Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দেশে করোনার ৫ ধরনের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব রয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ বলছে, বিশ্বে এই প্রথম পাঁচ ধরনের স্বতন্ত্র করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সেটি একমাত্র বাংলাদেশ ছাড়া আর কোনো দেশে পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের (সার্স-কোভ-২) সংক্রমণ, মিউটেশনের হার, জিনগত বৈশিষ্ট্য, নন-সিনোনিমাস মিউটেশন এবং জেনোমিক ফাইলোজেনি পর্যবেক্ষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

গতকাল রোববার বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) মিলনায়তনে বিসিএসআইআর জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির কোভিড-১৯ এর জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রতিবেদন অবহিতকরণ সভায় বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আফতাব আলী শেখ ওই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, কোভিড-১৯ জিনগত বৈচিত্র পর্যবেক্ষণ করার জন্য সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের সর্বমোট ২৬৩টি জিনোম সিকোয়েন্সিং ও ডাটা বিশ্লেষণ করা হয়। এই নমুনা গত ৭ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুনাগুলোর জিনোম সিকোয়েন্সিং করে আন্তর্জাতিক ডাটাবেজ প্রকাশ করা হয়। সভায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানসহ বিসিএসআইআর জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সংগৃহীত নমুনায় শতভাগ ক্ষেত্রে আধিপত্যকারী ভ্যারিয়েন্টের এ ৪১৪ (স্পাইক রুটিনে ৬১৪তম অবস্থানে অ্যাসপার্টিক গ্লাইসিন হওয়ার কারণ) উপস্থিতি পাওয়া যায়। প্রাপ্ত ২৬৩টি সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের মধ্যে ২৪৩টি এজ ক্লেড, ১৬টি এ ক্লেড এবং ১টি ঙ ক্লেডের অন্তর্ভুক্ত।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়, ২৬৩টি সার্স-কোভ-২ জিনোম বিশ্লেষণ করে জানা যায় যে সর্বমোট ৭৩৭টি পয়েন্টে মিউটেশন হয়। যার মধ্যে ৩৫৮টি নন সিনোনিমাস অ্যামিনো এসিড প্রতিস্থাপন ঘটায়। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত ২৬৩টি সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের মিউটেশনের হার বার্ষিক ২৪ দশমিক ৬৪ নিউক্লিওটাইড। সারাবিশ্বে নমুনা প্রতি মিউটেশন হার ৭ দশমিক ২৩। যা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ১২ দশমিক ৬০ লক্ষ্য করা যায়।

সভায় বলা হয়, অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটি অনেক দ্রুত গতিতে এর রূপ পরিবর্তন করছে। স্পাইক প্রোটিনের জিনে ১০৩টি নিউক্লিওটাইড নিউটেশনের মধ্যে ৫৩টি নন সিনোনিমাস এমোনিয়া বেশি প্রতিস্থাপন ঘটে, যার মধ্যে পাঁচটি স্বতন্ত্র। যা বিশ্বের আর কোথাও পাওয়া যায়নি। সংগৃহীত নমুনা সময়ের মধ্যে ১০০ ভাগ ক্ষেত্রে চারটি নিউটেশনের পুনরাবৃত্তি লক্ষ্য করা যায়।

বিসিএসআইআররের চেয়ারম্যান বলেন, চলমান বৈশ্বিক কোভিড-১৯ মহামারিতে সারাবিশ্বের বিজ্ঞানীরা সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের উৎস, গতি প্রকৃতি ও বিস্তার নির্ণয়ের পাশাপাশি এ ভাইরাসের ওষুধ ও ভ্যাকসিনের ওপর গবেষণা করছেন। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশেও সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করার প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। জিনোম সিকোয়েন্সিং ল্যাবরেটরি বাংলাদেশের আটটি বিভাগের সর্বমোট ৩০০টি-ভাইরাস পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্সিং করার প্রকল্প গ্রহণ করেন।

গবেষণালব্ধ ফল রিসার্চ পেপার আকারে আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হবে। একই সঙ্গে চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের প্রায় ৫০টি কোভিড-১৯ টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানকে এ প্রতিবেদন পাঠানো হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ