পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী। গতকাল শনিবার রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। এর আগে গত ৩০ আগস্ট তাকে সিএমএইচ-এ ভর্তি করা হয়।
আবু ওসমান চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধকালে ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন এবং এসসিএফ’র সহসভাপতি ছিলেন। গতকাল বাদ আসর সেনানিবাসে সেনাকুঞ্জের পাশে সেন্ট্রাল মসজিদে জানাজার পর তাকে বনানী সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আবু ওসমান চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া আরও শোক প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সংসদের বিরোধী দলের নেতা বেগম রওশন এরশাদ প্রমূখ।
আবু ওসমান চৌধুরী ১৯৩৬ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার মদনেরগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে বিএ পাস করার পর ১৯৫৮ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন পান। ১৯৬৮ সালের এপ্রিল মাসে তিনি পদোন্নতি পেয়ে মেজর হন। ১৯৬০ সালে কুমিল্লার মৌলভী পাড়ার মনসুর আহম্মেদের বড় মেয়ে নাজিয়া খানমের সঙ্গে আবু ওসমানের বিয়ে হয়। নাসিমা ওসমান ও ফাওজিয়া ওসমান তাদের দুই মেয়ে।
একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে যখন ঢাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বর হত্যাযজ্ঞ অপারেশন সার্চ লাইট শুরু হয়, সেই খবর আবু ওসমান খবর পান কুষ্টিয়া সার্কিট হাউজে বসে। সে সময় তিনি ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের চতুর্থ উইংয়ের কমান্ডার হিসেবে চুয়াডাঙ্গার দায়িত্বে। ২৬ মার্চ তিনি কুষ্টিয়া থেকে চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছান এবং বিদ্রোহ ঘোষণা করে একদল সৈনিককে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। পরে তাকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় অস্থায়ী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হলে আবু ওসমান চৌধুরী এক প্লাটুন সৈন্য নিয়ে মন্ত্রিপরিষদকে গার্ড অব অনার দেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবু ওসমান চৌধুরীকে লেফটেনেন্ট কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু তাকে আর্মি সার্ভিস কোরের (এএসসি) পরিচালকের দায়িত্ব দেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সেনা অভ্যুত্থানের সময় একদল সেনসদস্য আবু ওসমান চৌধুরীকে হত্যার জন্য তার গুলশানের বাড়িতে হামলা করে। বাড়িতে না থাকায় তিনি সেদিন প্রাণে বেঁচে গেলেও নিহত হন তার স্ত্রী নাজিয়া খানম। পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্ম‚ল কমিটি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে আবু ওসমান চৌধুরীকে বিজেএমসির চেয়ারম্যান করা হয়। পরে তাকে চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। স্বাধীনতাযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১৪ সালে তিনি স্বাধীনতা পদক পান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।