Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

৮৫ শতাংশের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত

করোনায় পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে সমীক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংকটে সর্বোত্রই স্বাভাবিক কর্মকান্ডের বিঘ্ন ঘটেছে। করোনার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে তৈরি পোশাক সেক্টরে। করোনায় দেশের অন্তত ৮২ শতাংশ পোশাক শ্রমিকের জীবিকার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। গতকাল সোমবার প্রকাশিত এক সমীক্ষায় এ চিত্র তুলে ধরা হয়। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও মাইক্রো ফাইন্যান্স অপরচুনিটিজ (এমএফও) যৌথভাবে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ওপর এ সমীক্ষা পরিচালনা করেছে।
চলমান কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব সম্পর্কে জরিপে অংশ নেয়া শ্রমিকদের জিজ্ঞেস করা হলে তাদের মধ্যে মাত্র ১৮ শতাংশ জানিয়েছেন যে, কোভিড-১৯ সংকট তাদের জীবিকার ওপর কোনো প্রভাব ফেলেনি। অন্যদিকে বাকিরা সবাই বলেছেন কিছুটা হলেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
গত ১৫ সপ্তাহ ধরে দেশের পোশাক শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকার ওপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব মূল্যায়ন করতে সানেম এবং এমএফও এক হাজার ৩৬৭ শ্রমিকের ওপর ধারাবাহিকভাবে জরিপ চালিয়েছে। এ সিরিজ জরিপে প্রতি সপ্তাহে নতুন প্রশ্ন যোগ করা হয়। সর্বশেষ এ জরিপে এক হাজার ২৬৯ শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন।
জরিপে অংশ নেয়া শ্রমিকরা চট্টগ্রাম, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের বিভিন্ন গার্মেন্টস কারখানায় কর্মরত রয়েছেন। এদের মধ্যে তিন-চতুর্থাংশ নারী যা পুরো পোশাক খাতের লিঙ্গ বণ্টনের প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র। সর্বশেষ জরিপে শ্রমিকদের আয়, আয়ের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ এবং আয়ের ওপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব নিয়ে তথ্য উঠে এসেছে বলে সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়।
জরিপে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকদের মধ্যে ৮৯ শতাংশ অন্তত একবার হলেও অভিবাসনের কথা জানিয়েছেন। এদের মধ্যে ৯১ শতাংশ নারী ও ৮৩ শতাংশ পুরুষ। ৮১ শতাংশ শ্রমিক জানিয়েছেন যে, তারা চাকরির জন্য অভিবাসন করেছেন। আবার চাকরির জন্য অভিবাসীদের ৬৪ শতাংশ জানিয়েছেন যে তারা একবারই অভিবাসন করেছেন। জরিপে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকদের ওপর কোভিড-১৯ সংকটের প্রভাব নিয়ে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৫১ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন যে মহামারির আগে তারা পরিবারের কাছে নিয়মিত টাকা পাঠাতেন। নারীদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ ও পুরুষদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ একই কথা জানিয়েছেন।
কোভিড-১৯ এর আগে যারা পরিবারের কাছে প্রতিমাসে টাকা পাঠাতেন তাদের মধ্যে ৫৮ শতাংশ নিয়মিত টাকা পাঠাতেন। আর ৩৩ শতাংশ মাঝেমধ্যে এবং ৯ শতাংশ কদাচিৎ টাকা পাঠাতেন। করোনা সংকটের আগে যে ৫১ শতাংশ শ্রমিক পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতেন তাদের মধ্যে ১৮ শতাংশ এখন আর পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে পারেন না।
এছাড়া ৫৮ শতাংশ জানান, এখন পরিবারের কাছে আগের চেয়ে কম টাকা বা আগে যতবার পাঠাতেন তার চেয়ে কমবার পাঠান। তবে ২২ শতাংশ জানিয়েছেন কোভিড-১৯ এর কারণে তাদের পরিবারের কাছে পাঠানো অর্থের পরিমাণের ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি।
সানেম এবং এমএফও’র যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এ জরিপগুলো ‘গার্মেন্ট ওয়ার্কার ডায়েরিজ’ শীর্ষক প্রকল্পের অংশ। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বৈশ্বিক পোশাক সরবরাহ ও উৎপাদক দেশগুলোতে নিয়োজিত শ্রমিকদের শ্রমঘণ্টা, আয়, ব্যয় এবং অন্যান্য আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে নিয়মিত, নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে সরকারী নীতি, শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া আদায় এবং কারখানা ও ব্র্যান্ডের মাধ্যমে পোশাক শ্রমিকদের জীবনমান উন্নত করা।
আন্তর্জাতিক সংস্থা মাইক্রোফাইন্যান্স অপরচুনিটিজের উদ্যোগে বাংলাদেশ, ভারত ও কম্বোডিয়ার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে ২০১৬ সালে এ প্রকল্প শুরু হয়। ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচটি উৎপাদক দেশের শ্রমিকদের ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সেগুলো প্রকাশ করাই এ প্রকল্পের লক্ষ্য। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ