Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বশেমুরবিপ্রবিতে সাংবাদিকের উপর হামলার বিচার হয়নি এক বছরেও

গোপালগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১:২৫ পিএম

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সাংবাদিক সমিতির সভাপতি শামস জেবিনের উপর হামলার বিচার এক বছরেও করা হয়নি। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। কিন্তু এখনো এ প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃংখলা বোর্ডে উপস্থাপন সকরা হয়নি। এ প্রতিবেদন কার্যত আলোর মুখ দেখেনি। তাই শামস জেবিনের ওপর হামলার বিচার এখনো হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি শামস জেবিন জানান, বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সদস্য ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানাই। এত ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের নির্দেশে ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তাকে পরীক্ষার হল থেকে ডেকে নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পন্থী কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরে তার ওপর হামলা চালায় ওই সকল শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে এক বছর পার হলেও এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িত কাউকে বিচারের আওতায় আনা হয়নি বলে জানান শামস জেবিন। তিনি এ ঘটনার ন্যায় বিচার দাবি করেন।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় ওই দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন আব্দুর রহিম খানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে পাঁচ দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু একমাসেও তদন্ত কমিটি কোনো রিপোর্ট প্রদান করেনি। পরে ২০ অক্টোবর পুনরায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট ওই তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন রফিকুন্নেসা আলী এবং সদস্য সচিব ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদ বলেন, এ ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন কমিটি আমার কাছে জমা দিয়েছে। এটি আমার অফিসে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃংখলা বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন চাওয়া হয়নি। শৃংখলা বোর্ড প্রতিবেদন চাইলে আমি উপাচার্যের কাছে এ প্রতিবেদন প্রদান করবো। শৃংখলা বোর্ড এ প্রতিবেদনের সুপারিশের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
এদিকে দীর্ঘ এক বছরেও হামলার ঘটনায় বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা। একুশে টিভি অনলাইনের বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি মাইনউদ্দিন পরান বলেন, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যখন ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কার করা হলো, তখন বশেমুরবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির বেশ কয়েকজন সদস্য তার পাশে দাঁড়িয়েছিলো- যাদের মধ্যে শামস জেবিন ছিলেন অন্যতম। আর এ কারণেই তার ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালায় তৎকালীন ভিসির লালিত বাহিনী। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো হামলার ১ বছর পার হলেও এখনও সেই চিহ্নিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি, যা বিচারহীনতার সংস্কৃতিরই নামান্তর। আমরা চাই হামলাকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। ক্যাম্পাসে স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এটিই আমাদের প্রত্যাশা।
প্রসঙ্গত, ফাতেমা-তুজ- জিনিয়াকে বহিস্কারের প্রতিবাদে সরাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এরপর স্বৈরাচারী আচরণ, দুর্নীতি, নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০১৯ সেপ্টেম্বরে বশেমুরবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। ৩০ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন। # মোঃ অহেদুল হক,১৮.০৯.২০২০

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ