Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

একটি ভয়াবহ দুর্যোগ না কাটতেই আরেকটি অরেকটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ

দক্ষিণাঞ্চলে অশনি সংকেত

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০২০, ৪:৪৯ পিএম | আপডেট : ৫:৫৫ পিএম, ২৫ আগস্ট, ২০২০

একটি লঘুচাপের প্রভাবে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ার আর বর্ষনের দূর্যোগ না কাটতেই বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট আরেকটি লঘুচাপ সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিনত হয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চল সহ উপক’লভাগে মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষনের আশংকা সৃষ্টি করেছে। মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে উপক’লভাগ সহ দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে ২০-২৫ কিলোমিটার বেগের বাতাসের সাথে হালকা-মাঝারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সাগার মাঝারী মাত্রায় উত্তাল হয়ে উঠছে । কুয়াকাটা সৈকতে গর্জনের সাথে ৩-৫ ফুট উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়ছে।
গত রবিবার দুপুরের পর থেকে আবহাওয়ার ইতিবাচক পরিবর্তনর পরে সোমবার দিনভর শরতের সুন্দর আকাশে মেঘের ভেলা ঘুরে বেড়িয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর থেকে দক্ষিণাঞ্চল সহ উপক’লভাগে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতে শুরু করেছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে বরিশাল সহ উপক’লীয় এলাকায় মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষনের পূর্বভাস দেয়া হয়েছে। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের সব নদী বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত জারী রাখা হয়েছে। সমুদ্র বন্দর পায়রা’তে ৩নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের প্রবনতা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
ভাদ্রের বড় অমাবশ্যায় ভর করে গত বুধবার বিকেল থেকে উপক’লভাগ সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া শুরু হয়। ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ার স্বাভাবিকের চেয়ে ৩-৫ ফুট উচ্চতায় ধেয়ে এসে উপক’ল ছাপিয়ে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলকে প্লাবিত করে দেয়। ভরা জোয়ারের সাথে উজানের ঢল আর মাঝারী ভারী বর্ষন সমগ্র দক্ষিণাঞ্চালকে সয়লাব করে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ হেক্টর জমির আউশ ও আমন সহ বিভিন্ন ধরনের ফসলী জমি প্লাবিত করেছে। ভেসে গেছে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ৪ লাখ পকুর,দীঘি ও বরোপীটের মাছ। এসব ফসলী জমি আর পুকুুর-দীঘি এখনো প্লাবনমূক্ত হয়নি। দক্ষিণাঞ্চলের ৯০টি নদ-নদীর সবগুলোই দুকুল ছাপিয়ে বিপদ সীমার ওপরে প্রবাহিত হয় সোমবার দুপুর পর্যন্ত। মঙ্গলবারেও বেশীরভাগ নদ-নদীই বিপদ সীমার ওপরে প্রবাহিত হলেও সাগর শান্ত হওয়ায় উজানের পানি গ্রহন শুরু করে রবিবার রাত থেকে। বরিশাল মহানগরীর অন্তত ৭০ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত নগরীর অনেক এলাকাই প্লাবনমূক্ত হয়নি।
এরইমধ্যে বঙ্গোপসাগরে আরেকটি লঘুচাপ সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিনত হয়ে নতুন দূর্যোগের জানান দিচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলকায় অবস্থানানরত লঘুচাপটি আরো ঘণীভুত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও দেশের উপক’লীয় এলাকায় অবস্থান করছে বলে জানান হয়েছে। সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল দেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্বে ভারতের আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌশুমী বায়ু দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। এর প্রভাবে উপক’লীয় এলাকা সহ দক্ষিণাঞ্চলে বুধবার সকালের পরবর্তি ৪৮ ঘন্টায়ও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবার কথা বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
এদিকে গত কয়দিনের প্লাবন সহ ভারী বর্ষনে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি ও মৎস্য সেক্টরের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের কাজ চলছে। ক্ষতির প্রাথমিক প্রতিবেদন মঙ্গলবারই ঢাকায় পাঠান হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডও উপক’ল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক বেড়ী বাঁধ সহ উপক’লীয় বণ্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদন প্রস্তুত করছে বলে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ