Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঝুঁকিপূর্ণ শুঁটকিপল্লী ছেড়ে স্কুলে যেতে চায় শিশু শহীদুল

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:০৫ পিএম

ঝুঁকিপূর্ণ শুঁটকিপল্লী ছেড়ে পড়ালেখার জন্য স্কুলে যেতে চায় এতিম শিশু শহীদুল ইসলাম। তবে তার পড়ালেখার খরচ কিভাবে জোগাড় করবে তা জানেনা শহিদুলের মা সাফিয়া আক্তার।

শিশু শহীদুল ইসলাম (১১) পিতা - মৃত শফিকুর রহমান, মাতা - সাফিয়া আকতার। ১নং ওয়ার্ড, ককসবাজার পৌরসভা। সমিতি পাড়া দারুল কুতুব একাডেমির ছাত্র। তার পিতা মারা যাবার পর মায়ের সাথে সংসারের ঘানি টানতে শুঁটকি খলায় কাজ করতে গিয়ে অনিশ্চত হয়ে পড়ে তার পড়ালেখা ও স্কুলে যাওয়া।

নাজিরারটেক শুটকি মহালে যখন যে শুটকির খলায় কাজ পায় স্কুলের
ফাঁকে ফাঁকে কাজ করত শহিদুল। পাশাপাশি পড়া লেখাও চালিয়ে যেত। কিন্তু বাবা মারা যাওয়ার পর মায়ের সাথে সংসারের ঘানি টানতে হয় ৫ ভাই বোনদের মাঝে ৪র্থ শহিদুলকেও। এতে বন্ধ হয়ে যায় শহিদুলের
স্কুলে যাওয়া।
গতকাল এই প্রতিবেদকের কথা হয় শহিদুলের মা শাফিয়া আক্তার ও শহিদুলের সাথে। তিনি জানান, শহিদুলের বাবা শফিকুর রহমান জীবিত থাকতে ৫ ছেলে মেয়ে নিয়ে ভালই ছিল তাদের পরিবার। তখন শহিদুল স্কুলের ফাঁকে শুঁটকি খলায় কাজ করে কিছু টাকাও পেত। কিন্তু তার স্বামী মারা যাওয়ার পর সংসারে ঘানি টানতে গিয়ে স্কুল ছেড়ে তার সাথে কাজে যোগ দিতে হয় শহিদুলকে। এখন একে তো দীর্ঘ করোনাকালীন লকডাউন এবং চলতি বর্ষায় তিনি নিজেও বেকার শুঁটকি খলায় শহিদুলেরও কাজ নেই।

তিনি জানান, ইতোমধ্যে কিছু সাংবাদিক ও এনজিও কর্মীর পরামর্শে তিনি শহিদুলকে আবার স্কুলে পাঠাতে চান। শহিদুল ও স্কুলে যেতে রাজি।
কিন্তু তিনি জানেন না সংসারের টানাপোড়নের সাথে শহিদুলের পড়ালেখার খরচ কিভাবে যোগাবেন।

দেশের ৩৮ টি খাত শিশু স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত হলেও এর মধ্যে নেই শিশু স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কক্সবাজার শহরতলীর বিশ্বের বৃহত্তম শুঁটকি পল্লী খ্যাত 'নাজিরারটেক' শুঁটকি পল্লী। সূত্রমতে
কক্সবাজারের নাজিরারটেক শুঁটকি পল্লীতে সহস্রাধিক শুঁটকি মহাল বা খলায় ১৩ হাজার ৫২৪ জন শিশু শ্রমিক অত্যন্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে কাজ করে থাকে। এসব শিশুরা একদিকে শিক্ষা বঞ্চিত অপর দিকে রয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।

তথ্যমতে ২০১০ সালে শুঁটকি মহালের সংখ্যা ছিল ৮৭২ টি। সাগরে মাছ কম পাওয়াসহ নানা কারণে খলা বা মহালের সংখা কমে এখন হয়েছে ৫৬১টি। ২০১০ সালের তথ্য মতে এসব শুঁটকি খলায় তখন শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার৩৬২। তা এখন হয়েছে ১৩ হাজার ৫২৪।

জানা গেছে, মার্কিন শ্রমসংস্থা আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক ব্যূরো এর সাথে উইনরক ইন্টারন্যাশনাল এর ক্লাইম্ব প্রকল্প বাংলাদশে শুঁটকী মাছ প্রক্রয়িাজাতকরণে শশিুশ্রম নিরসন এবং উপযুক্ত কাজের পরবিশে উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও বেসরকারী সংগঠনসমূহকে আরও সক্রিয় এবং শিশুশ্রম কমিয়ে আনার জন্য সরকারের চলমান প্রচেষ্টায় অবদান রাখতে কমউিনকিশেন র্পাটনার হিসেবে কাজ করছে বিসিসিপি। তার স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা চায় এতিম শিশু শহিদুল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ