পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার সমস্ত গণমাধ্যমকে কব্জা করে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করতে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে নির্জলা মিথ্যাচার-প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এটা সর্বজনবিদিত যে, হিংসা, মিথ্যাচার, কূটকৌশল আর প্রতিহিংসার অসুস্থ রাজনীতি আওয়ামী লীগের মজ্জাগত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তাদের নেতা-মন্ত্রীদের বক্তব্য বিএনপি, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ঘৃণা উদগীরণ, কুৎসা রটনা, অসহিষ্ণুতা ও প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ প্রকট হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায় দেশ ও জনগণের স্বার্থে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিথ্যাচার, প্রতিহিংসা ও কূটতর্কের রজানীতি থেকে বেরি এসে বেøমগেমের রাজনীতির পরিবর্তে জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য যে আহ্বান জানিয়েছেন রিজভী সেই আহ্বানে সাড়া দেয়ার আহবান জানান।
বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মানুষের জীবন বর্তমানে এক শাসরুদ্ধকর দুঃসহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, রাষ্ট্রীয় দুঃশাসনের পায়ের তলে অশ্রুপাত করছে মানবতা। একদিকে স্বেচ্ছাচারী একনায়ক শাসকের শোষণে নিষ্পেষিত জনগণ, অপরদিকে করোনা ভাইরাসের ভয়াল মহামারীর সর্বগ্রাসী থাবা। বহু জেলায় বন্যায় সর্বস্বহারা মানুষের হাহাকারের মধ্যে দেশজুড়ে চলছে এক নীরব দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি। লাগামহীন বেড়েই চলেছে চাল-ডাল-আটা-তেল, কাঁচা মরিচসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য। দেশ নিপতিত হয়েছে ভয়ংকর বিপদের মধ্যে। আর সরকার এখন ‘যে কোন মূল্যে’ ক্ষমতায় থাকার জন্য আগ্রাসী মনোভাব, দমন-দলন, প্রতিহিংসা ও নির্মূলের রাজনীতিতে মত্ত।
দলের ভারপ্রাপ্ত প্রধানের বরাত দিয়ে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গত এক যুগের বেশি সময় ধরে বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখার অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে, দেশে এখন সরকারি বয়ানের বাইরে জনগণের কিছু বলার কিংবা গণমাধ্যমে স্বাধীন মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। অবৈধ বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারটি একাধারে প্রায় এক যুগ ধরে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে আছে। একটি রাজনৈতিক দলের একটানা এতদিন ক্ষমতায় থাকার পর, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের পরিবর্তে, এতদিন তাদের নিজেদের সাফল্যের কথা বলার মতো সক্ষমতা অর্জন করার কথা ছিল। অথচ গণতন্ত্র হত্যা, মানুষ খুন, গুম, দুর্নীতি আর টাকা পাচার ছাড়া গর্ব করে বলার মতো এই সরকারের কোনো সাফল্য নেই। গণমাধ্যমে এতদিন তারা ‘উন্নয়ন’ ‘উন্নয়ন’ জিগির তুলতো। অথচ দেখা যাচ্ছে এরা এতদিন জনগণের সঙ্গে শুধু প্রতারণাই করেছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি মন্ত্রণালয়, দপ্তর-অধিদপ্তর, সেক্টর, বিভাগ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানই দুর্নীতি-লুটপাট-অবিচার-অনাচার আর প্রতারণায় নিমজ্জিত। সর্বক্ষেত্রে এমন পাহাড়সম দুর্নীতি-প্রতারণা আর ব্যর্থতা আড়ালের জন্য মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছে আওয়ামী লীগের রাজনীতি। মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে অত্যন্ত দৃষ্টিকটুভাবে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের ঘটনাটিকে হঠাৎ করেই আবারো দাবার গুটি হিসেবে ব্যবহার করছে।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাÐের বিচার করেছে। বিচারের রায় কার্যকর করতে গিয়ে অভিযুক্তদের একের পর এক ফাঁসির রায়ও কার্যকর করছে। হত্যাকাÐের বিচারের পরও প্রায়শ:ই আওয়ামী লীগ এবং জাসদ নিজেরাই একে অপরের সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত। আওয়ামী লীগের অভিযোগ শেখ মুজিব হত্যাকাÐের জন্য জাসদ দায়ী। আবার জাসদের অভিযোগ শেখ মুজিব হত্যাকাÐের দায় আওয়ামী লীগের। তারা প্রমাণ দিয়ে বলেন, শেখ মুজিব হত্যাকাÐের পর গঠিত সরকারের মন্ত্রিসভায় সবাই ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এবার হঠাৎ করেই শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাÐের সঙ্গে জিয়াউর রহমানের নাম জড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা মনে করি, শেখ মুজিব হত্যাকান্ডের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই শহীদ জিয়ার সংশ্লিষ্টতার কোনই তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফলে, শেখ হাসিনা কিংবা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারের জবাব দিয়ে ভিত্তিহীন একটি অভিযোগের গুরুত্ব বাড়ানোর প্রয়োজন আছে বলে বিএনপি মনে করেনা। কারণ, শেখ হাসিনা কিংবা ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথায় ইতিহাস রচিত হয় না, ইতিহাস উদ্ভাসিত হয় তার আপন আলোয়। ফলে শেখ হাসিনা কিংবা ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথায় আওয়ামী লীগ আনন্দিত হতে পারে, কিন্তু মানুষের কাছে শেখ হাসিনা কিংবা ওবায়দুল কাদেরের কথার গুরুত্ব নেই, জনগণ তাদের কথা বিশ্বাসও করেনা। জনগণ যদি তাদের কথা বিশ্বাস করতো তাহলে বারবার তাদেরকে বিনা ভোটে কিংবা নিশিরাতের হিসাব নিকাশে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে হতোনা।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী অপশক্তির অতীত কার্যকলাপে প্রমাণিত-যখনি তারা কোনো ব্যর্থতা আড়াল করতে চায়, গণবিরোধী কোনো অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে চায় কিংবা দেশের স্বার্থ বিরোধী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে তখনি তারা একটি অহেতুক ইস্যু সামনে এনে জনগণকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করে।
দেশ বাঁচাতে মানুষ বাঁচাতে কারো আদেশের জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, সময় পরিস্থিতি বিবেচনা করে যার যার নিজ নিজ এলাকায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে গুম, খুন, অপহরণ-দুর্নীতি-অন্যায়-অবিচার-অনিয়মের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ান।
রিজভী বলেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশের প্রতিটি মানুষকে বিনামূল্যে করোনা ভাইরাসের টিকা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। শহীদ জিয়া যেভাবে ‘প্রত্যেক শিশুর জন্য বিনামূল্যে ‘বিসিজি টিকা’ দানের ব্যবস্থা নিয়েছিলেন, একইভাবে বর্তমানেও দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে করোনা ভাইরাসের টিকার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ বিনামূল্যে করোনা ভাইরাসের টিকা পাওয়া সকল নাগরিকের অধিকার। এটি নাগরিকদের মৌলিক মানবাধিকার। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্ষমতাসীন সরকারের সামনে এই মুহূর্তে সবচেয়ে অগ্রাধিকার ইস্যু হওয়া উচিত দেশের মানুষের জন্য করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিশ্চিত করা।
বিএনপির এই নেতা সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন শেখ হাসিনা সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলতে চাই, করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন সংগ্রহে দুর্নীতির আশ্রয় নেবেন না’। কারণ ক্ষমতাসীন দলের দুর্নীতিবাজ ও প্রতারকদের কারণে বিশ্বের দরবারের বাংলাদেশের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে। দেশে দেশে বাংলাদেশের নাগরিকদের বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে। সুতরাং করোনা-ভ্যাকসিন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যাতে আর কোনো কেলেংকারী না ঘটে। স্বাস্থ্যখাতে সীমাহীন দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনার কারণে জনগণ বিশ্বাস করে একমাত্র সেনাবাহিনীই পারে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সঠিকভাবে প্রতিটি মানুষের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দিতে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।