পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা পরবর্তী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ঘটবে অন্যান্য দেশের তুলনায় খুবই দ্রুত। আমদানি-রফতানি ব্যয়ে ভারসাম্য, রেমিট্যান্সে সাফল্য, বিপুল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, দীর্ঘদিন পর চাঙ্গা হয়েছে পুঁজিবাজার এবং জিডিপি অনুপাতে সরকারি ঋণ কম হওয়ায় অন্য দেশের তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। করোনা মহামারির ক্ষতি কাটিয়ে আগামী অর্থবছরেই স্বাভাবিক হচ্ছে অর্থনীতি। সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এমন পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। আর এমন পূর্বাভাসের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন স্বনামধন্য অর্থনীতিবিদরাও। এমনকি যা বলা হচ্ছে তার থেকেও বেশি হবে বলে আশাবাদ বিশেষজ্ঞদের।
স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের বৈশ্বিক গবেষকরা গত মাসে বলেছিলেন, করোনা পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উত্তরণ সবচেয়ে দ্রুত গতিতে হবে। অর্থনৈতিক সূচকগুলো ইতিবাচক হওয়ায় তা বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিকে শক্তিশালী করবে। ফলে খুব শিগগির ঘুরে দাঁড়াবে দেশের অর্থনীতি। আর গতকাল বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দ্রুত করোনা পরিস্থিতির প্রভাব কাটিয়ে ওঠার কারণ হিসেবে সামষ্টিক অর্থনীতিকে সরকারের সময়োপযোগী কার্যকর পদক্ষেপগুলোকে চিহ্নিত করেছে এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুবিন্যস্ত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার কারণে গত এক দশকে বাংলাদেশে গড়ে ৬ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। প্রবৃদ্ধির ৬ শতাংশের বৃত্ত ভেঙে ইতোমধ্যে ৮ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনার কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতি যেখানে বিপর্যস্ত, সেখানে বিদায়ী অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের ওপরেই অর্জিত হয়েছে। করোনার মধ্যেও দেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১৫৫ ডলার।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলি রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আশা করছি করোনা পরবর্তী বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দ্রুত পুনরুদ্ধার ঘটবে। ২০২১ সালের মধ্যেই প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সূচকগুলো লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হচ্ছে। তাই যা ধারণা করা হয়েছে এবং বিভিন্ন সংস্থার পূর্বাভাসের থেকেও বেশি হবে বলে আশাবাদী। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি। পুঁজিবাজার নিয়ে যে আশা করা হয়েছিল তা নির্ধারিত সময়ের আগেই পৌঁছে গেছি। আমদানি-রফতানি চাহিদার তুলনায় বেশি। আমদানি-রফতানি ব্যালেন্স অব পেমেন্ট আগে ছিল নেগেটিভ, যা এখন পজেটিভ হয়েছে। রিজার্ভ সকল রেকর্ড অতিক্রম করেছে। খাদ্য উৎপাদনে রেকর্ড, মাছ উৎপাদনে রেকর্ড, বন্যার মধ্যেও সবজি রফতানি হচ্ছে। শিবলি রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বরেন, সব দিক থেকেই লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। তাই এডিবি বা বিভিন্ন সংস্থা যে পূর্বাভাস দিচ্ছে তার থেকে অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাংলাদেশের বেশি হবে।
২০২১-২২ অর্থবছরে অর্থনীতি থেকে করোনার প্রভাব কেটে গিয়ে বাংলাদেশর অর্থনীতি সামনের দিকে এগিয়ে যাবে এমন দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (২০২০-২৫) খসড়ায়। এজন্য এই পরিকল্পনায় চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধারা হলেও আগামী অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। পরিকল্পনা কমিশন সাড়ে ৬ শতাংশ মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরলেও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের প্রক্ষেপন আরও বেশি। এডিবি’র ধারণা, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। এটিকে করোনা মহামারির মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতির পুনরুদ্ধার প্রবণতারই ইঙ্গিত বলে মনে করছে সংস্থাটি। গতকাল এডিবির এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক-২০২০ এর হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে। সদ্য বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরে করোনা মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ যা বাংলাদেশের অর্থনীতির শক্তিমত্তা প্রকাশ করেছে। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ যা ছিল এশিয়ার সব দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এডিবি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ম্যানুফ্যাকচারিং খাতের শক্ত ভিত্তি এবং রফতানি গন্তব্যগুলোতেও প্রবৃদ্ধিতে গতি আসার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এই ক্রমান্বয়ে পুনরুদ্ধার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি সহনশীল মাত্রায় (৫ দশমিক ৫ শতাংশ) থাকবে বলেই আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিও কমে ১ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসতে পারে।
সামষ্টিক অর্থনীতি ব্যবস্থাপনায় সরকারের বিচক্ষণতা এবং দ্রুততার সঙ্গে প্রণোদনা পরিকল্পনার বাস্তবায়নই এই সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার মূল চাবিকাঠি বলেও উল্লেখ করেছে এডিবি। এই প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে দীর্ঘায়িত মহামারী অথবা এই দেশের রফতানি গন্তব্যগুলোর অবস্থা।
এ বিষয়ে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মহমোহন প্রকাশ বলেন, মহামারি পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। স্বাস্থ্য ও মহামারী ব্যবস্থাপনা নিয়ে উল্লেখযোগ্য চাপের মধ্যে থেকেও সরকার ভালোভাবেই অর্থনীতিকে ধরে রাখতে পেরেছে। মূলত দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য মৌলিক সেবা ও পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে উপযুক্ত প্রণোদনা এবং সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম নেয়ার কারণে এটি সম্ভব করতে পেরেছে সরকার।
তিনি বলেন, রফতানি ও রেমিট্যান্সে অর্থনীতির সাম্প্রতিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বৈদেশিক তহবিলের জোগান নিশ্চিত করতে সরকারের সামষ্টিক অর্থনীতি ব্যবস্থাপনা এই পুনরুদ্ধারকে সম্ভব করেছে। আগেভাগে ভ্যাকসিন প্রাপ্তি এবং স্বাস্থ্য ও মহামারী ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেয়া এই পুনরুদ্ধার প্রবণতাকে সহায়তা করবে উল্লেখ করে মহমোহন বলেন, সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, রফতানি বৈচিত্র্য, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষতা উন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য এই সঙ্কটই একটি সুযোগ এনে দিয়েছে। আর এসব ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে এডিবি সরকারের সঙ্গে কাজ করছে।
করোনা মহামারির কারণে আর্থ-সামাজিক প্রভাব মোকাবেলা এবং দ্রুত পুনরুদ্ধারে সহায়তা দিতে এডিবি এরই মধ্যে বাংলাদেশকে প্রাথমিকভাবে ৬০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ এবং ৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে। এছাড়া ২০২১-২৩ পর্যন্ত সময়ে সহযোগিতা করতে আরো ১১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ সহায়তা দেবে।
এদিকে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার খসড়ায় বলা হয়েছে, যেহেতু সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি উন্নতি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে, সেহেতু ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি অর্জনের এই লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। পরের অর্থবছর তথা ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৮ দশমিক ৩২ শতাংশ। তারপরের বছর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ এবং পরিকল্পনার শেষ অর্থবছর ২০২৪-২৫ এ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৫১ শতাংশ অর্জিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
খসড়া পরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়েছে, করোনা না থাকলে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হতো ৮ দশমিক ২৩ শতাংশ। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।
খসড়ায় আরও বলা হয়, করোনা মহামারি দেশের মানুষের জীবন এবং সম্পদের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এ অবস্থায় মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে জনগণের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যসেবা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা শক্তিশালীকরণ, জেলা পর্যায় পর্যন্ত মানসম্মত ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
খসড়ায় আরও বলা হয়, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির শক্তিশালী বাস্তবায়ন এবং দারিদ্র্য কমানোর মতো কর্মসূচি যুক্ত করা হবে। তবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। কারণ, দেশের ৮৫ শতাংশ কর্মসংস্থানই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। এক্ষেত্রে ধীরে ধীরে প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান বাড়ানোর প্রচেষ্টা থাকবে।
এদিকে গত মাসে ‘স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড গ্লোবাল রিসার্চ ব্রিফিং ২০২০’ শীর্ষক অনলাইন ব্রিফিংয়ে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের আসিয়ান ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান অর্থনীতিবিদ এডওয়ার্ড লি বলেছিলেন, বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ মন্দার মাঝেও এশিয়ার দুটি দেশ এ বছর ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে যাবে। বাংলাদেশ এর অন্যতম, অন্য দেশটি ভিয়েতনাম। জিডিপি প্রবৃদ্ধির দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্বের সব দেশের জন্যই চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক ছিল সবচেয়ে খারাপ। সেখানেও পুনরুদ্ধার দেখাতে পেরেছে বাংলাদেশ। স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের অর্থনীতিবিদদের এই পূর্বাভাস মিলে গেল এডিবি’র প্রক্ষেপণের সঙ্গেও।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের অর্থবাজার প্রধান মুহিত রহমান বলেছেন, এই মুহূর্তে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যা বাংলাদেশের হাতে নেই। রফতানির জন্য বাংলাদেশ ইউরোপ ও আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল। জিডিপি অনুপাতে বাইরের ঋণ যেহেতু অনেক কম, বাংলাদেশ ভি আকারের পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে আমরা অনেক বেশি আশাবাদী।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয় বলেন, একই মানের অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ শক্তিশালী অবস্থায়ই এই সঙ্কটকালে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ অনেক কম, সার্বিক সরকারি ঋণ কম এবং বিপুল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের কারণে স্বস্তিদায়ক ঋণ সেবা সক্ষমতাও রয়েছে। সবাই একসঙ্গে কাজ করলে দ্রুত অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার এবং সম্ভাবনার পথে এগিয়ে যেতে পারব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।