Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মধুমতিতে ভয়াবহ ভাঙন

নদীগর্ভে বিলীনের পথে প্রাথমিক বিদ্যালয়

আবদুস ছালাম খান, লোহাগড়া (নড়াইল) থেকে | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নে মধুমতি নদীতে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে পাংখারচর-চরসুচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি যে কোন সময়ে নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে। বিদ্যালয় ভবন ছাড়াও সংলগ্ন পাংখারচর, চরসুচাইল ও চরপরাণপুর গ্রামের শতাধিক পরিবার নদী ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। এ এলাকার বেশির ভাগ মানুষ কৃষিজীবী। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নদীর ভাঙনে তিনটি গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর, হাজারো গাছপালা ও কৃষি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। নদীর ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পি-চরসুচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে স্কুলের এক একর ১০ শতক মাঠ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর এপারে নড়াইল ওপারে গোপালগঞ্জ জেলা। খরস্রোতা মধুমতি নদীটি রাতারাতি গতি পরিবর্তন করে ফেলায় এই ৩ গ্রামের মধ্যে বিশাল বাওড়ের সৃষ্টি হয়। তবে এই বাওড়ে মূল মধুমতি নদী থেকে আসা নিয়মিত জোয়ার-ভাটায় তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়। এই জোয়ার-ভাটার স্রোতে এখানে কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে পাংখারচর-চরসুচাইল প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ভাঙনের তীব্রতা বেশি। ভাঙন কবলিত এলাকায় কথা হয় চরসুচাইল গ্রামের বাসিন্দা কল্লোল ফকিরের সাথে।
তিনি জানান, মধুমতি নদীর মূলস্রোত অন্যত্র দিয়ে প্রবাহিত হলেও নদী ভাঙনের কষ্ট আমাদের ছাড়ে নাই। বাওড়ের তীরবর্তী তিন গ্রামের মানুষ এখনও নদী ভাঙনে সহায় সম্বল হারাচ্ছে। আমাদের তিন গ্রামের একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি যে কোন সময়ে নদীতে বিলীন হতে পারে। অনেকে বাড়িঘর, কৃষি জমি, গাছপালাসহ সহায়-সম্বল হারিয়েছেন। ভাঙনরোধে দ্রুত কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহন না করলে আরো অনেককেই বাড়িঘর হারিয়ে পথে বসতে হবে।
চরসুচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুন্সী কামরুজ্জামান বলেন, ১০ বছর আগে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। প্রথম দিকে দুই শতাধিক ছাত্রছাত্রী থাকলেও নদী ভাঙন আতঙ্কে অনেক শিক্ষার্থী স্কুল ছেড়ে চলে গেছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১১০জন। স্কুল মাঠটিও এক বছর আগে নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন টিনশেডের পাকাঘরটির কাছেই ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন থেকে মাত্র ১০ ফুট দূরে আছে স্কুল ঘরটি, ঝুঁকির মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হয়। আমাদের দাবি, নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফি বিন মর্তুজা যেন স্কুলটি রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেন। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড নড়াইলের কর্মকর্তারা জানান, চরসুচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ এ এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে গত বছর একটি প্রকল্প দাখিল করা হলে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। যা দিয়ে ১৭০ মিটার কাজ বাস্তবায়ন সম্ভব হলেও ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হয় না। তাই পরবর্তীতে মধুমতি নদীর অতি ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পের আওতায় একটি প্রকল্প দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পটি পাশ হলে এখানে ৬০০ মিটার নদীতীর সংরক্ষণ কাজ বাস্তবায়ন করা যাবে। আশা করছি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রকল্পটি অনুমোদন হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ