পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তিস্তার পানি চুক্তি যুগের পর যুগ ঝুলে থাকলেও দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে ফেনী নদীর পানি ভারতকে দেয়া হয়েছে। চুক্তির আগে থেকেই ভারত ফেনী নদীতে ৩৪টি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাম্প বসিয়ে পানি নিয়ে যাচ্ছে। দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী ভারত শুষ্ক মৌসুমে ফেনী নদী থেকে প্রতি সেকেন্ডে ১.৮২ ঘনফুট (কিউসেক) পানি উত্তোলন করে। বর্ষাকাল হওয়ায় এখন পাম্প বন্ধ। কিন্তু ফেনী নদীর অব্যাহত ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে- রাস্তা, ফসলি জমি ও মাছের ঘের। অন্যদিকে ভারতের অংশে নদীপাড় হচ্ছে ভরাট। ভাঙন অব্যাহত থাকলে চট্টগ্রামের মিরসরাই অংশে ভাঙনের কবলে পড়তে পারে এশিয়ার সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিল্পনগরের সংযোগ বেড়িবাঁধ, সড়ক ও বৈদ্যুতিক লাইন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদীর ধর্ম এক‚ল ভাঙলে অন্যক‚ল গড়ে। এখন বন্যার কারণে দেখা না গেলেও ফেনী নদীর ভারতীয় পাড় ভরাট হচ্ছে। পানি কমে গেলে দেখা যাবে নদীর ভাঙনে ফেনী জেলার সংকুচিত হয়ে গেছে।
নদী পাড়ের মানুষ জানান, মূলত ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কারণে ফেনী নদী ভাঙছে। ভাঙনে বাংলাদেশ অংশে নদী প্রবেশ করলেও ভারতের পার্শ্বে ভরাট হচ্ছে। বন্যার পর ফেনী নদীর ভারতীয় এলাকার মানচিত্রে ভ‚মি বাড়লেও বাংলাদেশ অংশ কমবে। পাল্টে যাবে মানচিত্র। নদী ভাঙনের কথা স্বীকার করে মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমি ঘটনাস্থানে গিয়ে দেখেছি নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। নদী শাসন থেকে প্রধানত নদীর মূল স্রোতটি ডাইভারশান করে কেটে দিলেই রক্ষা সম্ভব সবকিছু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে বাংলাদেশ অংশের জগন্নাথ সোনাপুর, মহুরি, ধুমঘাট ব্রিজ, অলি নগরের পশ্চিমাঞ্চল, মিরেরসরাইয়ের লাঙ্গলমোড়া, জয়পুরের পশ্চিম সাইড, গোপাল গ্রাম, ধুপঘাট ব্রিজ, শুভপুরসহ বিস্তীর্ণ এলাকা ভাঙনের কবলে পড়েছে। এছাড়াও ফেনীর সোনাগাজী ও চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাইয়ের সর্ব উত্তর-পশ্চিম জনপদ দৃষ্টিনন্দন মুহুরি প্রকল্প এলাকার সেচ প্রকল্প নিকটবর্তী ফেনী নদীর ভাঙনে ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। এতে শত শত মৎস্য খামারির মাছের খামার, পাউবো নির্মিত কয়েকটি রাস্তা ও কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আর শত ফুট ভাঙলেই অবশিষ্ট মাছের খামারসহ মুহুরি প্রকল্প টু অর্থনৈতিক জোন বিকল্প সড়ক এবং বৈদ্যুতিক লাইনসহ তলিয়ে যাবে। স্থানীয়রা জানান, ক্ষমসীন দল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রভাবশালী নেতারা মূলত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে। এলাকায় তারা প্রভাবশালী এবং প্রশাসন তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় বিপন্ন মানুষ প্রতিবাদ দূরের কথা প্রকৃত চিত্র সাংবাদিকদের জানাতে ভয় পায়। আবার স্থানীয় পর্যায়ের সাংবাদিক কেউ প্রভাবশালীদের কাছে অবৈধ সুবিধা নিচ্ছেন, কেউ ভয়ে এ সব নিয়ে লিখতে ভয় পাচ্ছেন।
বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের মাটিরাঙা ও পানছড়ি উপজেলা মধ্যবর্তী ভগবানটিলা পাহাড়ে উৎপত্তি ফেনী নদী দুই দেশের সীমান্তে প্রায় ৭০ কিলোমিটার। নদীপ্রবাহ বাংলাদেশ সীমান্ত পার হয়ে ভারতের ত্রিপুরার ইজেরা গ্রাম হয়ে ফেনী নদী নাম ধারণ করে। এরপর দুই দেশের সীমানাকে বিভক্ত করে অনেকটা অগ্রসর হওয়ার পর নদীটি চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাইর আমলীঘাট হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ফেনীর ছাগলনাইয়া, মিরসরাই সোনাগাজী দিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। খাগড়াছড়ির রামগড় ও ভারতের দক্ষিণ ত্রিপুরার সাবরুম পাশাপাশি এলাকা। দ্বিপাক্ষিক চুক্তির পর ওই এলাকায় নদীর প্রবাহ থেকে ৩০-৩৫ গজ দূরে পাম্প হাউস স্থাপন করে নদী থেকে পানি নিয়ে যায় ভারত। দক্ষিণ ত্রিপুরার অমরপুরের শিলাছড়ি থেকে সাবরুমের আমলীঘাট পর্যন্ত পাম্প হাউসগুলো স্থাপন হয়েছে। সেগুলোকে বেশিরভাগ বাংলাদেশের রামগড়ের সীমান্তবর্তী লাচারিপাড়া থেকে মিরসরাইয়ের অলিনগরের বিপরীত দিকে অবস্থিত। শুষ্ক মৌসুমে পানি নিয়ে যাচ্ছে ভারত। এতে বাংলাদেশের ফেনী, রামগড় ও মিরসরাইয়ের সীমান্তবর্তী এলাকার হাজার হাজার একর জমিতে পানির অভাবে চাষাবাদে ব্যাঘাত ঘটে। পানির অভাবে হুমকির মুখে পড়ছে ফেনীর মুহুরি প্রজেক্ট। শুষ্ক মৌসুমে পানি নিয়ে যাওয়ায় ধু-ধু চরে পরিণত হচ্ছে ফেনী নদী। এর মধ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে নদীতে বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও অসংখ্য স্থাপনা। নদীগর্ভে সম্পদ হারানো স্থানীয় মৎস্য চাষি মো. নিজাম উদ্দিন জানান, গত এক বছরেই তার ২টি মাছের ঘের, মো. হানিফের ৩টি, সোহেল আহমদের ২টি, ইমামুল কবিরের ৬টিসহ অনেক মানুষের মাছের খামার নদীগর্ভে চলে গেছে। নদীতে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, এখন বর্ষার পানি থাকায় এক‚ল (বাংলাদেশ অংশ) ভাঙছে; অথচ ওক‚ল (ভারতীয় অংশ) গড়তে বোঝা যাচ্ছে না। পানি কমে গেলেই পরিষ্কার হবে নদী বাংলাদেশের ভেতরে চলে আসায় ভারতের মানচিত্রে ভ‚মি বেড়ে গেছে। সোনাগাজী এলাকার মৎস্য চাষি মো. লিটন জানান, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে ধর্ণা দিয়েও কিছুই হচ্ছে না। তাই হতাশা আর উদ্বিগ্নতায় দিনাতিপাত করছি। আবার কেউ কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করলেও প্রশাসন রহস্যজনক নীরবতা পালন করছে।
এ বিষয়ে পাউবোর চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দীক বলেন, ভাঙন স্থান পরিদর্শনে শিগগিরই একটি টিম পাঠানো হবে এবং কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।