বিএনপি নেতা সাজুর তত্ত্বাবধানে বিজয় দিবস র্যালিতে বিপুল নেতাকর্মীর অংশগ্রহন
ঢাকা-১৪ আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও দারুসসালাম থানা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রতিবেশী দেশের সাথে নাকি প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারের গভীর সম্পর্ক। শেখ হাসিনা বলেছেন তিনি ভারতকে নাকি যা দিয়েছেন তা ভোলা যায় না। এখন তো প্রশ্ন জাগে তিনি ভারতকে কি দিয়েছেন? দেশের পতাকা নাকি সার্বভৌমত্ব? তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রতিবেশির সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করছেন। কিন্তু দেশের নাগরিকরা নিজ বাসায় অনিরাপদ। প্রকাশ্যে নারীর সম্ভ্রমহানী হয়। ছাত্রলীগ সিলেটের এমসি কলেজে নারী লাঞ্ছনা করেছে কোনো ব্যাবস্থা নেয়নি। ভারতকে নিয়ে ফেসবুকে লেখার কারণে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার নেই। বরং হত্যাকারীদের জেলখানায় পরীক্ষার খাতা সরবরাহ করা হচ্ছে। তারা বহু ছাত্র হত্যা করছে। ছাত্রদল না পেলে নিজেরা নিজেরা মারামারি কোপাকুপি করে।
রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠন (জিসাস) এর ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় সভায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। জিসাসের চেয়ারম্যান নাহিদ গুলনার ইভার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কুমিল্লা, চাঁদপুর, সিলেট, নেত্রকোনা, বরিশাল ও ভোলা জেলার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্রসফায়ার দিয়ে মানুষ হত্যা করছে। প্রতিমাসে দুজন একজন বিএনপির নেতাকর্মীও আছেন। কিন্তু তাদের রক্তবিন্দু থেকেই জাতীয়তাবাদীদের জন্ম হয়। সরকার আমাদের অনেক লোককে গুম করে ফেলেছে। কিন্তু তবুও বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে পারবেন না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশে নষ্ট প্রজন্ম, পৈশাচিক সম্প্রদায় তথা বিপথগামী সমাজ তৈরি করেছে সরকার। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে? কিন্তু তাদের দ্বারাই তো এসব হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এসব হচ্ছে।
রিজভী প্রশ্ন রেখে বলেন, ধর্ষিতা নারীর কান্না কি প্রধানমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদেরের কানে যায় না? তারা কি ক্রসফায়ারে মারা যাওয়া স্বজনদের কান্না শোনেন না। আমাদের দলের নেতা ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হীরু, পারভেজ, সুমন সহ বহু নেতাকর্মী অদৃশ্য।
তিনি আরো বলেন, সরকারের অপকর্মের বিরুদ্ধে বিএনপি ও ছাত্রদল যাতে কোনো কর্মসূচি করতে না পারে সেজন্য লাঠি সোটা রাম দা নিয়ে হামলে পড়ে তারা। আজকে জ্ঞান বিতরণ ও বিচ্ছুরণের প্রতিষ্ঠান হয়ে যাচ্ছে কসাইখানা ও নারী লাঞ্ছনার কেন্দ্র। আসলে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশন সবকিছুই সরকারের বশংবদ।
রিজভী বলেন, পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির এজেন্ট ঢুকতে দেয়নি। এতো খারাপ লোক নির্বাচন কমিশনে আসেনি।
তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, এমসি কলেজের ঘটনায় তো দৃষ্টান্ত করতে পারতো একঘন্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতার করে। আসলে যারা বারো বছর অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা করে তারা তো ভালো কাজ করবেনা। বর্তমানে সমাজবিরোধী দুর্বৃত্তে পরিণত হয়েছে ছাত্রলীগ।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, টেলিভিশন ও মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও সেক্টর কমান্ডারেদর অবমাননা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিদ্বেষ রয়ে গেছে। কেনো তার বাবা স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি? সেজন্য এই বিদ্বেষ। একথা তো ধ্রুবতারার মতো সত্য যে, আওয়ামী লীগের জন্মদাতা তো জিয়াউর রহমান।
তিনি বলেন, আজকে মিডিয়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার করতে দেয়না। কারেন্ট সরকার শব্দকে ভয় পায়। তারা আওয়াজকে ভয় পায়। মানুষের বাক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্র ধর্ষণ করেছে সরকার। তারা বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করতে চায়। এখন নতুনরূপে বাকশাল কায়েম করে ফেলেছে।
রিজভী বলেন, সম্প্রতি ইনডেমনিটি নামে চটি বস্তাপচা নাটক তৈরির মাধ্যমে যারা শহীদ জিয়াকে খাটো করার চেষ্টা করছে তারা জনগণের কাছে কালো তালিকাভুক্ত হয়ে থাকবে। জনগণ তাদেরকে ও সরকারের প্রতি ধিক্কার জানাচ্ছে। সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন জনগণের ক্ষোভের আগুন উৎসারিত হলে সরকারের সকল অনাচার ও পাপ পুড়ে ছাই হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আবুল হাশেম রানা জিসাসের প্রতিষ্ঠাতা ছিলো। তিনি জিসাসের প্রোগ্রামের দ্বারা বিএনপিকে জাগিয়ে রাখতেন। দলের সংকটে দুর্যোগে ভুমিকা রেখেছেন। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের জন্য নিবেদিত প্রাণ হিসেবে কাজ করে গেছেন। আবুল হাশেম রানার মৃত্যুতে অনেকখানি ক্ষতি হয়ে গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।