পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মামলার পাহাড়ে মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার প্রধান আসামি কক্সবাজারের টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। ‘ক্রসফায়ারের’ হত্যার অভিযোগে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে তার বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১৫টি মামলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। এই মামলায় প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণও আসামি। সিনহা হত্যা মামলায় প্রদীপ কারাগারে যাওয়ার পর থেকে পলাতক চুমকি কারণ। দুদক তাকে খুঁজে পাচ্ছে না।
কারাগারে যাওয়ার পর প্রদীপের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা রুজু করেন কথিত বন্দুকযুদ্ধ আর ক্রসফায়ারে নিহতদের স্বজনেরা। চট্টগ্রামের চন্দনাইশে দুই ভাইকে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রদীপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আদালতে দায়েরকৃত মামলার সংখ্যা ১৫টি। কারাগারে যাওয়ার পর প্রদীপ ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়।
গতকাল কড়া নিরাপত্তায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রদীপকে আদালতে আনা হয়। এ সময় তার পক্ষে আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। দুদুকের আইনজীবী মাহমুদুল হক বলেন, আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে প্রদীপ কুমার দাশকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন। প্রদীপের পক্ষে জামিন এবং কারাগারে চিকিৎসা সংক্রান্ত দুটি আবেদন জমা দেয়া হয়েছে। আদালত জামিন বিষয়ে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন। চিকিৎসার বিষয়ে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
এদিকে দুদক কর্মকর্তারা জানান, প্রদীপের বিরুদ্ধে আরো একটি দুর্নীতি মামলার প্রস্তুতি চলছে। প্রদীপের স্ত্রীকে সম্পদের তথ্য জমা দেয়ার নোটিশ দেয়া হলে তিনি তথ্য জমা দেন। এ তথ্যে গড়মিলের কারণে স্ত্রীকে প্রধান আসামি এবং প্রদীপকে ২ নং আসামি করে এ মামলাটি হয়েছে। একই সময়ে প্রদীপককে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে নোটিশ দেয়া হয়। প্রদীপও একটি বিবরণী জমা দিয়েছেন। সেটি অনুসন্ধান ও তদন্ত করে বেশকিছু অসঙ্গতি পাওয়া গেছে জানিয়ে দুদক কর্মকর্তারা জানান, এ ঘটনায় প্রদীপের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
দুদক কর্মকর্তারা জানান, প্রদীপের বাবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) একজন নিরাপত্তা প্রহরী ছিলেন। ১৯৯৫ সালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে যোগদান করেন প্রদীপ। ২০০২ সাল থেকে সম্পদ দৃশ্যমান হতে থাকে। প্রদীপ ও তার স্ত্রীর নামে-বেনামে বিপুল সম্পদ রয়েছে। তবে এসব সম্পদ অর্জনের বৈধ কোন আয়ের উৎস তাদের নেই।
এদিকে কক্সবাজার ব্যুরো জানায়, অবশেষে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার প্রধান আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ‘ডান হাত’ খ্যাত কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল সোমবার তাকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক তামান্না ফারাহ।
এখন পর্যন্ত রুবেল শর্মাসহ সিনহা হত্যা মামলায় ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হলো। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর সিনিয়র এএসপি খাইরুল ইসলাম। র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান জানিয়েছেন, আলোচিত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় পূর্বে গ্রেপ্তার হওয়া অন্যান্য আসামিরা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় পুলিশের কনস্টেবল রুবেল শর্মার নাম উঠে আসে। এ কারণে রোববার রাতে র্যাবের একটি দল রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাবের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মেজর সিনহা হত্যা মামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তিনি জানান, কনস্টেবল রুবেল শর্মার জন্য এখনো কোনো রিমান্ডের আবেদন করেনি। তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করলে পরবর্তীতে তাকে রিমান্ড নেয়া যেতে পারে।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার বন্দুকযুদ্ধে আবদুল আমিন ও মফিদ আলম নিহতের ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যা উল্লেখ করে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। কক্সবাজার সিনিয়র বিচারিক আদালত (টেকনাফ-৩) মো. হেলাল উদ্দিনের আদালতে এ মামলা দুটি করা হয়।
আদালত মামলা আমলে নিয়ে এ সংক্রান্ত টেকনাফ থানার মামলার নথিপত্র আগামী ৯ নভেম্বর আদালতে উপস্থাপনের জন্য টেকনাফ থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এরপর ৫ আগস্ট এ ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার আদালতে মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।