Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ-ত্রিপুরা নৌপথে পণ্য পরিবহন শুরু

আজ যাচ্ছে প্রথম চালান

কামাল আতাতুর্ক মিসেল | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

অবশেষে নদীপথে বাংলাদেশ থেকে পণ্য যাচ্ছে ত্রিপুরায়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ ত্রিপুরায় পরীক্ষামূলক পণ্য রফতানির অনুমতি দিয়েছেন। ফলে আজ থেকে সমুদ্রপথের পর এবার বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নদীপথে পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহন শুরু হচ্ছে। গোমতী নদী দিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দি নদীবন্দর থেকে ১ হাজার বস্তা বা ৫০ মেট্রিক টন সিমেন্ট নিয়ে ভারতের ত্রিপুরার সোনামুড়া বন্দরে যাবে এম ভি প্রিমিয়ার-১ নামের কার্গো (ছোট জাহাজ)। দুই দেশের মধ্যে নদীপথে এটার প্রথম পণ্য পরিবহন সার্ভিস।

বিআইডবিøউটিএর সূত্রমতে, কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে গোমতী নদী দিয়ে মুরাদনগর, দেবীদ্বার, ব্রাহ্মণপাড়া, বুড়িচং, কুমিল্লা সদর ও বিবিরবাজার হয়ে সোনামুড়ায় পণ্য নেওয়া হবে। সেখান থেকে সড়কপথে পণ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় যাবে। গোমতী নদীপথে ত্রিপুরার সিপাহিজলা জেলার সোনামুড়া থেকে বাংলাদেশের কুমিল্লার দাউদকান্দি পর্যন্ত নদীপথটি ৯৩ কিলোমিটার দীর্ঘ। এ নৌপথের ৮৯ দশমিক ৫ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশে এবং বাকি পথ ভারতে।

এখন থেকে এ নৌপথ বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার মধ্যে সরাসরি পণ্য আমদানি-রপ্তানির রুট হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এ পথে চলতে পারবে ৫০ টন পণ্যবাহী নৌযান। জানা যায়, বাংলাদেশ-ভারত প্রটোকল যাত্রাপথের অংশ হিসেবে গত মে মাসে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাশ ও বাংলাদেশের নৌসচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর মধ্যে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তারই অন্তর্গত ছিল সোনামুড়া-দাউদকান্দি নৌপথ। পরে ৪ জুলাই ভারত-বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন প্রকল্পের জন্য গোমতী নদীর ওপর উদ্বোধন করা হয় এক ভাসমান জেটির।

এ বিষয়ে বিআইডবিøউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর মো. গোলাম সাদেক বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ত্রিপুরার মধ্যে নদীপথে পরীক্ষামূলক এই পণ্যপরিবহন করা হচ্ছে। বিআইডবিøউটিএর একটি প্রতিনিধিদল স¤প্রতি নৌপথটি পরিদর্শন করেছে। দলটি এই পথে কী ধরনের পণ্যবাহী নৌযান চলাচল করতে পারবে, নদীর নাব্যতা কতটা আছে, পণ্য পরিবহনে কী ধরনের সমস্যা হতে পারে, কী ধরনের অবকাঠামো সুবিধা লাগবে এসব পর্যবেক্ষণ শেষ করেছে। আজ বাংলাদেশ একটি ছোট জাহাজ যাবে ত্রিপুরায়।

বিআইডবিøউটিএ সূত্রে আরো জানা গেছে, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ভারতেরও আগ্রহ থাকায় এই নৌপথ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গোমতী নদীর নাব্যতা খুবই কম। তিন থেকে সাড়ে তিন ফুটের বেশি ড্রাফটের নৌযান চলাচলের উপযোগী নয়। এর মানে, বড় পণ্যবাহী নৌযান চলাচল করা সম্ভব নয়। ফলে একটি নৌযানে খুব বেশি পণ্য আনা নেওয়া করা যাবে না। এ ছাড়া গোমতী নদীর ওই পথে ২৩টি কম উচ্চতার সেতু আছে। সেতুর নিচে দিয়ে বড় নৌযান চলাচল করতে পারবে না। এছাড়াও গোমতি নদী ত্রিপুরা অংশে পানি কম থাকে। তাই পরীক্ষামূলক যাত্রা শেষে ড্রেজিং করে নিয়মিতভাবে এই সার্ভিস চালুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে বাংলাদেশ ও ত্রিপুরার মধ্যে নদীপথে পণ্যপরিবহন এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে উল্লেখ করেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। মুখ্যমন্ত্রী গত রোববার টুইটারে বলেন, ত্রিপুরার জন্য এ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী মনসুখ মান্ডভিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এসময় তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ