পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হায়রে মায়ের মন! ‘বুকের ধন’ একমাত্র সন্তান মারা গেছে। সন্তান হারানো বেদনা ভুলতে লালনপালনের জন্য পথের ফুল বিক্রেতা ফুটফুটে একটা মেয়েকে বুকে তুলে নেন নুর নাজমা আক্তার লুপা তালুকদার। নাড়িছেঁড়া ধন হারানোর বেদনা ভুলতেই ভরণপোষণ দিতে না পারা মা শিমুর অনুমতি নিয়েই জিনিয়াকে নিয়ে যান। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অপব্যবহার করে নেটিজনরা বিচারের আগেই তাকে অপরাধী বানিয়ে দিয়েছে। ফেসবুক, ব্লগ, টুইটারে তাকে অপহরণকারী হিসেবে সাবস্ত করে ফেলেছে। নেটিজনদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপব্যবহার ও অসৎ প্রচারণায় হৃদয়বান নারী লুপার আকাশে কালোমেঘ দেখা দিয়েছে।
জানা যায়, লুপা থাকতেন পুরান ঢাকার টিকাটুলি এলাকার আশপাশে। সন্তানের মৃত্যুর পর চলে যান পটুয়াখালির নিজ গ্রামে। অতপর আবার ফিরে আসেন ঢাকায়। আদর স্নেহ দিয়ে মানুষ করার জন্য পথশিশুকে কোলে তুলে নিয়ে তাকে এখন অপহরণ মামলার আসামী হয়ে কারাগারে থাকতে হচ্ছে। কি দোষ লুপার? এখনো তো আইন শৃংখলা বাহিনী ঘটনার তদন্ত শেষ করেনি। তদন্তের পর বেড়িয়ে আসবে প্রকৃত চিত্র। তার আগেই একজন সন্তান পাগল নারীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এভাবে অপদস্ত হতে হবে কেন? পথশিশুদের প্রতি স্নেহের হাত বাড়িয়ে দেয়া কি দোষ? অবশ্য আইন শৃংখলা বাহিনীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। সুষ্ঠু তদন্তের পর প্রকৃত চিত্র বেরিয়ে আসবে। তাহলে নেটিজনদের এতো প্রচারণা কেন?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকা থেকে নিখোঁজের পর উদ্ধার ৯ বছরের শিশু জিনিয়াকে অপহরণের মামলায় নুর নাজমা আক্তার লোপা তালুকদারকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এরপর তাকে রিমান্ডে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। এ সময় লোপা দাবি করছেন জিনিয়াকে তিনি লালনপালন করে বড় করতে চেয়েছিলেন। তবে একটি কুচক্রিমহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে তাকে অপরাধী সাজিয়েছে; এমন দাবি লোপার পরিবারের। তবে তদন্ত শেষ না পর্যন্ত এটার আসল রহস্য উদঘাটন করা যাচ্ছেনা বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা।
জানা যায়, টিএসসি এলাকায় ফুল বিক্রি করত শিশু জিনিয়া। মা শিমু, ছোট বোন সিনথিয়া (৭) আর ভাই পলাশের (১৭) সঙ্গে জিনিয়া থাকত টিএসসি এলাকাতেই। টিএসসির বারান্দা তাদের রাতে শোয়ার জায়গা। তাদের দিন কাটত লাল প্লাস্টিকের বালতিতে করে গোলাপ আর বেলি ফুল বিক্রি করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকে শিক্ষার্থী, টিএসসি এলাকার চায়ের দোকানদার, ফুচকার দোকানদার আর ভ্রাম্যমাণ সিগারেট বিক্রেতাদের সবার কাছেই পরিচিত জিনিয়া। তাই জিনিয়াকে লালন পালনের উদ্যোগ নেন লোপা। পরবর্তীতে বিষয়টি তিনি জিনিয়ার মা শিমের কাছ থেকে অনুমতিও নেন। পরবর্তীতে লালনপালনের জন্যই গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে তাকে নিয়ে যান। নিয়ে নারায়ণগঞ্জে তার বোনের বাসায় রাখেন। কিন্তু এর মধ্যে কিছু কুচক্রীমহল জিনিয়ার মায়ের সাথে যোগাযোগ করে। মা শিমু অভাবী হওয়ার কারণে অন্যলোকদের কথায় শাহবাগ থানায় একটি ডায়রি করেন। পরবর্তীতে জিনিয়াকে পাওয়া গেলেও সাধারণ ডায়রিটি অপহরণ মামলায় রূপ নেয়। লোপাকে আদালতের মাধ্যমে নেওয়া হয় রিমান্ডে। এ সময়ও তিনি পুলিশের কাছে দাবি করেন শিমুর (জিনিয়ার মা) অনুমতিতেই লালনপালের জন্য জিনিয়াকে নিয়েছেন।
তবে একটি মহল সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লোপার ছবি দিয়ে নানা ধরণের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতে শুরু করে। তাই অতি উৎসাহীরা এর সুযোগ নেয়। পরবর্তীতে গণমাধ্যমেও লোপার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসল তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি রমনা জোনাল টিমের এসআই শাহজাহান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, কাউকে না বলে মেয়েটি নিয়ে যাওয়ার জন্য অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে মামলাটি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার যুগ্ম-কমিশনার মাহবুব আলম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, লোপা তাকে লালন পালনের নিয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে শিশুটির মায়ের দাবি তার কাছ থেকে না বলে জিনিয়াকে নিয়ে গেছে লোপা। তাই অপহরণ মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।