Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলায় নাঈমের যাবজ্জীবন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

নারায়ণগঞ্জের আাড়াইহাজারে মেধাবী একজন স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনার আট বছর পর ধর্ষণকারী নাঈম হাসানকে (২৮) যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছে আদালত। গতকাল দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দীন চাঞ্চল্যকর এ স্কুলছাত্রী ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে অপহরণ ও নারী ও শিশু নির্যাতন উভয় অভিযোগে পৃথকভাবে যাবজ্জীবন কারাদÐসহ আসামিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার দুই লাখ আদায় করে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবারকে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় আদালতে ধর্ষণকারী নাঈম অনুপস্থিত ছিল।
দÐিত নাঈম হাসান আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের উজান গোবিন্দী গ্রামে আব্দুর রউফ মিয়ার ছেলে ও ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লাক মিয়ার ভাতিজা। আদালতের রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন।
মামলার বরাত দিয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. কাজী আব্দুস সেলিম ও অ্যাড. মাসুদ রানা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা-২০১০ এ নারায়ণগঞ্জ জেলায় পঞ্চম স্থান অর্জনকারী ও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া উজান গোবিন্দী বিনাইরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রীকে ২০১২ সালে ৭ এপ্রিল সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তা থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে ধর্ষক নাঈম হাসান। অপহরণের পর রূপগঞ্জের পারাগাঁও এলাকায় নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে অজ্ঞান অবস্থায় তাকে তাদের বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে যায়। পরিবারের সদস্যরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে রেখে চিকিৎসা দেয়। এ ব্যাপারে ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে অপহরণসহ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর থেকে ধর্ষিতার পরিবারকে মামলা তুলে নেয়াসহ যারা সাক্ষী দিয়েছে তাদেরকে গোপনে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। তারা জানান, দীর্ঘ সময়ে পরে হলেও আদালতের রায়ে দোষীদের চিহ্নিত করে সাজা দেয়া হয়েছে, তাতে তারা সন্তুষ্ট।
মামলার বাদী জানান, ধর্ষণকারী ও তার পরিবার স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনার পর গত আট বছর তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের নানারকম হয়রানি সহ্য করতে হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। এরপরও তিনি মনে করেন, সবার সহযোগীতায় আদালতের এই রায় পেয়েছেন, যাতে অপরাধীর সাজা হয়েছে। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ঘটনার সময় নির্যাতিত স্কুলছাত্রী ৭ম শ্রেণীতে পড়তেন। এখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। দীর্ঘসময়ে পরে এসে আলোচিত এই ঘটনায় আদালতের রায়ে নির্যাতিত সেই ছাত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে সাজাপ্রাপ্তের আইনজীবীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করার কথা জানিয়েছেন।

 



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৮:৩৪ এএম says : 0
    সাজাপ্রাপ্তের আইনজীবীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করার কথা জানিয়েছেন। উকিলদের এই কথা পড়ার পরই আমার খুবই দুঃখ লেগেছে যেসেটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছিনা। মনে হচ্ছে আমরা (মুক্তিযোদ্ধারা) এসব অমানবিক উকিদের পকেট বানিজ্য করার জন্যেই কি এই দেশের জন্ম দিয়েছিলাম?? আমি ব্যাক্তিগত ভাবে যেহেতু একজন অসহায় সেহেতু আমি চাইলেও এসব পয়সা লোভী উকিলদের বিপক্ষে কিছুই করতে পারবোনা তাই ইসলামের নীতি মোতাবেক এদের (পয়সার পিচাস উকিল) বিচার করার জন্যে মহান আল্লাহ্‌র দরবারে আকুল আবেদন জানাচ্ছি। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ