Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সৈয়দপুরে রাস্তা দখল করে বাড়ি নির্মাণ

সৈয়দপুর (নীলফামারী) জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২০, ৭:১৯ পিএম

নীলফামারীর সৈয়দপুরে সরকারি রাস্তা দখল করে পাকা ও আধাপাকা বাড়ি-ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ১ নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিজামের চৌপথী সংলগ্ন ব্রম্মত্তর ছয়ঘড়িয়া পাড়ার গহের আলী, জালাল উদ্দিন, মো. মন্টু ও টইল্যা মামুদের বিরুদ্ধে ওই সরকারি রাস্তা দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারি রাস্তা দখল করে বাড়ি ঘর নির্মাণের কারণে ওই গ্রামসহ আশপাশের এলাকার মানুষ চলাচলের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সরকারি ওই রাস্তা দখলকারীদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসী ইতিমধ্যে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সৈয়দপুর উপজেলার এক নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের ছয়ঘড়িয়াপাড়া গ্রাম। ওই গ্রামের ওমেদুল হকে বাড়ি পাশ দিয়ে শত বছরের একটি পুরনো একটি সরকারি রাস্তা রয়েছে। যেটি চৌপথী-ধলাগাছ পাকা সড়কে গিয়ে মিশেছে। এক সময় সরকারি ওই রাস্তাটি দিয়ে এলাকার মানুষ দ্রুত সময়ে সৈয়দপুর শহর আসা-যাওয়া করতো। এছাড়াও সরকারি রাস্তাটি দিয়ে ব্রম্মত্তর ছয়ঘড়িয়াপাড়া সংলগ্ন মাঠে ফসল গরুরগাড়িতে করে বহন করে খুব সহজে বাড়িতে নিয়ে আসতেন এলাকার কৃষকরা। অথচ ওই পাড়ার চার ব্যক্তি সরকারি রাস্তাটির প্রায় ২০০ মিটার দখল করে পাকা ও আধাপাকা বাড়িঘর নির্মাণ করেছেন। অবৈধভাবে সরকারি রাস্তাটি দখল করে বাড়ি ঘর নির্মাণ করায় ১০ মিটার চওড়া রাস্তাটি বর্তমানে আইলে পরিণত হয়েছে। ফলে রাস্তাটি দিয়ে সব রকম যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে পড়েছে। এমনি কি বর্তমানে আইনে পরিণত হওয়া রাস্তাটি দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করাও দুষ্কর হয়ে পড়েছে। আর এভাবে দীর্ঘদিন রাস্তার সম্মূখ অংশ দখল করে বাড়িঘর নির্মাণের কারণে রাস্তাটি দিয়ে মানুষ ও যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় রাস্তািিট সংলগ্ন আবাদি জমির কিছু মালিক রাস্তাটি কেটে দখলে নিয়েছেন। রাস্তাটি বন্ধ হয়ে পড়ায় সেখানে থাকা একটি ঈদগাহ্ মানুষজন ঈদের নামাজ আদায় করতে যেতে পারছেন না। অনেক সময় আইল দিয়ে ঈদের দিন নামাজ আদায় করতে গিয়ে মানুষজন পাশের আবাদি জমির খাদে পড়ে আহত হওয়াসহ ভাল কাপড়চোপড় নষ্ট হয়ে পড়ে।
আজ বুধবার সরেজমিনে ব্রম্মত্তর ছয়ঘড়িয়া পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তাটি দখল করে দুই সম্মূখভাগে পাকা ও আধাপাকা বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এ সময় এলাকাবাসী অভিযোগ করেন ওই পাড়ার গহের আলী, জালাল উদ্দিন, মো. মন্টু ও টইল্যা মামুদ রাস্তাটি দখল করে পাকা ও আধাপাকা ঘর নির্মাণ করেছেন। অভিযোগকারীরা আরো জানান, দখলকারীরা রাস্তার দখল ছেড়ে না দিয়ে উপরন্ত তাদের নানা রকম হুমকিধমকি প্রদর্শন করছেন।
এভাবে সরকারি রাস্তা দখলে নিয়ে পাকা আধাপাকা বাড়িঘর নির্মাণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানে কাছে লিখিত অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। সে সময় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লোকমান সেখানে এসে কয়েক দফা মাপজোক এবং বৈঠকও সরকারি রাস্তার উদ্ধারে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে এলাকার ভূক্তভোগী লোকজন গত ৩০ জুন সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
সরকারি রাস্তা দখলে বিষয়ে গ্রামবাসীর অভিযোগ পেয়ে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তা তদন্ত করে দেখার জন্য উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রমিজ আলমকে নির্দেশ দেন। ইউএনও’র নির্দেশে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) অভিযোগটি তদন্তের জন্য কামারপুকুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা কাজী মো. শরীফুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা অভিযোগের বিষয়ে তদন্তসাক্ষেপে গত ১৯ জুলাই তাঁর তদন্ত প্রতিবেদন দেন। তদন্তে তিনি অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া সরকারি রাস্তাটি উদ্ধারের সুপারিশ করেন। ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন পেয়ে গত ১৭ আগস্ট সৈয়দপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) দখলকারীদের নোটিশ দিয়ে সাত দিনের মধ্যে সরকারি রাস্তার ওপর থেকে অবৈধ অবকাঠামো সরিয়ে নিতে নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু আজ বুধবার ওই নির্দেশের সময়সীমা অতিবাহিত হলেও দখলকারীরা সরকারি রাস্তা দখল করে নির্মাণ করা অবকাঠামো সরিয়ে নেয়নি।
সৈয়দপুর উপজেলা কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম লোকমান বলেন, কয়েক দফা ওই সরকারি রাস্তাটি দখলমুক্ত করার চেষ্টা করেও আমি পারেনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ