Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নারী-শিশুসহ রক্ষা পেল ৪০ জন চলনবিলে পথ হারিয়ে ৯৯৯-এ ফোন

নাটোর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০২০, ১২:০২ এএম

‘চারদিকে শুধু পানি আর পানি। শুধু শো-শো শব্দ হচ্ছে। বড় বড় পানির ঢেউ। কোথাও কোনও বাড়িঘর নেই। নেই কোনও আলো। আমরা জীবনের ঝুঁকিতে। আমাদের বাঁচান!’ এমনই আকুতি নিয়ে ৯৯৯-এ ফোন আসে। নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ৫ শিশু, ১২ নারী ও ২৩ জন পুরুষ মিলে ৪০ জন পর্যটক নৌকায় বেড়াতে এসে চলনবিলের মাঝে পথ হারিয়ে ফেলেছেন।পরে তাদের উদ্ধারে দ্রæত পদক্ষেপ নেয় পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান নাটোরের পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহা।

এসপি পর্যটক দলের বরাতে জানান, গত বুধবার সকালে নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলা থেকে ইঞ্জিন চালিত একটি নৌকায় করে ৪০ জনের একটি নারী-শিশু-পুরুষের দল নাটোরের সিংড়া উপজেলার চলন বিলে বেড়াতে আসে। বেড়ানোর এক পর্যায়ে তারা সন্ধ্যে সাড়ে ৭টার দিকে বিলের মাঝখানে তিসিখালী মাজারে যায়। সেখান থেকে মাজার জিয়ারত এবং খাওয় দাওয়া শেষে রাত সাড়ে ১০টার দিকে নৌকাযোগে আত্রাই এর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তিন ঘণ্টা চলার পর তারা বুঝতে পারেন যে পথ হারিয়ে ফেলেছেন। এর মধ্যে প্রবল ঝড়বৃষ্টি এবং ঢেউ শুরু হলে তারা আতঙ্কে পড়ে যান। তারা প্রকৃতপক্ষে কোন জায়গায় অবস্থান করছে কিংবা কোন দিকে যেতে হবে তারা তা বুঝতে পারছিল না।

এমন বিপদমুহূর্তে পর্যটক দলের সদস্য পিয়াস সরকারের মনে পড়ে ‘৯৯৯’-এর কথা। সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে তারা বাঁচার আকুতি জানায়। ফোন পেয়ে সিংড়া থানার ওসি বিষয়টি এসপিকে জানান। এসপির নির্দেশে সিংড়া ও গুরুদাসপুর থানা পুলিশের পাঁচটি টিম কাজ শুরু করে।

এসপি আরও জানান, অভিযানকালে তিনি সার্ক্ষণিক বিষয়টি মনিটরিং করেন এবং পিয়াস সরকারের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে কথা বলেন। পিয়াস সরকার তাকে জানান যে, তাদের জীবন ঝুঁকির মুখে, তারা কোনও দিক খুঁজে পাচ্ছেন না। আধুনিক প্রযুক্তি ও এলআইসি, ঢাকার সহায়তায় কল করা ব্যক্তির রাত ১টা ৩৪ মিনিটের অবস্থান জানা যায় সিংড়া থানাধীন বিলদহর এলাকায়। সেখানে গিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি। পুনরায় রাত ১টা ৪৬ মিনিটে কল করা ব্যক্তির অবস্থান জানা যায় গুরুদাসপুর থানাধীন যোগেন্দ্রনগর এলাকায়। সিংড়া ও গুরুদাসপুর থানা পুলিশের ৫টি টিম অবশেষে বৃহস্পতিবার ভোর ৪ টায় তাদের সিংড়া বিলদহর এলাকায় নদীর পানি থেকে উদ্ধার করে। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ওই পর্যটক দলকে আত্রাই সীমানায় রেখে আসে।
পর্যটক দলের সদস্য আত্রাই উপজেলার বলরামচক গ্রামের অমৃত সরকারের ছেলে পিয়াস সরকার (২৪), কাশিয়াবাড়ি গ্রামের বেলালের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩০) ও পাচুপুর গ্রামের কাশেমের ছেলে মান্নান (৫০) জানান, তারা কখনও ভাবেননি অজানা গভীর বিল থেকে তাদের এত দ্রæত সন্ধান করে পুলিশ সঠিক পথ দেখিয়ে দেবে। তারা এজন্য সৃষ্টিকর্তা, ৯৯৯ কর্তৃপক্ষ ও জেলা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় পড়ে নৌকা ডুবে তাদের ৪০ জনেরই প্রাণহানি ঘটতে পারতো। নৌকায় যথেষ্ট পরিমাণ আলো এবং লাইফ সাপোর্ট ছাড়া তাদের এভাবে ভ্রমণ করাটা মোটেও ঠিক হয়নি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফোন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ