পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেশে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুণ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য সবকিছুই এখন চলছে প্রযুক্তির মাধ্যমে। সাধারণ মানুষ ঘরে বসেই করতে পারছে অফিস, কেনাকাটা, শিক্ষার্থীরা ক্লাস করছে অনলাইনে, রোগীরা বিভিন্ন চিকিৎসকের সাথে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসাও নিচ্ছেন। করোনাপরিস্থিতির কারণে দেশে যখন ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে, ইন্টারনেট ব্যবহার করে সবকিছু পরিচালিত হচ্ছে তখন ধীরগতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা। তাদের অভিযোগ গত প্রায় দুই মাস ধরেই রাজধানীসহ সারাদেশেই ধীরগতির ইন্টারনেটের অভিজ্ঞতা পাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রায় সময়ই ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের প্রতিনিধিদের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হচ্ছেন ভূক্তভোগিরা। অভিযোগ করছেন টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসিতেও। কিন্তু কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করছে বা ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা (আইএসপি)। ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ফোন ইন্টানেটের ধীরগতি, যে পরিমাণ গতির জন্য বিল পরিশোধ করা হয় সেই পরিমাণ না দেয়ার অভিযোগ অনেক পুরনো। বিষয়টি নিয়ে বরাবরই গ্রাহকরা অভিযোগ করে আসছেন। তবে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ইন্টারনেটের প্রতি মানুষের নির্ভরতা বেড়েছে। এরই মধ্যে গত দুই মাস ধরে রাজধানীসহ সারাদেশেই ধীরগতির ইন্টারনেটের অভিজ্ঞতা পাচ্ছেন গ্রাহকরা।
রাজধানীর খিলক্ষেতের ইন্টারনেট গ্রাহক রাশেদ মেহেদী ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নিয়ে গতি পেয়েছেন ১১০ কেবিপিএস (কিলোবাইট পার সেকেন্ড)। বিষয়টি নিয়ে তিনি ওই সার্ভিস প্রোভাইডারকে একাধিকভার অভিযোগ করেছেন, অভিযোগ করেছেন বিটিআরসিতেও। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই কোন প্রতিকার পাচ্ছিলেন না। হতাশ হয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় আমাদের এলাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের ইন্টারনেটের গতির চিত্র ১১০ কেবিপিএস। এই গতি নিয়ে আমাদের স্বপ্নের কথা শুনতে হয়...। পরবর্তীতে চলতি মাসে গণমাধ্যম কর্মী পরিচয়ের সূত্রে তার বিষয়টি বিটিআরসি সমাধান করে দেয়।
তবে যাদের কোন প্রভাব নেই, সাধারণ নাগরিক হিসেবে ইন্টারনেট সেবা গ্রহণ করেন তাদের ভোগান্তির অন্ত নেই। তেমনি একজন গ্রাহক রাজধানীর আজিমপুরের বাসিন্দা ও বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আমান উল্লাহ স্থানীয় একটি আইএসপি থেকে ইন্টারনেট সেবা নিয়ে থাকেন। গত মাসের মাঝামাঝি হঠাৎ করেই তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এক সপ্তাহ ধরে যোগাযোগের পর সংযোগ সক্রিয় হলেও ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোন কাজই করতে পারছেন না নামমাত্র গতির কারণে। সংশ্লিষ্ট আইএসপির সাথে যোগাযোগ করলে তাকে জানানো হয় সিটি করপোরেশন থেকে ঝুঁলন্ত ক্যাবল অপসারণের কারণে এই ভোগান্তি হচ্ছে। আমান উল্লাহর প্রশ্ন টাকা দিয়ে কি ভোগান্তি কিনছি?
একইরকম ভোগান্তির শিকার রাজারবাগের বাসিন্দা মো. শাহজাহান বলেন, এখন ক্যাবল অপসারণের কথা বলে, কখনো বলে লাইন কাটা পড়ছে, কখনো বলে সাবমেরিন ক্যাবলে সমস্যা, সারাবছরই তাদের কোন না কোন অজুহাত লেগেই থাকে। তিনি বলেন, ওভারহেড (ঝুঁলন্ত) ক্যাবল কেটে দেয়ার কথা বলা হচ্ছে, অথচ আন্ডারগ্রাউন্ডে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল রয়েছে সেটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে না কেন? বিটিআরসিই বা তাদের বাধ্য করছে না কেন?
জানতে চাইলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি) এর সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক বলেন, রাজধানীতে ওভারহেড ক্যাবল অপসারণ চলছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই গ্রাহকরা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন। এছাড়া ক্যাবল অপসারণের পর সেটি আবার তুলতে প্রোভাইডারদের বাড়তি ১০ শতাংশ ব্যয় করতে হচ্ছে। এই ঘাটতি পূরণ করতে তারা আগে যে ব্যান্ডউইথ ও গতি দিয়ে সার্ভিস দিতেন সেটি কমিয়ে দেয়া হয়েছে।
ঝুঁলন্ত তারের পরিবর্তে ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের (এনটিটিএন) ফাইবার অপটিক্যাল সেবা গ্রহণ করা হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে এমদাদুল হক বলেন, মূল সড়কে এনটিটিএনের ক্যাবল রয়েছে, এছাড়া একেকটি পোর্ট এক কিলোমিটার দূরে দূরে। তাদের সেবা নিলেও আমাদের এক কিলোমিটার তার ঝুঁলিয়ে নিতে হবে।
রাজধানীতে নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি সম্পর্কে এনটিটিএন অপারেটর ফাইবার এট হোমের গভর্নমেন্ট রিলেশন্স এন্ড রেগুলেটরি বিভাগের প্রধান আব্বাস ফারুক বলেন, ফাইবার এট হোমের সারাদেশে সকল জেলা ও উপজেলায় ৫০ হাজার কিলোমিটার ফাইবার রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ১৮শ’ কিলিমিটার ম্যাশ নেটওয়ার্ক। একটি সংযোগ কেটে গেলে বিকল্প নেটওয়ার্ক রয়েছে। রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় তাদের নেটওয়ার্ক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে ৬টি এলাকা রয়েছে যেগুলোতে সব ভবনেই নেটওয়ার্ক রয়েছে।
এক কিলোমিটার পর পর পোর্টের বিষয়ে আইএসপি যে অভিযোগ করেছে সে বিষয়ে তিনি বলেন, আইএসপি অপারেটররা যেখানে চাইবে সেখানেই আমরা পোর্ট দিতে পারবো।
টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার বিটিআরসির সিনিয়র সহকারি পরিচালক মো. জাকির হোসেন খান বলেন, লাইসেন্সের শর্ত অনুযায়ী সার্ভিস প্রোভাইডাররা গ্রাহকদের প্রতিশ্রæত সেবা অবশ্যই দিতে হবে। তবে যদি কোন গ্রাহক তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সেবা না পায় তাহলে বিটিআরসিতে অভিযোগ করতে পারে। বিটিআরসি লাইসেন্সিং নীতিমালা অনুযায়ী সেসব আইএসপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে অনেক অভিযোগের সমাধানও করেছে কমিশন। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।