শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে না। সচিবালয়ের বিভিন্ন ভবনগুলোতে ঢোকার মুখেও হাত ধোয়া এবং শরীর জীবাণুমুক্ত করার কোনো ব্যবস্থা নেই। করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর গত এপ্রিল মাসে কোনো কোনো মন্ত্রণালয় নিজ উদ্যোগে হাজার হাজার টাকা ব্যয় করে মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ মুখে জীবাণুনাশক টালেন বসালেও সেগুলোর বেশিরভাগই এখন আর কাজ করছে না। গায়ে গা না লাগিয়ে লিফট ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়ে নোটিস টাঙানো থাকলেও সকালে অফিস শুরুর সময় সেই নির্দেশনা না মেনে গাদাগাদি করেই লিফটে উঠতে দেখা যায়। বেশ কিছু কর্মকর্তা তাদের কক্ষে প্রবেশের সময় মাস্ক পরার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে দরজার নোটিস ঝুলিয়েছেন। যেসব মন্ত্রণালয়ের প্রবেশমুখে জীবাণুনাশক টানেল গুলো সচল রয়েছে, বেশিরভাগ মানুষই সেসবের ভিতর দিয়ে যাচ্ছেন না। মাস্ক ছাড়া সচিবালয়ের ভিতরে ঘোরাফেরাও চলছে অবাধে।

জানা গেছে, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকলে গত ২৬ মার্চ থেকে ছুটি ঘোষণা করে সরকার। টানা ৬৬ দিনের ছুটি শেষে গত ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে অফিস খুলে দেওয়া হয়েছ। এখন পুরোদমে অফিস চলছে সারাদেশে।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জীবাণুনাশক টানেল সচল থাকলেও সেসবের ভিতর দিয়ে কাউকে পার হতে দেখা যায়নি। টানেলের পাশ দিয়েই বেশিরভাগ মানুষ যাতায়াত করছেন।

সচিবালয়ের ২১তলা বিশিষ্ট ছয় নম্বর ভবনের ছয়টি লিফটের মধ্যে পাঁচটি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওঠানামায় ব্যবহৃত হয়। সকালে অফিস শুরুর সময় এবং দিনের অন্য সময় যখন ভিড় থাকে তখন এই লিফটগুলোতে গাদাগাদি করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উঠতে দেখা যায়। লিফটের লেখা আছে ৬ জনের বেশি উঠবে না। তার পরও ৯-১০ জন করে ওঠানামা করছেন।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে একজন লিফটম্যান বলেন, সকালে যখন লাইন পড়ে যায়, তখন আমরা বিপদে পড়ে যাই, কেউ কথা শুনতে চান না। লিফটে ভিড় হলে তো আমাদেরও ঝামেলা।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর চার নম্বর ভবনে প্রবেশের মাঝের গেইটে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন বসিয়ে সেখানে সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হয়েছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ