পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে স্বামী এমপি, স্ত্রী উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাই পৌর মেয়র, আত্মীয়-স্বজনরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এমন উদাহরণ দেশের অনেক জায়গায়। এমপিরা নিজেদের পারিবারিক ও চামচা সিন্ডেকেট দিন দিন বড় করেই চলেছেন। আত্মীয় না থাকলে নিজের খাস লোকদের জনপ্রতিনিধি বানাচ্ছেন। উপজেলা চেয়ারম্যানরাও ইউনিয়নগুলোতে তাদের আত্মীয়-স্বজন ও খাস লোকদের জনপ্রতিনিধি বানিয়ে বলয় তৈরী করে রেখেছেন। এতে করে দিন দিন নেতাদের অপকর্ম যেমন বেড়েই চলেছে ঠিক একই সাথে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেও জনপ্রতিনিধি হবার সুযোগ পাচ্ছেন না পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতারা। কিন্তু বিএনপি, জামায়াত, রাজাকারদের সন্তানরাও আওয়ামী লীগের টিকিটে জনপ্রতিনিধি হচ্ছে এমপিদের কারণে।
তাই আসন্ন চারটি জেলা পরিষদ, ৯টি উপজেলা এবং ৬১টি ইউনিয়ন পরিষদের আসন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে এমপিদের বলয় ভাঙতে চায় আওয়ামী লীগ। ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন করাই দলের মূল্য লক্ষ্য। আজ দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
জানা গেছে, এমপিদের যেসব আত্মীয় জনপ্রতিনিধি হয়ে অপকর্ম করেছেন, দলে বিশৃঙ্খলা তৈরী করেছেন মনোনয়ন দেবে না আওয়ামী লীগ। তৃণমূলের পাঠানো প্যানেলের বাইরে এবার দলীয় মনোনয়নও বিক্রি করা হয়নি। অনেক এমপি ডিও লেটার দিয়েছেন কিন্তু তা আমলে নেয়নি আওয়ামী লীগ। এছাড়া বিগত সময়ে এমপি এবং জেলা নেতাদের সুপারিশে যেসব সুবিধাভোগী, সুযোগসন্ধানী, দুর্নীতিবাজ, রাজাকারের ছেলে-নাতি-স্বজন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধীসহ বিতর্কিতরা দলের মনোনয়ন পেয়ে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন তাদের কাউকেই এবার দলের মনোনয়ন দেয়া হবে না। তৃণম‚ল সুপারিশ করলে কেন্দ্র তাদের বাদ দিয়ে দেবে। অতীতে তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতাদের হস্তক্ষেপে স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের পোষ্যরা স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে কিছু এলাকায় এমপিরা জেলা ও উপজেলা নেতাদের ম্যানেজ করে নিজেদের আত্মীয় ও নিজেদের বলয়ের নেতাদের নাম নাম বাদে অন্য কারো নাম তৃণমূল থেকে কেন্দ্রে পাঠানো হয়নি মনোনয়নের জন্য। সেসব বিষয়েও খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। এছাড়া সে সব এলাকায় নিয়মিত সংঘর্ষ হচ্ছে সেখানে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায় নিরপেক্ষ নেতাদের মনোনয়ন দেয়ার কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের নেতারা।
সম্প্রতি কয়েক দফা মারামারি হয়েছে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজলা আওয়ামী লীগের মধ্যে। সামনে এ উপজেলার নির্বাচন। এখানের আওয়ামী লীগের নেতারা এমপি পরিবারের বাহিরে নৌকার প্রার্থী চান। কুমিল্লা-১ আসনের এমপি মেজর জেনারেল (অবঃ) সুবিদ আলী ভূঁইয়ার ছেলে মেজর (অবঃ) মোহাম্মদ আলী সুমন এ উপজেলার চেয়ারম্যান। এমপির ভাতিজা যুবদল নেতা বুলু ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দীর্ঘদিনের ত্যাগী নেতা নৌকার প্রার্থীকে ফেল করিয়ে ভাতিজা বুলুকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বানান এমপি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাথে যেন সবকিছুতেই বিরোধ বেধেই আছে এমপি পরিবারের। সুযোগ পেলেই মারামারি বাধে এলাকার আওয়ামী লীগের মাঝে। দলের অনেক ত্যাগী নেতারাও এমপির রোষানলে পড়ে বিতাড়িত হয়েছেন। বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনেরও অভিযোগ রয়েছে। এখানে এমপি পরিবারের বাইরে দলের মনোনয়ন চান আওয়ামী লীগ নেতারা।
শুধু এখানেই নয়, দেশের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নে একই চিত্র বিরাজ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে। এমপিদের বলয় ভেঙে সুশাসন ও উন্নয়নের জন্য দলের ত্যাগীদের পুনর্বাসন করবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।
ইতোমধ্যে পাঁচটি সংসদীয় উপ-নির্বাচনের মধ্যে চারটিতে ঢাকা-৫ ও ১৮, নওগা-৬, পাবনা-৪ এ এপমি পরিবারের বাইরে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন হতে যাওয়া চারটি জেলা পরিষদের মধ্যে রয়েছে- ফরিদপুর, মৌলভীবাজার, মাদারীপুর ও ফেনী। সম্প্রতি এই চারটি জেলা পরিষদের দলীয় চেয়ারম্যানদের মৃত্যুতে এগুলো শূণ্য হয়। এছাড়া ৯টি উপজেলার মধ্যে রয়েছে- নওগাঁর মান্দা, যশোরের যশোর সদর, বাগেরহাটের শরণখোলা, খুলনার পাইকগাছা, মাদারীপুরের শিবচর, সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ, কুমিল্লার দাউদকান্দি, চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ ও চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলের কেন্দ্রীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক জানান, ‘মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে ত্যাগী ও জনপ্রিয় নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে। বিতর্কিত কাউকে মনোনয়ন দেবে না আওয়ামী লীগ।’ কিন্তু তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, ২০০৮ সালের নির্বাচনে দল ক্ষমতায় আসার পর থেকে ত্যাগের মূল্যায়ন পাচ্ছেন না দুর্দিনের পরিক্ষিত ত্যাগী নেতারা। অন্যদিকে দলে সুবিধাবাদীদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্লেণ (অব) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আমাদের দলের তৃণমূলের জনপ্রিয়, সংগঠনের সঙ্গে সু-সম্পর্ক রয়েছে এবং দায়িত্ব পালনে সক্ষম- এমন নেতাদেরই দলীয় মনোনয়ন বা সমর্থন দেয়া হবে। আওয়ামী লীগ সব সময় ত্যাগীদের মূল্যায়ন করে। স্থানীয় সরকার নির্চানগুলোতেও ত্যাগীদেরই মূল্যায়ন করা হবে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বা বিতর্ক রয়েছে তাদের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, তৃণমূলের ত্যাগী ও যোগ্যদেরই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে। যারা দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাবে বা বিদ্রোহী প্রার্থী হবে তাদের বিষয়ে এবার আমরা ভিষণভাবে মনোনযোগী। কারণ অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারের পেক্ষাপট ভিন্ন। এবার আমাদের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনে আসছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর এক সদস্য বলেন, অনেক জায়গায় নিজেদের আলাদা বলয় তৈরী করতে চান স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং জেলার বা কেন্দ্রীয় নেতারা। নিজেদের গ্রুপকে শক্তিশালী করতে গিয়ে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যান। এই বিষয়গুলোকে আমরা এবার গুরুত্বের সঙ্গে দেখবো। তাছাড়া বিএনপির নির্বাচনে আসলে জয় পেতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই। তৃণমূল নেতাকর্মীরাই আওয়ামী লীগের প্রাণ। আমরা যেকোনও মূল্যে তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী রাখতে চাই।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।