Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

উপকূলবাসীর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা

আবু হেনা মুক্তি, খুলনা থেকে : | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

গত দেড় মাস ধরে নদীর জোয়ারের পানি বৃদ্ধিতে দিশেহারা উপক‚লবাসী। শত প্রতিকূলতায়ও ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছে। খুলনাঞ্চলের ভেড়িবাঁধের শতাধিক স্পটে বাঁধ ভেঙে ও উপচেপড়া পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত গ্রাম। ভেসে গেছে চিংড়ি ও মাছের ঘের। পানিতে ডুবে আছে হাজার হাজার একর জমির আমনের চারা। যা এ এলাকার একমাত্র ফসল।
আগামী পূর্ণিমায় জোয়ারের পানিতে এসব এলাকায় নতুন করে ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। খুলনা, বাগেরহাট সাতক্ষীরার কয়েক শত গ্রামের মানুষ এখনো পানিবন্দী। জোয়ারের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় দুর্বল ভেড়িবাঁধগুলো প্রতিনিয়ত ভাঙছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবের পর তিন মাসেও ক্ষয়-ক্ষতি মোকাবেলায় বরাদ্দ মেলেনি। তাই উপকূলের ভেড়িবাঁধ আর সড়ক সংস্কার সহসাই হচ্ছে না। কবে নাগাদ বরাদ্দ আসবে আর কবে এসব বিধ্বস্ত ভেড়িবাঁধ সংস্কার হবে, তা স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না কেউ!
উপক‚লীয় অঞ্চলে টেকসই ভেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। বঙ্গোপসাগর উপকূলের নদীতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে জোয়ার প্রবাহিত হওয়ায় খুলনার কয়রা, পাইকগাছা, সাতক্ষীরার শ্যামনগর, আশাশুনি ও বাগেরহাটের শরণখোলা এলাকার ভেড়িবাঁধ ভেঙে নোনা পানি প্লাবিত হয়। এর মধ্যে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত কয়রা উপজেলা সদর, উত্তর ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নে জোয়ার ভাটা চলছে।
কিন্তু প্রকৃতির সাথে যুদ্ধকরা এ অঞ্চলের লড়াকু মানুষগুলো স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় বিভিন্নস্থানে বাঁধ মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। গত একমাসে স্বেচ্ছাশ্রমে বহু স্থানে বাঁধ আটকানো হয়েছে। কয়েক শত ঘের নতুন করে বাঁধা হয়েছে। আমন ক্ষেতে অনেক স্থানে সেচ দিয়ে পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। এ যেন প্রকৃতির রূদ্ররোষ থেকে বারবার বেঁচে থাকার নিরান্তর প্রচেষ্টা।
ইতোমধ্যে খুলনার পাইকাগাছার গড়ইখালী আবাসন প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিরক্ষা বাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে মেরামত করা হয়েছে।
সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবুর নির্দেশনায় প্যানেল চেয়ারম্যান ও সাবেক ফুটবলার আব্দুস সালাম কেরুর তত্বাবধায়নে স্থানীয় আ.লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিরক্ষা বাঁধটি মেরামত করেন।
বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের তথ্যমতে, আম্পানের তাÐবে উপকূলের প্রায় ১৪৮ কিলোমিটার ভেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ঘূর্ণিঝড় চলে যাবার পরপরই বিধ্বস্ত ভেড়িবাঁধ সংস্কার ও ক্ষতি মোকাবেলায় বরাদ্দ চাওয়া হয়। তবে তা এখনো মেলেনি। তাই নিজস্ব উৎস থেকে চলছে সংস্কারের চেষ্টা। সেখানে বাড়তি দুশ্চিন্তা জোয়ার।
সূত্রটি আরও জানান, আম্পানে উপকূলের ৬২৯টি ইউনিয়নে ৮৫ হাজার ৮৫৪টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ও দুই লাখ ৮৬ হাজার ৩০৬টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সর্বশেষ ওই ঘূর্ণিঝড়ে ৯০ হাজার ১৩০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতি হয়।
খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, টেকসই ভেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য সরকার নতুন করে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। আর মেরামত সেনাবাহিনীকে দিয়ে করাচ্ছেন। আর অন্যান্য মেরামতগুলো লোকাল রিসোর্স থেকে উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে আমরা করিয়ে নিচ্ছি। সুনির্দিষ্ট কোন বরাদ্দ এখনো আসেনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ