Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাজশাহীর গোদাগাড়ী, কাঁকনহাট পৌরসভায় আগাম নির্বাচনী হাওয়া, জামায়াতের না

গোদাগাড়ী থেকে মো. হায়দার আলী | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০২০, ৯:১৭ পিএম | আপডেট : ৭:৪৩ পিএম, ৩০ আগস্ট, ২০২০

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের মধ্যেই দেশের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ও পৌরসভাগুলোতে সাধারণ নির্বাচন এবং উপনির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চলতি বছরের অক্টোবর থেকেই শূন্য হওয়া আসনগুলোতে নির্বাচন শুরু করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য চেয়েছে ইসি। এর পর থেকে গোদাগাড়ী উপজেলার ২ টি পৌরসভায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা বেশ জোরেসোরে নির্বাচনী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

ইসির একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, দেশে বর্তমানে নিয়ম অনুযায়ী পৌরসভার মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে শূন্য আসনগুলোতে নির্বাচন সম্পন্ন করার বিধি রয়েছে।
প্রায় আড়াই শতাধিক পৌরসভায় সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে। ফলে এগুলোর মেয়াদও প্রায় শেষের দিকে। এছাড়া স্থগিত, অপসারণ, পদত্যাগ, মৃত্যুসহ বিভিন্ন করণে ইতোমধ্যে শূন্য পৌরসভা আসন রয়েছে ১৮৭টি। তাই চলতি বছরের অক্টোবর থেকেই শূন্য হওয়া পৌরসভাগুলোতে উপনির্বাচন ও সাধারণ নির্বাচন শুরু করা হবে।
পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণের ৪০ থেকে ৪৫ দিন আগেই তফিসিল ঘোষণা করতে হয়। তাই মাঠ পর্যায় থেকে তালিকা সংগ্রহ করা, সীমানাসংক্রান্ত জটিলতা ও নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা খতিয়ে দেখার জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। তবে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই নির্বাচন আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন সূত্র। এর পর থেকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী, কাঁকনহাট, পৌরসভার সম্ভাব্য মেয়র, কাউন্সিলর প্রার্থীরা বেশ তোড়জোর শুরু করেছেন। কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গোটা পৌর চুষে বাড়াচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এবার নতুন নতুন প্রার্থী আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। অনেকে দলীয়ভাবে মনোনায়ন পেতে বেশ মরিয়া হয়ে উঠেছে। স্থানীয় নেতা কর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক রাখছেন। কেন্দ্রীয় নেতা মন্ত্রী এমপিদের সাথে লবিং গ্রুপিং শুরু করেছেন। বিয়ে, সুন্নাতে খাতনা, জন্ম দিন, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বিভিন্ন ভাল ভাল উপহার সামগ্রী নিয়ে উপস্থিত হচ্ছেন। মসজিদ,মন্দির, জানাজার নামাজে, ইয়াতিমখানায় যাচ্ছে সালাম কালাম বেশী বেশী করছেন। নিজ উদোগ্যে চা চক্রের আয়োজন করছেন। গত কোরবানির ঈদে নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ কেউ একাধিক গরু খাসি ভেড়া জবাই করে বিলি করেছেন এলাকার ভোটারদের মধ্যে। নানা সমীকরণে ভোটের মাঠে প্রভাব-প্রতিপত্তি থাকে এমন ভোটারদের বাড়িতে কেউ কেউ সেমাই চিনি, আটা, চাউল, আলুসহ বিভিন্ন ত্রান সামগ্রী বিতরণ করে এলাকার ভোটারদের আকৃষ্ট করেছেন। এখানেই থেমে থাকছেন না সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তাদের তৎপরতা দেখলে মনে হতে পারে, আর কদিন পরেই যেন ভোট। পৌর নির্বাচন সামনে রেখে বাড়ি, পাড়া-মহল্লা, হাট-বাজার ও রাজনৈতিক কার্যালয়গুলো এখনই প্রায় সরগরম।

গোদাগাড়ী, কাকনহাট, এ সব পৌরসভার সবগুলোতেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপিরসহ অন্য দলীয় প্রার্থীরা তৎপরতা শুরু করেছেন। তবে জামায়াত নির্বাচনী পরিবেশ না থাকায় এ নির্বাচনে কোন প্রার্থী দিবেন, নির্বাচন করবেন না বলে জানান রাজশাহী পশ্চিম জেলার আমিন, মাটিকাটা কলেজের অধ্যাপক মোঃ আব্দুল মালেক। তিনি আরও বলেন নির্বাচনী পরিবেশ ফিরে আসলে তখন চিন্তাভাবনা করবেন দলীয় ভাবে দেশের অনেক স্থানে উপনির্বাচনে আমাদের প্রার্থীদের ভাল খাকলেও আমরা নির্বাচনে অংশ গ্রহন করচ্ছি না। দলীয়ভাবে আমাদের সিদ্ধান্ত এমপি, স্থানীয় সরকার কোন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবো না।

গোদাগাড়ী পৌরসভায় আওয়মীলীগ থেকে যাদের নাম শুনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে গোদাগাড়ী পৌরসভা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস, গোদাগাড়ী পৌরসভা যুবলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ী মোঃ রবিউল আলম, মাটিকাটা আর্দশ মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আকবর আলী, বর্তমান মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু এবং গোদাগাড়ী সরকারী স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যাক্ষ মোঃ এনামুল হক।

বিএনপি থেকে গোদাগাড়ী পৌরসভা বিএনপির সিনিয়ার সহ-সভাপতি আহম্মদ কুরিয়ার সার্ভিসের মালিক, বিশিষ্ঠ সমাজ সেবক গোলাম কিবরিয়া রুলু তিন বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর সাবেক যুবদল নেতা মোঃ মাহাবুবুর রহমান বিপ্লব,

বিগত ২০১৫ ইং সালে ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়মীলীগ মনোনীত প্রার্থী মনিরুল ইসলাম বাবু ভোট পেয়ে ছিলেন ১০ হাজার ২শ ২৭ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী পেয়েছিলেন ৬ হাজার ৬শ ১৬ ভোট। গোদাগাড়ী উপজেলার অপর পৌরসভা কাঁকনহাটের বর্তমান মেয়র কাঁকনহাট পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মজিদ মাষ্টার আবারও নির্বাচন করবেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন যুবলীগের সাবেক নেতা আবদুল্লাহ হিল কাফি। আর বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর জিয়াউল হক জিয়া ও হাফিজুর রহমান। এ পৌরসভায় বিগত নির্বাচনে এ পৌরসভায় বিগত নির্বাচনে আওয়ামীলীগের আব্দুল মজিদ মাষ্টার পেয়েছিলেন ৫ হাজার ৮শ ৯ ভোট তার নিকটতম প্রার্থী বিএনপির হাফিজুর রহমান পেয়েছিলেন ৪ হাজার ৪শ ৫৩ ভোট। বিগত পৌরসভা নির্বাচনে দেশে প্রথম দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল বলে বেশ নির্বাচনী আমেজ ছিল এবার নির্বাচন তেমনটি আশা করছেন সচেতন মহল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ