বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ছাত্রলীগের কতিপয় ধর্ষকের কারনে গোটা সিলেট এখন উত্তাল। প্রতিবাদমুখর পরিবেশ সর্বত্র। গৃহবধূ ধর্ষনের এ ঘটনায় উঠছে ছি: ছি: সুর। ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল রাজনীতির অধ্যায়কে কলংকিতকারী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে খোদ ছাত্রলীগ সহ অঙ্গ ্ও সহযোগী সংগঠনগুলোও। চলছে গত দুই দিন থেকে বিক্ষোভ, মিছিল, মানববন্ধন আর প্রতিবাদ সভায় নগরী সরব। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো একটি মাত্র ইস্যুতে সিলেট এখন এক কাতারে। দল-মত নির্বিশেষ সবাই বিচারের কাঠগড়ায় দেখতে চান ধর্ষকদের, চান সর্বোচ্চ এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। গত শুক্রবার বিকেলে স্বামীর সঙ্গে দৃষ্টিনন্দন এমসি কলেজ ক্যাম্পাস ও আশপাশ এলাকায় ঘুরতে গিয়েছিলেন এক গৃহবধূ। সন্ধ্যায় তাদের কলেজের পেছনের গেট থেকে ছাত্রাবাসে ধরে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের ৬ নেতাকর্মী। এরপর দুইজনকে মারধর করা হয় এবং স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীলা। খবর পেয়ে রাত ১০টার ছাত্রাবাস থেকে ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে পুলিশ। দেশের আধ্যাত্মিক রাজধানী খ্যাত সিলেটভূমিতে ন্যাক্কারজনক এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই রাস্তায় নামেন প্রতিবাদিরা। উত্তাল হয়ে উঠে নগরীসহ পুরো সিলেট। ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আন্দোলনকারীরা পালন করেন নানা কর্মসূচি। শনি ও রোববার (২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর) এই দুইদিন নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও স্থানে মিছিল, বিক্ষোভ প্রদর্শন, মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভা এবং মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার সংগঠন। এসব কর্মসূচি পালনকালে বক্তরা বলেন, সিলেট একটি শান্তির জনপদ। দেশের আধ্যাত্মিক রাজধানী খ্যাত এ শহরে কোনো ধর্ষক-অপরাধীর ঠাই নেই। সিলেটের মানুষ দল-মত নির্বিশেষে সবাই ধর্ষকদের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তাদের কঠিন থেকে কঠিনতর শাস্তি প্রদান করা হোক। বিক্ষোভকারীরা আরো বলেন- সিলেট এমসি কলেজ শুধু এ অঞ্চলেরই নয়, সারা দেশের জন্য গর্ব ও ঐতিহ্যের একটি বিদ্যাপীঠ। কিন্তু বার বার ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ছাত্ররূপী কুলাঙ্গাররা কলুষিত করে। সর্বশেষ গত শুক্রবার স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রীকে কেড়ে নিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের ধর্ষণের বর্বর ঘটনা সিলেটের সুমহান মর্যাদাকে ভুলুণ্ঠিত করেছে। ধর্ষণকারী সেই অমানুষদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করে সিলেটকে আবারও শান্ত করা হোক, দূর করে হোক মা-বোনদের আতঙ্ক, নিশ্চিত করা হোক নারীদের নিরাপত্তা।
জানা গেছে, রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩টায় সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের উদ্যোগে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, সকাল সাড়ে ১১ টায় সিলেট জেলা ও এমসি কলেজ ছাত্রলীগের উদ্যোগে এমসি কলেজের মূল ফটকের সামনে, সিলেট জেলা বিএনপির উদ্যোগে দুপুর ১২টায় এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের সামনে, বিকাল ৪টায় এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের সামনে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেট ও সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট, বিকাল ৪টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইইনয়ন, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সিলেট জেলা, বিকাল সাড়ে ৪টায় শহীদ মিনারে সামনে সিলেট শহরস্থ গোয়াইনঘাট ছাত্র পরিষদ, বেলা ২টায় নগরীর কোর্ট পয়েন্টে সিলেট তালামিযের উদ্যোগে পৃথক পৃথক মানবন্ধন, বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদসভাসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয়। এছাড়াও সব ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতার এবং শাস্তির দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদল। এর আগে শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নগরীতে পুলিশি বাঁধা সত্তেও প্রতিবাদ সভা ও মিছিল করে ছাত্রদল। তাছাড়া শনিবার দিনভর এই ইস্যুতে নানা কর্মসূচি পালন করে বিভিন্ন সংগঠন। এম.সি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ কারীদের শাস্তির দাবীতে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা করেছে মানববন্ধন। এম.সি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে গণধর্ষণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নূরু গংদের এবং চট্রগ্রামের আদিবাসী নারী ধর্ষণের ঘটনার তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আশ্রয় প্রশ্রয় দাতাদের দ্রুত গ্রেফতার দাবিতে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের উদ্যোগে ২৭ সেপ্টেম্বর রবিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এক মানববন্ধন ও কালো পতাকা প্রদর্শন অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট মহানগর ছাত্রলীগ নেতা শেখ লিপনের পরিচালনায় সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও জেলা যুবলীগ নেতা, এড. প্রবাল চোধুরী পুজন (এ.পি.পি.) বলেন, পূণ্যভূমি সিলেটের এই পবিত্র মাঠিকে যারা অপবিত্র করেছে তাদেরকে অতি দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অপরাধী যতই শক্তিশালী হোক না কেন তারা যেন আইনের কোনো ফাঁক দিয়ে বের হতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হব। পাশাপাশি তিনি প্রশাসনের প্রতি ধর্ষণকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের জোর দাবী জানান। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জেলরোড শাখা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা এমদাদুল হক মান্না, বাপ্পা পাল, মদন মোহন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রেজয়ানুল আজাদ চৌধুরী ইফাজ, সাংগঠনিক স¤পাদন রাশেদ মিয়া। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন যুবলীগ নেতা উত্তম দেব, সাজু আহমেদ, শান্ত দেব, মামুন মিয়া, ১২ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারন স¤পাদক মামুন ইসলাম, জায়েদ আহমদ, ইমন মিয়া, জুয়েল খান রায়হান, ফুয়াদ আহমদ রিফাত, সাগর তালুকদার, দিপু রায়, বিশাল দাশ, পিয়াং সোম, জনি খন্দকার, সম্রাট চন্দ, রাহুল চন্দ, তানভীর আহমেদ নূর, রুবেল আহমদ রাব্বি, মাজের আহমদ, সুহেল মিয়া, রুমেল আহমদ রুবেল, শান্ত অয়াল, নিকলেশ দাশ, ইব্রাহিম সারয়ার, রাকিব হাসান মিজু, মাহিন আলী, ইশফাক রুহান, জুনেল আহমদ, ইমরান আহমেদ, সাদমান ছাকিব, আহমেদ সানি, শাহ মেহাদ, রিদয় তালুকদার, রাকিব হুসেন, শিবু দাশ সুমন, আবদুল্লাহ সাবের, তন্ময় তালুকদার, সৈকত দাশ তন্ম্য, ১৭ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সায়েম ফরাজী, তিয়াস রায়, বিশ্ব দাশ, মনুজ চন্দ্র জয়, এহসান রাফি, আরফান শাহরিয়ার জয়, অনাবিল, রাতুল, জামিল আহমেদ, আজহার শাহরিয়ার, মিথিল হিমেল পিংকু, সায়েম আহমদ সানি, রাতুল রায়, সাব্বির আহমদ, মাহিন প্রীতম দেবনাথ, ইমন আহমেদ, রিফাত ইসলাম, শরিফ, রাসেল, রাকিব, প্রমি প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।