বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে করোনা সঙ্কটের মধ্যেও কৃষিনির্ভর দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিকে সচল রাখতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন কৃষিযোদ্ধারা। বিগত রবি মৌসুমে বোরো, গম, তরমুজ ও শাক-সবজি উৎপাদনে প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা। গত নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এবং মে মাসের ‘আম্পান’ দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে দিলেও দমে থাকেনি কৃষকরা।
উপরন্তু এবার ভরা বর্ষা মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে কাক্সিক্ষত বৃষ্টিও হয়নি। অথচ বুলবুল ও আম্পানের পরে অসময়ের অতিবর্ষণ কৃষি ব্যবস্থাকে লÐভÐ করে দিয়েছে। এমনকি ভাদ্রের বড় অমাবশ্যায় ভর করে গত মাসে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারের সাথে উজানের ঢলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে উঠতি আউশ ও রোপা আমনের বীজতলার পুরোটাই প্লাবিত হয়। এমনকি গত মার্চের শেষ ভাগ থেকে করোনা সঙ্কট কৃষি ব্যবস্থায় যথেষ্ট বিরূপ প্রভাব ফেললেও দমে থাকেননি কৃষকরা।
গত রবি মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় সোয়া লাখ হেক্টর জমিতে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টন বোরো চাল উৎপাদনের মধ্যেই আউশ আবাদে মাঠে নামেন কৃষকরা। সারাদেশে ১৩ লাখ ৩৬ হাজার হেক্টরের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চলেই প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্য ছিল ৬ লাখ ৬ হাজার টন চাল। ইতোমধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ জমির আউশ ধান কাটা শেষ হয়েছে। শুধুমাত্র বরগুনা জেলার কিছু আউশ এখনো মাঠে। যা আগামী সপ্তাহখানেকের মধ্যেই কৃষকের ঘরে উঠবে। তবে গত মাসের ভয়াবহ প্লাবনের কারণে আউশের উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হবার আশঙ্কা কৃষিবিদদের।
এরইমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন আবাদের মৌসুমও শুরু হয়ে গেছে। চলতি মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৫ লাখ ১৫ হাজার ৫২২ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের মাধ্যমে ১৬ লাখ ৬৩ হাজার টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা। গত মাসের ভয়াল প্লাবনে রোপনকৃত প্রায় সোয়া লাখ হেক্টরের রোপা আমন প্লাবিত হয়েছিল। কিন্তু পানি সরে যাবার পরে বৃষ্টির কারণে নিমজ্জিত ধান আবার সজীব হয়েছে। ইতোমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৯৩ ভাগ জমিতে আমনের রোপন সম্পন্ন হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর-ডিএই’র বরিশাল অঞ্চলের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। আবাদ ও উৎপাদনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সকাল-সন্ধ্যা কাজ করছেন কৃষকরা।
চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্য অর্জিত হলে দক্ষিণাঞ্চলে এক বছরে প্রায় ৩০ লাখ টন দানাদার খাদ্য ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে বলে আশাবাদী কৃষিবিদরা। বিগত বছরগুলোতে দক্ষিণাঞ্চল খাদ্য উৎপাদনে ৭ লক্ষাধিক টন উদ্বৃত্ত এলাকা হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে কৃষি মন্ত্রণালয়ে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে কৃষিই দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে আসছে। যে কোন রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক সঙ্কটে কৃষি অর্থনীতিই দক্ষিণাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থায় প্রধান ভ‚মিকা পালন করেছে।
এবারের একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও করোনা সঙ্কটেও মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের অপার দান দক্ষিণের কৃষিকে সমৃদ্ধ করেছে মন্তব্য কৃষি অর্থনীতিবিদদের। তবে উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করাসহ সব ধরনের সহায়তা প্রদানে সরকারকে তাগিদ দিয়েছেন কৃষকরা। গত মাসের প্লাবনের পরে কৃষিক্ষেত্রে কিছু প্রনোদণা প্রদানের বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।