ছাত্রী লাঞ্ছনা করাই ছাত্রলীগের ইতিহাস বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালে শহীদ মিনারে প্রথম ছাত্রী লাঞ্ছিত করে এই ছাত্রলীগ। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতার ইতিহাস সবাই জানে। এগুলো তথ্যমন্ত্রীর মত মনগড়া কথা নয়, এগুলো ইতিহাস। ওরা মনে করে, যার বাড়িতে সুন্দরী মেয়ে আছে সেটা ছাত্রলীগের সম্পত্তি। যখন ইচ্ছা তখন বের করে নিবে।

সিলেট এমসি কলেজে স্বামীকে বেঁধে গৃহবধুকে গণধর্ষণ এবং খাগড়াছড়িতে পাহাড়ী নারীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্রদল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, ছাত্রলীগ দেখছে তাদের উপরের সারির নেতারা দুর্নীতি ও অপকর্ম করছে। সেজন্য তারাও অপকর্ম করছে। ছাত্রলীগ ভাবছে তাদের কেউ কিছু করবেনা। একশো বছরের একটি পুরনো প্রতিষ্ঠান এমসি কলেজে নারীর সম্ভ্রমহানির এতো বড় জঘন্য কর্ম হলো। কই প্রধানমন্ত্রীর দূরবীণ? তিনি তো শুধু তার বাসভবনে বসে বিএনপির ষড়যন্ত্র দেখেন। তিনি বলেন, আমি বলবো- দেখুন কখন যে রাজনীতির হাওয়া বদলে যায়। রাজনীতির হাওয়া কিন্তু দেখে শুনে আসে না। আবহাওয়ার যেমন নিশ্চয়তা নাই, সকালে রোদ, বিকেলে বৃষ্টি। রাজনীতির হাওয়াও কিন্তু যেকোনো সময় বদলে যেতে পারে। সেই দিনের কথা চিন্তা করুন। আজকে আপনারা যে জঘন্য কাজগুলো করছেন এর কিন্তু প্রতিশোধ জনগণ একদিন ঠিকই নেবে।

হালুয়া-রুটির সামান্য কিছু ভাগ পাওয়ার জন্য কিছু সাংস্কৃতিক পরজীবীরা একটি নাটক করেছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, যেখানে স্বাধীনতার ঘোষক এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হয়েছে। বিকৃতি রুচিসম্পন্ন একটি নাটক আরটিভিতে প্রচারিত হয়েছে। আমরা এটার প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমরা বলেছি ইতিহাসকে বিকৃত করে সাংস্কৃতিক ব্যক্তির নামে কয়েকজন পরজীবীরা এই জঘন্য নোংরা কাজ করছে। আজকে আমি ছাত্র- ছাত্রী ভাইদেরকে সাক্ষী রেখে বলছি- যারা এই সমস্ত জঘন্য বিকৃত ইতিহাস সৃষ্টি করছে তাদের আমরা ব্ল্যাকলিস্ট করছি।

তিনি বলেন, নিজেদের মনের মতো করে সাজানো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে কতদিন নিজেদেরকে নিরাপদ রাখবেন। আমাদের সাথে জনগণ আছে আমাদের সাথে রিক্সাওয়ালা আছে, আমাদের সাথে শ্রমিক আছে। আমাদের সাথে ছাত্র আছে, আমাদের সাথে শিক্ষক আছে। এদের শক্তিতেই আমরা চলি। এই ইনডিমিনিটি নামের যে নাটকটি রচনা করা হয়েছে- এটা একটি মিথ্যাচারের নাটক। আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

দেশে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাস-অপকর্মের বিরুদ্ধে ছাত্রদলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান রিজভী।

‘বিএনপি ক্ষমতায় আসার জন্য অলিগলিতে পথ খুঁজছে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব অলিগলিতে ঘুরে বেড়ায়। যারা নারীর সম্ভ্রমহানি করে, যারা ধর্ষক যারা টাকা পাচারকারি। আর এরা সবাই হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের এমপিরা, ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা। কাদের সাহেব অলিগলি আপনারা চেনেন। আমরা চিনি রাজপথ, আমরা জানি এই অবৈধ সরকারকে গলায় গামছা দিয়ে রাস্তায় নামাতে হবে। সেজন্য আমরা বুকের শার্ট খুলে দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিকে বরণ করে আমরা রাস্তায় আছি দিনের সূর্যের আলোতে। আপনাদের মত রাতের অন্ধকারে তরুণীদেরকে সম্ভ্রমহানি করা টাকা পাচার, টেন্ডারবাজি করা এ ধরনের কাজের সাথে কখনোই বিএনপি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিল না।

ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সহ-সভাপতি আশরাফুল আলম ফকির লিংকন, হাফিজুর রহমান হাফিজ, মামুন খান, ওমর ফারুক কাওসার, পার্থ দেব ম-ল, সাজিদ হাসান বাবু, মাহমুদুল হাসান বাপ্পি, মুক্তাদির হোসেন তরু, মোস্তাফিজুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, মো. শাহনেওয়াজ, তানজিল হাসান, আরিফুল হক, মারুফ এলাহি রনি, মাহমুদ সর্দার, যুবায়ের আল বাবু, মাহবুব মিয়া, শ্যামল মালুম, সহ-সাধারণ সম্পাদক আবু আফসান মো. ইয়াহইয়া, কে এম সাখাওয়াত হোসাইন, সিরাজুল ইসলাম, মো. জামিল হোসেন, সুলতানা জেসমিন জুঁই, মো. আলাউদ্দিন, সাহাদত পারভেজ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. তৌহিদ আওয়াল, মশিউর রহমান রনি ও সহ দফতর সম্পাদক আজিজুল হক সোহেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সদস্য সচিব মো. আমানউল্লাহ আমান সহ কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।।