Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শুক্রবার থেকে খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রসমূহ উন্মুক্ত হচ্ছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২০, ৭:৩৫ পিএম | আপডেট : ৭:৪৭ পিএম, ২৬ আগস্ট, ২০২০

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারনে গত পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী শুক্রবার থেকে উন্মুক্ত হচ্ছে খাগড়াছড়ি পর্যটন কেন্দ্র। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে গত ২৩ আগস্ট খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। এর ফলে সব পর্যটন কেন্দ্রের পাশাপাশি আবাসিক হোটেল-মোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোর ওপর করোনাকালীন সরকারি বাধা নিষেধ ওঠে যাবে।
জানা যায়, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর সংক্রমণ প্রতিরোধকল্পে গঠিত জেলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৮ আগস্ট শুক্রবার থেকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পর্যটন কেন্দ্রসমূহ পর্যটকদের জন্য শর্তসাপেক্ষে উন্মুক্ত করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মার্চের মাঝামাঝি থেকে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে খাগড়াছড়ি পর্যটন কেন্দ্র ও আবাসিক হোটেল-মোটেল বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তখন থেকে প্রায় পাঁচ মাস ধরে পর্যটন বন্ধ ছিল। জেলায় করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউনের পাশাপাশি অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল সকল পর্যটনকেন্দ্র ও হোটেলগুলি। এতে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতির মুখে ছিল পর্যটন সম্পৃক্ত ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাবসায়ী ও সেবা প্রদানকারী কর্মীগণ।
২৩ আগস্ট খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাস যেহেতু পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হচ্ছে না তাই নিজেকে নিজের সুরক্ষা করে এ ভাইরাসের সাথে টিকে থাকতে হবে। দেশের অন্যান্য জেলাতে ইতিমধ্যে যেহেতু পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে তাই আগামী ২৮ আগস্ট থেকে এ জেলার পর্যটনকেন্দ্র গুলিও খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি কঠোর নজরদারিতে থাকবে।
জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, জেলায় করোনা পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তাছাড়া চট্টগ্রাম, রাঙামাটিসহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে পর্যটন খুলে দেওয়া হয়েছে। এজন্য খাগড়াছড়ি হোটেল-মোটেল খুলে দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মহামারি করোনা সংক্রমণ প্রতিরধোকল্পে গঠিত জেলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পর্যটন কেন্দ্রসমূহ পর্যটকদের জন্য শর্তসাপেক্ষে উন্মুক্ত করার ঘোষণা দেয় জেলা প্রশাসক।
শর্তসমূহ : খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পর্যটন স্পটসমূহ (জেলা পরিষদ পার্ক, আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, রিছাং ঝর্ণা ও মায়াবিনী লেক) সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া যাবে। ২. পর্যটন কেন্দ্র সমূহে আগত পর্যটকগণকে মাস্ক পরিধান ব্যতিত পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। ৩.পর্যটন কেন্দ্র সমূহের প্রবেশ মুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/সাবান দিয়ে পর্যটক গণের হাত জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ৪. শারিরীকভাবে অসুস্থ অবস্থায় পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণ করা যাবে না।
সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে:-স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি/বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন কর্তৃক প্রণীত নির্দেশনা যথাযথ ভাবে মেনে চলতে হবে বলে গন বিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলা প্রশাসক।
জেলার পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, জেলা শহর ও উপজেলাগুলোতে প্রায় ১শ টিরও বেশি আবাসিক হোটেল-মোটেলে পর্যটন মৌসুমে দৈনিক পাঁচ হাজারের বেশি পর্যটক আসেন। পর্যটকদের সেবায় আবাসিক হোটেল-মোটেলে প্রায় ৪হাজার জনকর্মী, ট্যুরিস্ট গাইডসহ,৭/৮শতাধিক গাড়িচালক ও চালকের সহকারী এবং খাবারের দোকানের কর্মচারীদের কর্মসংস্থান হয়ে থাকে।
খাগড়াছড়ি শহরের মনটানা হোটেল ব্যবসায়ী আলমগীর বলেন, ‘পর্যটন খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।’ সরকারি বিধি নিষেধ মেনে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠান চালু করবো।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস স্বাক্ষরিত গত ২৩ আগস্ট রোববার গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৮ আগস্ট ২০২০ তারিখ হতে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পর্যটন স্পটসমূহ (জেলা পরিষদ পার্ক, আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, রিছাং ঝর্ণা ও মায়াবিনী লেক) সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া যাবে, পর্যটন কেন্দ্র সমূহে আগত পর্যটকগণকে মাস্ক পরিধান ব্যতিত পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। পর্যটন কেন্দ্র সমূহের প্রবেশ মুখে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। সাবান দিয়ে পর্যটকগণের হাত জীবানুমুক্ত করতে হবে। শারিরীকভাবে অসুস্থ অবস্থায় পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমণ করা যাবে না। সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি (বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন কর্তৃক প্রণীত নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে)। তবে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন না করলে বা জেলায় কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে যে কোন সময়ে এ অনুেমাদন আবার বাতিল করা হতে পারে বলে জানান।
এদিকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সাথে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লাসহ অন্যায়ভাবে ডবল সিটের ভাড়া নিয়ে চলাচল করায় সাধরন যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। মহামারি করোনা সংকটের কথা বলে পরিবহনে ৬০শতাংশ বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার দাবী যাত্রীদের। করোনা সংকটে গণপরিবহনে ৬০শতাংশ বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে, আগের ভাড়ায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানান খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সচেতন যাত্রীরা।
খাগড়াছড়ি রিপোর্টার ইউনিটি’র সভাপতি চাইথোয়াই মারমা বলেন, আমরা খাগড়াছড়ি বাসীর পক্ষে পরিবহণের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে দেশের প্রতিটি সড়কে বর্ধিত ভাড়া পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
চট্ট্রগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি আসা যাত্রী আঃ মুনাফ নামের এক ব্যাবসায়ী বলেন, ভাই করোনা কালীন না বলাই ভালো কারন সরকার আর আমরা সাধারন যাত্রীরাই করোনার কথা বলছি কিন্তু গাড়ির বাস মালিকরা কি মানছে করোনার স্বাস্থ্যবিধি না মানছেন না। তারা দুই সিটের দুইজনই নিচ্ছেন, এতে যাত্রীস্বার্থ চরমভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানিকে আরেক দফা উসকে দেয়া হয়। ওই সময়ে যাত্রীদের থেকে এই ভাড়া বৃদ্ধির না করে আগের মত করে স্বাভাবিক ভাড়ায় ফিরিয়ে আনার সচেতন মহলের দাবি জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ