Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আক্রান্ত-মৃত্যু কমছে ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ ২৩৭২

দেশে করোনাভাইরাস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

খুশির খবর বটে! বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের টিকা আবিস্কারে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের হার কমতে শুরু করেছে। প্রতিদিন দেয়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শনাক্তের হার কম বলেই রোগী কমতে শুরু করেছে এটা ভাবার কারণ নেই। নমুনা পরীক্ষা কমেছে, তাই শনাক্ত কমছে। তবে এটা ঠিক বাংলাদেশের করোনার প্যাটার্ন অন্য দেশের সঙ্গে মিলছে না।

সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো ৩১ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন ও নারী ৬ জন। ৩১ জনের মধ্যে হাসপাতালে ২৮ জন ও বাড়িতে ৩ জনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চার হাজার ৭৩৩ জনে। করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৪টি পরীক্ষাগারে ১২ হাজার ৮৫০টি নমুনা সংগ্রহ হয়। পরীক্ষা হয়েছে ১২ হাজার ৯৯৯টি। এ সময়ে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন এক হাজার ৪৭৬ জন। ফলে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল তিন লাখ ৩৭ হাজার ৫২০ জনে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৩৭২ জন কোভিড-১৯ রোগী সুস্থ হয়েছে। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার ৬৪৩ জন।

গত ২১ জানুয়ারি দেশে করোনা শনাক্তে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী হিসেবে তিন জনের কথা রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানায় গত ৮ মার্চ। এরপর ১৮ মার্চ প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়। শুরু থেকেই করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের হার কম ছিল, তখন নমুনা পরীক্ষাও হতো কেবলমাত্র এই প্রতিষ্ঠানে। ধীরে ধীরে নানা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নমুনা পরীক্ষা করার অনুমতি দেয় সরকার। বর্তমানে দেশে ৯৪টি প্রতিষ্ঠানে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। তবে নানা কারণে কিছু কিছু পরীক্ষাগার বন্ধও থাকছে। এরসঙ্গে যোগ হয়েছে সরকার নির্ধারিত করোনা পরীক্ষার ফি, দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা, পরীক্ষা করাতে এবং পরীক্ষার ফলাফল পেতে ভোগান্তি। এসব কারণে করোনার নমুনা পরীক্ষার হার কমে এসেছে, সেই সঙ্গে কমেছে শনাক্তের হারও।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস বিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, গতকাল শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ। অথচ স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যে দেখা যায়, মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত রোগীর হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। সেই থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে ৩ আগস্ট সর্বোচ্চ আক্রান্তের হার ছিল শতকরা ৩১ দশমিক ৯১ শতাংশ। আগস্টের শেষ থেকে সংক্রমণের হার কমতে শুরু করে। এর মধ্যে গত ১১ মে শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক শূন্য আট শতাংশ। সে হিসেবে ১২ সেপ্টেম্বর ১২৪ দিন অর্থাৎ চার মাস পর শনাক্তের হার সবচেয়ে কম ছিল।

করোনা নিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে যে হারে রোগী শনাক্ত করা প্রয়োজন তা হচ্ছে না। অথচ দরকার ছিল রোগী শনাক্ত করে তাদের আইসোলেশনে রাখা, তাদের সংস্পর্শে আসাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা। এখন করোনায় আক্রান্তের হার নিম্ন দিকে বলে সন্তুষ্টির কোনও সুযোগ নেই। কারণ পরীক্ষা কম হওয়ার কারণে শনাক্তের হার কমেছে।

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরামর্শক ও রোগতত্ত্ববিদ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন ধরে রোগী শনাক্তের হার কিছুটা কম। এতে সংক্রমণ কম, এটা বলা যাবে না। কখনও হয়তো নানা কারণে সংক্রমণের হার কমতে পারে। কিন্তু যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে শনাক্তের হার পাঁচের নিচে নামতে সময় লাগবে।

করোনা বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, সংক্রমণের হার কমলেই সন্তুষ্টি নয়। প্রকৃত চিত্র বুঝতে হলে আরও সময় লাগবে। তবে শীতের সময় সংক্রমণ ফের বাড়বে বলে অনেকেই মত দিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ