পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বছর না ঘুরতেই আবার আলোচনায় সেই পেঁয়াজ। পেঁয়াজ সঙ্কটের ধকল কাটতে না কাটতেই আবারও পেঁয়াজ নিয়ে কারসাজি শুরু হয়েছে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ানো হচ্ছে রন্ধনশালার অতি প্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম। রাজধানীর বাজারগুলোতে যে যেভাবে পারছেন পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। গত দুই দিনে রাজধানী ঢাকার এলাকাভেদে পেঁয়াজে দাম কেজিপ্রতি ৯ টাকা থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছেন।
হঠাৎ করে ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়। এতে দেশের বাজারে দফায় দফায় বাড়তে থাকে দাম। প্রতিদিন এলাকাভেদে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বাড়ে ৫০-৬০ টাকা। এভাবে দাম বাড়তে বাড়তে প্রতিকেজি পেঁয়াজের মূল্য ২৬০ টাকা পর্যন্ত ওঠে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশের বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালিয়ে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের জরিমানা করে। সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তান, চীন, মিশর, মিয়ানমার, ভিয়েতনামসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানির সুযোগ করে দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। সে সময় বিমানে যাত্রীর বদলে পেঁয়াজ আনা হয়।
গতকাল শনির আখড়ার বাজারগুলোতে বিভিন্ন দোকানে দেখা যায় দেশি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে খোঁজ নিতে যাত্রাবাড়ির আড়তে যোগাযোগ করে জানা যায়, বৃহস্পতিবারও প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৪২ থেকে ৪৩ টাকা। আর সন্ধ্যায় তা বেড়ে হয়েছে ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা। এক সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩২ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুন। আবার ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজির দাম ছিল ৩২ থেকে ৩৩ টাকা। তা বিক্রি হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে এ পেঁয়াজের কেজি ২০ টাকার নিচে বিক্রি হয়েছে।
পেঁয়াজ উৎপাদনকারী, আমদানিকারক, পাইকার ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে পেঁয়াজের কোনো সঙ্কট নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশি জাতের পেঁয়াজ বিভিন্ন স্থানে মজুত রয়েছে। অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ীর কাছেও পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। ভারত থেকে আমদানি কমে যাওয়া এবং সেখানে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ নিচ্ছেন দেশের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের নজরদারি না থাকায় আমদানি কম অজুহাতে তারা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাব অনুযায়ী, এক মাস আগে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। গত বৃহস্পতিবার তা বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৬০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে কেজিপ্রতি শতকরা দাম বেড়েছে ১৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর এক মাস আগে প্রতিকেজি বিদেশি পেঁঁয়াজের দাম ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়।
হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে আমদানিকারকদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সি-বার্ড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী রতন সাহা বলেন, ভারতের উত্তর প্রদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি কম হচ্ছে। সেখানেই কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে সাত থেকে আট টাকা। বর্তমানে পেঁয়াজের বুকিং রয়েছে ২৫০ থেকে ২৬০ ডলার। ভারত থেকে ট্রাকে করে সীমান্তে পৌঁছানো, সীমান্ত থেকে গন্তব্যে পৌঁছানো কাস্টমস ডিউটি ও অন্যান্য খরচ হিসাব করলে কেজিপ্রতি ব্যয় হয় ১০ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত।
তবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেঁয়াজের সঙ্কট নেই। পাবনা, নওগাঁ, রংপুর, বগুড়া, ফরিদপুর, যশোরের কৃষকরা জানান, গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় অনেকেই পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। মূলত সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা আমদানি বন্ধের অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ভারতে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে সেখানে দাম বেড়েছে, যার প্রভাব দেশের বাজারে পড়েছে। এ বিষয়টি তারা নিয়মিত তদারকি করছেন। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রশাসন তদারকি চালাচ্ছে। তবে পেঁয়াজের দাম গত বছরের মতো হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, করোনার কারণে সব শ্রেণি পেশার মানুষের আয় কমে গেছে। অথচ এখন বিভিন্ন পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় মানুষের কষ্ট বেড়ে যাচ্ছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যাতে বাড়ে সেদিকে সরকারের নজর দেয়া উচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।