Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুষ্টিয়া পৌর-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

নির্দেশনা অমান্য করে নিচ্ছেন ক্লাস!

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রির্পোটার : | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনা মহামারীর কারণে সরকারি নির্দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও কুষ্টিয়া পৌর-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, প্রতি ক্লাসের বাচ্চাদের সপ্তাহে একদিন করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পড়া এবং হাতের লেখা নেয়া হচ্ছে। তবে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক এ ধরণের ক্লাস বন্ধ করে দেয়ার কথা জানিয়েছেন।
গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় কুষ্টিয়া পৌর বাজারের পাশে পৌর-১ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় একে একে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আসছেন অভিভাবকরা। কেউ সাধারণ পোশাকে কেউ আবার বাচ্চা নিয়ে এসেছেন স্কুল ড্রেস পরিয়ে। বিদ্যালয়ের ফটক পেরিয়ে বসে আছেন এর দফতরী জাহাঙ্গীর। তিনি অভিভাবকদের বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন বাচ্চাদের স্কুল ড্রেস পরিয়ে যেন না আনা হয়। এতে নানা মানুষ প্রশ্ন করতে পারেন, স্কুল কী খুলে গেল। এদিন ক্লাস ওয়ানের শিক্ষার্থীদের এক ঘণ্টার (১০টা থেকে ১১টা) ক্লাস হওয়ার কথা। এজন্য বিদ্যালয়ের নিচতলায় একটি বেসিন বসানো হয়েছে। সেখান থেকে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে দোতলায় ক্লাসে যেতে দেখা যায় শিশুদের।
আর তাদের অভিভাবকরা বসে গল্প করছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনেই। কীভাবে ক্লাস হচ্ছে জানতে চাইলে দপ্তরী জাহাঙ্গীর বলেন, ম্যাডাম রেডিও এবং টেলিভিশনের ক্লাস শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে দেন।
টেলিফোনে কথা হয় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তহমিনা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে জুম মিটিং-এ সিনিয়র কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলেন। তাছাড়া টেলিভিশনে দেখেছি শিক্ষকরা পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে বাচ্চাদের জড়ো করে পড়াচ্ছেন। আমার বিদ্যালয় শহরের মধ্যে হওয়ায় বাচ্চাদের বাড়িতে গিয়ে জড়ো করে এভাবে পড়ানো সম্ভব নয়। তাছাড়া এ বিদ্যালয়ের শিক্ষাথীদের অভিভাবকরা অনেকেই খুবই দরিদ্র। তাদের পক্ষে স্মার্ট ফোনে ক্লাস করা সম্ভব নয়। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও এদের আগ্রহ পাওয়া যায়নি। এ কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে পিছিয়ে না পড়েন সেজন্য সপ্তাহে একদিন ১ ঘণ্টার ক্লাসের এ উদ্যোগ নিয়েছি। বাচ্চাদের হাতের লেখা এবং পড়া দেয়া হচ্ছে। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ক্লাসে আসছেন।
টেলিফোনে কথা হয়, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: তবিবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক হয়তো তার শিক্ষার্থীদের ভালোর কথা চিন্তা করেই এমনটি করেছেন। তবে, মহামারীর মধ্যে তার এ উদ্যোগের কোন দরকার নেই। তিনি এটা ঠিক করেননি। যদি এখান থেকে ভাইরাস সংক্রমণ হয় তার দায় কে নেবেন। তিনি বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত কোন স্কুলেই ক্লাস নিতে পারবেন না। এখনি ক্লাস বন্ধ করে দিচ্ছি- জাহিদুজ্জামানকে জানান তবিবুর। অল্প দিনের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত আসবে বলেও জানান শিক্ষা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এরইমধ্যে সিদ্ধান্ত হয়েছে-কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট খুলে যাচ্ছে। এখানে সপ্তাহে একদিন ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে সচেতন মহলের মধ্যেও এনিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সমাজকর্মী খলিলুর রহমান মজু বলেন, প্রধান শিক্ষক এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে ঠিক করেন নি। তবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ব্যাপারে একমত তিনি। এতে করে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যাপারে সচেতন করা সম্ভব হবে। যার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদী করোনা মোকাবেলাও সহজ হবে। কথা হয় শারমিন নামের একজন অভিভাবকের সঙ্গে। তিনি মনে করেন বাচ্চাদের ক্ষেত্রে নিয়ম মানা খুবই কঠিন। তাই প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত ক্ষতিকর হতে পারে। একযোগে অনেকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ