পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘ পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হচ্ছে। গত ১৭ আগস্ট থেকে কক্সবাজারসহ দেশের বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে কক্সবাজার, কুয়াকাটা, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, চলনবিল, হালতিবিল, মাধবকুন্ড, লাউয়াছড়া, বিছানাকান্দি, রাতারগুল, জাফলং, টাঙুয়ার হাওর, হাকালুকির হাওর ও সবুজ চা বাগানসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিনোদন কেন্দ্র সর্বত্র ফিরে এসেছে প্রাণ চাঞ্চল্য। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সব বয়সের মানুষ। করোনা আতঙ্কে দীর্ঘদিন ঘরবন্দি থাকার ফলে এক ধরনের অবসাদ মানুষকে ঘিরে ধরেছে। বিশেষ করে শিশুরা ঘরবন্দি থেকে অনেকটা বিমর্ষ। এর থেকে মুক্তি পেতে মানুষ ছুটছে সমুদ্র কিংবা পাহাড় ঘেরা প্রাকৃতির কাছে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে খুলছে বাংলাদেশের দার্জিলিং খ্যাত পর্যটন কেন্দ্র রাঙামাটির সাজেক ভ্যালি। এটা খুললে কোলাহাল বাড়বে পর্যটকদের। সেই সাথে জীবন জীবিকার সংস্থান বাড়বে।
করোনা মহামারির কারণে স্থবির হয়ে পড়েছিল পর্যটন শিল্প। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়- এ খাতে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৪০ লাখ জনবল বেকার হয়ে পড়েছিল। পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ায় আবার সবাই কর্মচঞ্চল হয়ে পড়েছে। ফলে পর্যটন নির্ভর অর্থনীতি আবারও চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। খুব দ্রæত পর্যটন খাত আবার ঘুরে দাঁড়াবে বলে সংশ্লিষ্টদের আশাবাদ।
প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্য ও সৌন্দর্যে ঘেরা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। ধীরগতিতে হলেও এ শিল্পের উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। বিগত কয়েক বছরের ধারাবাহিক অগ্রযাত্রায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন, রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার কারণে পর্যটন শিল্পের যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডবিøউইএফ) ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কমপেটেটিভনেস রিপোর্ট-এ বাংলাদেশের অবস্থান ১২০তম বলা হয়েছে। এ রিপোর্টে বাংলাদেশের অবস্থান ৫ ধাপ এগিয়েছে, যা ২০১৭ সালে ছিল ১২৫তম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের মূল উপাদান হতে পারে এই দেশের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদ। পাহাড়-পর্বত, নদী-সমুদ্র, বনাঞ্চল, হাওরসহ বৈচিত্র্যের সম্ভার আমাদের এই দেশ। এই সম্পদগুলোকে সঠিকভাবে পরিকল্পনা করা গেলে এই দেশে দেশীয় পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। তবে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য আমাদের বর্তমান ভিসা প্রক্রিয়া আরও সহজতর করতে হবে। আমাদের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরের কর্মকান্ডকে আরও পর্যটক বান্ধব করতে হবে। যেসব সূচকে আমাদের দেশ পিছিয়ে আছে, তাতে আরও মনোযোগ দিতে পারলে বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে এই শিল্পে আরও উন্নতি করতে পারবে। করোনাকালীন ক্ষতিও সহজে কাটিয়ে উঠতে পারবে।
পর্যটন নগরী কক্সবাজার থেকে শামসুল হক শারেক জানান, র্পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর আবার স্বরূপে ফিরছে দেশের পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারের অর্থনীতি। গত ১৭ আগস্ট থেকে খুলে দেয়া হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো। পর্যটনে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ার পর থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক আসছেন কক্সবাজারে। করোনার কারণে দীর্ঘ পাঁচমাস ঘরবন্দি থাকার পর মানুষ ভ্রমণ করছেন পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারে। ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শ্রেণি পেশা নির্বিশেষে সকলেই কক্সবাজার ভ্রমণ করে ক্লান্তি ও অবসাদ কাটানোর চেষ্টা করছেন। গতকাল পর্যটন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কলাতলীর ডলফিন মোড়, লাবনী পয়েন্ট, সীইন পয়েন্টসহ সৈকত এলাকা ও হোটেল মোটেল জোনে পর্যটকদের পদচারণা। খবর নিয়ে জানা গেছে, হিমছড়ি ইনানী বিনোদন কেন্দ্রও সরব হয়েছে পর্যটকে। এদিকে করোনা সচেতনতায় স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানার নির্দেশনা থাকলেও কিছু কিছু ভ্রমণকারী এবং ব্যবসায়ী তাতে এখনো কিছুটা অসচেতন দেখা গেছে। এবিষয়ে জেলা প্রশাসন সচেতন রয়েছেন।
ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রমতে, কক্সবাজার শহরের সাড়ে ৪ শতাধিক আবাসিক হোটেল, ১৪০টিরও অধিক রেস্টুরেন্ট, ২ শতাধিক ট্যুর অপারেটর অফিসসহ পর্যটন শিল্পনির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলো এখন সচল হয়েছে। এর সাথে অর্ধশত পরিবহন সংস্থা ও বিমান পর্যটক পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে আসছে। এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসছেন পর্যটকরা। এখন উন্মুক্ত বিস্তীর্ণ সৈকত, হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেস্টুরেন্টসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলো। এতে আবারো চাঙ্গ হয়ে উঠছে কক্সবাজারের পর্যটন নির্ভর অর্থনীতি।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন জানান, গত ৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভার সিদ্ধান্তের আলোকে সীমিত পরিসরে পর্যটন শিল্প গত ১৭ আগস্ট থেকে খুলে দেয়া হয়েছে। ভ্রমণকালে পর্যটকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, জেলার পর্যটন শিল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ ছাড়াও এরসঙ্গে বিভিন্নভাবে জড়িত রয়েছে ২ লাখেরও বেশি মানুষ। তাদের জীবন-জীবিকার কথা চিন্তা করে সীমিত পরিসরে পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি পর্যটকদের প্রতিও কঠোর দৃষ্টি থাকবে। কেউ স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। এছাড়া কোনো কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে আবার বন্ধ করে দেওয়া হবে এমন সতর্কতাও রয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সকল ব্যবসায়ীদের ৬৫ দফা দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যদি কেউ সেই নির্দেশনা অমান্য করে, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সতর্ক করা আছে আগে থেকেই।
কক্সবাজার হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আবুল কাসেম সিকদার জানান, দীর্ঘ পাঁচ মাস ব্যবসা বন্ধ থাকার কারণে বিপুল লোকসান গুনতে হয়েছে। এখন বিধি-নিষেধ সহকারে হলেও পর্যটন শিল্প খুলে দেয়ায় তারা আনন্দিত। কক্সবাজারের পর্যটন অর্থনীতি আবার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। এতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট অর্ধ লাখ শ্রমিক কর্মচারীর ঘরে আনন্দ ফিরে এসেছে। পাঁচ তারাকা হোটেল সীগালের সিইউ এমরুল হাসান রুমী এ প্রসঙ্গে বলেন, এ উদ্যোগ ভালো হয়েছে। পর্যটন সুবিধার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের ভালো হচ্ছে এবং কক্সবাজারের অর্থনীতি সচল হচ্ছে।
চট্টগ্রাম থেকে রফিকুল ইসলাম সেলিম জানান, জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকের ভিড় বাড়ছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানার তেমন বালাই নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদারকির ব্যবস্থাও রয়েছে। অনেকে মাস্ক ছাড়াই ঘুরছেন। টানা ৫ মাস বন্ধ থাকার পর ২২ আগস্ট ১৬টি শর্ত দিয়ে খুলে দেওয়া হয় পর্যটন স্পটগুলো। প্রথম দিন থেকে ভিড় বাড়তে থাকে। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক লোকসমাগম হয়। পতেঙ্গা সৈকতসহ নগরীর প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রে পর্যকটের ভিড় লেগে আছে। পার্কগুলোতে আসছে শিশুরা। নানা বয়সের মানুষ ভিড় করছে আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্ক, পতেঙ্গা সৈকতসহ পর্যটন স্পটগুলোতে। নগরীর সিআরবি শিরিষতলা, ডিসি হিল, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, ফয়’স লেক, কর্ণফুলী শিশুপার্ক, আগ্রাবাদ জাম্বুরি পার্ক, চান্দগাঁও স্বাধীনতা কমপ্লেক্সসহ বিনোদনকেন্দ্রে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে। স্কুল বন্ধ থাকায় শিশুরা টানা পাঁচ মাসের বেশি সময় ঘরবন্দি। পার্ক উন্মুক্ত হওয়ায় তারা বেজায় খুশি। মা-বাবার হাত ধরে ছুটছে পার্কে, চিড়িয়াখানায়। খোলা আকাশ মুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিচ্ছে তারা।
মহানগরীর অদূরের আনোয়ারার পারকি সৈকত, রাঙ্গুনিয়ার শেখ রাসেল এভিয়েরি পার্ক, সীতাকুন্ড ও বাঁশখালীর ইকো পার্ক, সীতাকুন্ডের গুলিয়াখালী সৈকত, মীরসরাইয়ের মহামায়া লেকসহ সব বিনোদন কেন্দ্রেই এখন উৎসবের আবহ। এসব বিনোদন স্পটকে ঘিরে নানা ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে জড়িতরা এখন দারুণ ব্যস্ত। দীর্ঘদিন পর পর্যটনের দুয়ার খুলে যাওয়ায় তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি এসেছে। মন্দা কাটাতে শুরু করেছে পর্যটন খাত।
খুলনা থেকে আবু হেনা মুক্তি জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে খুলেছে বৃহত্তর খুলনাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। করোনা পরিস্থিতিতে গত ৫ মাস ধরে বন্ধ ছিল এ অঞ্চলের সব পর্যটনকেন্দ্র, হোটেল মোটেল, রেস্তোরাঁ, সব ধরনের পর্যটন ব্যবসা। তবে বিশ্বখ্যাত ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এখনও উন্মুক্ত করা হয়নি। দীর্ঘদিন ঘরবন্দি মানুষগুলো হাঁপিয়ে ওঠার পর খুলনার শহরের কোল ঘেঁষা রূপসা নদীর ওপর খানজাহান আলী সেতুটি খুলনাবাসীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্রে সীমিত পরিসরে ভিড় জমাচ্ছে। শ্যামনগর রিসোর্ট, বটিয়াঘাটার রানা রিসোর্ট, ওয়াইসি রিসোর্টসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলো চাঙ্গা হচ্ছে। এসব পর্যাটন কেন্দ্রগুলো আবারও স্বরূপে ফিরে আসায় আশার আলো দেখছেন ব্যবসায়ীরা।
পটুয়াখালী থেকে মো: জাকির হোসেন, পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত কুয়াকাটা সাগর সৈকত। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় দুই মাস আগে কুয়াকাটা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ছুটিরদিন সবচেয়ে বেশি পর্যটকদের আগমন ঘটেছে কুয়াকাটা সাগর সৈকতে। কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসাসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরিফ জানান, দীর্ঘদিন পরে কুয়াকাটার হোটেলগুলোর অধিকাংশ রুমই বুকিং হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। সাপ্তাহিক দুইদিন ছুটির সাথে একদিন বেশি ছুটি পাওয়ায় আজ সকাল থেকেই কুয়াকাটায় পর্যটকদের আগমন ঘটতে থাকে।
খাগড়াছড়ির রামগড় থেকে রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২৮ আগস্ট শুক্রবার থেকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয় খাগড়াছড়ির প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলো। ফলে পর্যটন কেন্দ্রের পাশাপাশি আবাসিক হোটেল-মোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোও খুলছে। জেলার প্রধান পর্যটন কেন্দ্রগুলো হচ্ছে, পার্বত্য জেলা পরিষদ পার্ক, আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, রিছাং ঝর্ণা ও মায়াবিনী লেক। এসব পর্যটন কেন্দ্রে প্রতিদিন বাড়ছে পর্যটক। এদিকে খাগড়াছড়ির সবকটি বিনোদন কেন্দ্র এবং বাংলার দার্জিলিং নামে খ্যাত সাজেক ভ্যালি উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্তে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়া কটেজ- হোটেল-মোটেল, রেস্টুরেন্ট মালিকদের মনে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণসহ খাগড়াছড়ি জেলার স্থানীয় সাংবাদিক রুপায়ন তালুকদার এ প্রতিনিধিকে জানান- পার্বত্যাঞ্চলের পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ায় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে কৃজ্ঞতাসহ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সিলেট থেকে ফয়সাল আমীন জানান, ওরা ছুটছে দলে দলে প্রকৃতির নির্মল বাতাসে নিঃশ্বাসের খোঁজে। করোনা পরিস্থিতি থামিয়ে দিয়েছিল তাদের সেই উচ্ছ্বাসময় পদধ্বনি। কিন্তু এখন নতুন করে শুরু হয়েছে প্রাণের মেলা সিলেটের সবকয়টি পর্যটন স্পটে। প্রতিদিন দর্শনার্থী ও পর্যটকদের ভিড় জমেছে। গতকাল (শুক্রবার) সিলেটের চা বাগান, গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, রাতারগুল ও জাফলংয়ে রাতারগুল, জাফলং দেখা গেছে ব্যাপক সংখ্যক পর্যটক সমাগম। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, লাউচড়া জাতীয় উদ্যান, ৭১ বধ্যভূমি, চা গবেষণা ইনস্টিটিট এসব প্রকৃতির মনমুগ্ধকর স্থানে পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। পর্যটকদের আনাগোনায় জমে উঠেছে আবাসিক হোটেল ব্যবসা। আগেভাগেই বুকিং ছাড়া হোটেল-রিসোর্টে স্থান পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের শ্রীমঙ্গল সংবাদদাতা আনোয়ার হোসেন জসিম জানান, পর্যটক ও দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে। আগামী দিনগুলোতে আরও বাড়বে।
দিনাজপুর থেকে মাহফুজুল হক আনার জানান, এ অঞ্চলে ঐতিহাসিক কান্তজি মন্দির, রামসাগর তেঁতুলিয়াসহ অনেক বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে দিনাজপুরের স্বপ্নপুরী রংপুরের ভিন্নজগৎসহ আরো অনেক বাণিজ্যিক বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে। পর্যটন শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানে খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো পর্যটকদের আগমন আশানুরূপ হচ্ছে না। স্বপ্নপুরীর ম্যানেজারের দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, করোনাভাইরাসের পরে এখনো এখানে সাধারণ মানুষের আগমন নেই বললেই চলে। প্রতিদিন যেখানে গড়ে দশ হাজার লোকের সমাগম ঘটতো সরকারিভাবে খুলে দেওয়ার পর এখন ঘরে পাঁচশ’ লোক আসছে না। অন্যান্য কেন্দ্রগুলোর একই অবস্থা।
নরসিংদী থেকে সরকার আদম আলী জানান, নরসিংদীর ব্যক্তি মালিকানাধীন বিনোদন কেন্দ্র ড্রিম হলিডে পার্ক খুলে দেওয়া হলেও এখনো পর্যটকের খুব একটা ভিড় দেখা যাচ্ছে না। পার্কটিতে দৈনিক ২০ হাজার লোকের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে এখন দৈনিক ৫০০ লোকও পার্ক ভিজিট করতে আসছে না বলে কতৃপক্ষ জানায়। তবে খুব শিগগির আগের মত জমে উঠবে বলে তারা আশাবাদী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।