Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি

ভারত থেকে বেনাপোল-হিলি দিয়ে আসছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

টিসিবির খোলা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির ঘোষণা এবং বেনাপোল বন্দর ও হিলি বন্দর দিয়ে ভারতের পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক থাকলেও বাজারে এখনো দাম উর্ধ্বমুখী। ভারত থেকে প্রতিদিন পেঁয়াজ আমদানি হলেও রাজধানীসহ দেশের বাজারে মূল্য বাড়ছেই। গতকাল রাজধানীর বাজারে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। টিসিবির ৩০ টাকা কেজি দরে খোলাবাজারে পেঁয়াজ বিক্রির ঘোষণা দিলেও গতকাল টিকাটুলি, মতিঝিল ও আশপাশে কোথাও পেঁয়াজের ট্র্যাক দেখা যায়নি।

কাস্টমস স‚ত্রে, গত ১ সেপ্টেম্বার থেকে গতকাল পর্যন্ত ভারত থেকে মোট ৬ শ’ ৫০ মে:টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। ভারত থেকে প্রতিদিন গড়ে ৫০ মে:টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয় শুধু বেনাপোল বন্দর দিয়ে। পেঁয়াজের আমদানিকারকরা হলো সোনালী ট্রেড লিমিটেড, হামিদ এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স আল্লাহর দান ফ্রুটস লিমিটেড। প্রতি টন আমদানি কৃত পেঁয়াজের শুল্কায়ন মূল্য ৩০০ মার্কিন ডলার। সেই হিসেবে আমদানিকারকদের প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা পড়ে ২৫ টাকা। বাংলাদেশী আমদানিকারকরা ভারতের নাসিক শহর থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে থাকেন। গত ১৩ দিনে ছয় শ’ ৫০ টন পেঁয়াজ আমদানি হলেও বাজার ঘুরে দেখা গেছে দাম অনেক বেশি। আড়তে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৫৫ টাকা। খুচরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা ও ৬৫ টাকা।

পেঁয়াজ আমদানিকারক এম এস আলম বলেন, আমরা ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার পর সীমিত লাভে সেগুলো বিক্রি করে থাকি। প্রতিটি বাজারে আড়তদারদের মধ্যে একটা সিন্ডিকেট কাজ করে। এরাই মূলত বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়। বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকলেও এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা বাজারে পেঁয়াজ সঙ্কট দেখিয়ে ম‚ল্য উর্ধ্বগতি করে রাখে। এছাড়াও আরো চক্র আছে বাজার অস্থিতিশীল করতে কাজ করছে।

বেনাপোল ও শার্শা বাজারের আড়তদাররা জানান, বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি অনেক কম। বেনাপোল ও সাতক্ষীরা বন্দর দিয়ে যে পেঁয়াজগুলো আমদানি হয়ে থাকে, সেগুলো সরাসরি ঢাকা ও চট্টগ্রামে চলে যায়। এসব পেঁয়াজ আমাদের ঢাকা থেকেই কিনে আনতে হয়। খরচ পড়ে অনেক বেশি। যেদিন যেভাবে পেঁয়াজ কেনা হয়, তার চেয়ে এক টাকা বা দুই টাকা লাভে আমরা বিক্রি করে থাকি।
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়েও পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। হিলি বন্দরের আমদানিকারক মোবারক হোসেন জানান, গত বুধবার পর্যন্ত ভারত থেকে প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজ আগের মূল্যে অর্থাৎ ১৫০-২৫০ মার্কিন ডলারে আমদানি করা হচ্ছিল। তখন সেই পেঁয়াজ বন্দরের মোকামে ৩৫-৩৬ টাকায় পাইকারি বিক্রি হয়। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা মূল্য বাড়িয়ে ৩০০-৪২০ ডলার নির্ধারণ করায় বর্তমানে আমদানি করা পেঁয়াজ ৩৭-৩৮ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, ভারতে বন্যার কারণে পেঁয়াজের সংকটের কথা বলে সেখানকার ব্যবসায়ীরা মূল্য বাড়িয়েছেন। তবে পেঁয়াজ আমদানিতে সরকার ৫ শতাংশ শুল্কহার প্রত্যাহার করে নিলে মূল্য কমে যাবে। ভারতের হিলি স্থলবন্দরের রফতানিকারক সনু মজুমদার বলেন, ভারতের পেঁয়াজ উৎপাদন অঞ্চলগুলোতে বন্যায় পেঁয়াজের ফলনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে ব্যাঙ্গালুরুতে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আগামী দুই মাস পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তখন আবার নতুন পেঁয়াজ উঠলে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। ফলে বাংলাদেশে বেশি পরিমাণে রফতানি করা যাবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েকদিন আগেও রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি। হঠাৎ করে বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এক লাফে ভারতীয় পেঁয়াজ ২০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা এবং দেশীয় পেঁয়াজ ২৫ টাকা থেকে খুচরা বাজারের ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এভাবে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মত মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য পেঁয়াজ কিনে খাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পেঁয়াজ

১৩ এপ্রিল, ২০২২
১৬ জানুয়ারি, ২০২২
৮ মার্চ, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ