বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গত কয়েক দিনের মাঝারী ভারি বর্ষনের সাথে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারে প্লাবিত বরিশাল মহানগরীর ভঙ্গুর পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার কথা আরো একবার স্মরন করিয়ে দিল। পাঁচ লক্ষাধীক জনসংখ্যার এ নগরীর নাগরিক সুবিধা ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে বলেও অভিযোগ অনেকের। জনদূর্ভোগ ক্রমশ বাড়ছে। ঘন্টায় ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হলেও নগরীর বেশীরভাগ রস্তাঘাট সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। আরো বেশী বৃষ্টি হলে নগরীর নবগ্রাম রোড সহ কয়েকটি প্রধান সড়কে জাল ফেলে মাছ শিকারে নামেন হতভাগ্য নগরবাশী।
মাথাভাড়ী প্রশাসন নিয়ে নুহ্যমান নগর ভবনের দায়িত্বশীলদের এ ব্যপারে নজর দেয়ার সময় এসেছে বলে মনে করেন নগরবাশী। নগর ভবনের কনজার্ভেন্সী শাখার জনবল সহ সরঞ্জামাদির কোন ঘাটতি না থাকলেও পয়ঃনিস্কআশন ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছেনা। গত ৩-৪ দিনের বৃষ্টি আর আকষ্মিক প্লাবনের পরে রবিবার বিকেল থেকে পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন শুরু হলেও এখনো মহানগরীর অনেক রাস্তায় পানি। ওয়াকিবাহাল মহলের মতে আর বৃষ্টি না হলেও বরিশাল মহানগরীর সব রাস্তা থেকে পানি সরতে অন্তত এক সপ্তাহ লাগবে।
নগর পরিষদের তরফ থেকে সন্ধার পরেই নগরীর ময়লা আবর্জনা পরিস্কার সহ ড্রেনগুলো দিনের বেলা পরিস্কার করার নির্দেশনা থাকলেও পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বিকেল হলেই নগরীর বিভিন্ন রস্তার ওপর প্রাইমারী ডাম্পিং পয়েন্টে ময়লা আবর্জনার স্তুপ উচু হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের ট্রাক সেগুলো অপসারন শুরু করে সন্ধার আগেÑপড়ে। ফলে অনেক এলাকার রাস্তাঘাটে চলাচল দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে পথচারীদের। অনেকের পেটের খাবার গলা দিয়ে বের হয়ে আসছে।
তবে এরচেয়েও নাজুক নগরীর পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থায়। এ নগরীর সোয়া ৩শ কিলোমিটার ড্রেনের অনেকগুলোই নিয়মিত পরিস্কার হচ্ছেনা। এছাড়াও যেসব খালগুলো কোনমতে অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে, সেগুলোও নিয়মিত পরিস্কার না হওয়ায় ড্রেনের পানি গ্রহন করছে না। এছাড়াও নগরীর প্রায় ২শ কিলোমিটার পাকা ড্রেনেরও প্রায় একই অবস্থা। অথচ পাকা ড্রেনগুলো পরিস্কার রাখা অনেকটাই সহজতর। এর মাধ্যমে পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা নির্বিঘœ রাখাও কিছুটা সহজতর হলেও এ নগরী মাঝারী বৃষ্টিতেও প্রতিনিয়ত অবরুদ্ধ হচ্ছে।
নগরীর নবগ্রাম রোড, ফকিরবাড়ী রোড, বগুড়া রোড সহ আরো কিছু সড়কের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এসব সড়কের পাশে পাকা ড্রেনের বেশীরভাগই কংক্রিট আচ্ছাদিত থাকলেও ময়লা-আবর্জনায় পূর্ণ হয়ে পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা ক্রমশ অবরুদ্ধ হচ্ছে। নগরীর হৃদপিন্ড সদর রোডেও এখন বৃষ্টির পানি আটকে থাকছে দীর্ঘসময়।
বেশীরভাগ কাঁচা-পাকা ড্রেনই নিয়মত পরিস্কার হচ্ছে না বলে অভিযোগ নগরবাশীর । সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাঘাটগুলো সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। ড্রেনের পানি অপসারনের পথ না থাকায় তা সাধারন মানুষের ঘরে ঢুকছে। নগরীর নবগ্রাম রোডের পাশে ৮ফুট প্রশস্ত পাকা ছাউনি যুক্ত ড্রেনে সামান্য বৃষ্টিতেই বটতলা থেকে সার্কুলার রোডের মুখ পর্যন্ত দেড় থেকে দু ফুট পানির তলায় যাচ্ছে। এবারের প্লাবনে পুরো সড়কটিই সয়লাব হয়ে গেছে। ফকিরবাড়ী রোড, বগুড়া রোড, গোড়াচাঁদ দাশ রোডেও পানি থৈ থৈ করে মাঝারি বর্ষনে। এসব সড়কের পাশেই পাকা ড্রেন রয়েছে। প্রতিটি ড্রেনের সাথেই নগরীর পাশে বহমান কির্তনখোলা নদীর সংযোগ থাকলেও তার বেশীরভাগ পথই রুদ্ধ। তবে কির্তনখোলার তলদেশ ভড়াট হয়ে জোয়ারের উচ্চতাও ক্রমশ বাড়ছে। ফলে এনগরীর পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার জন্য নতুন দূর্যোগ অসন্ন বলে মনে করছেন ওয়াকিবাহাল মহল।
গত বুধবার থেকে বর্ষন আর ভরা জোয়ারে নগরীতে যে পানি আটকে গেছে তা অপসারনেও অন্তত এক সপ্তাহ সময় লেগে যেতে পারে বলে মনে করছেন মহলটি।
এসব ব্যপারে সিটি করেপারেশনের কনজাভের্ন্সি শাখার দায়িত্বরত প্রানি চিকিৎসক ডাঃ রবিউল আলমের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, অনেক নগরবাশীর ময়লা আবর্জনা ফেলে ড্রেন ভড়াট করায় পয়ঃনিস্কাশন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এ সত্বেও প্রতিটি ড্রেন নিয়মিত পরিস্কার করা সহ প্রয়োজনীয় সব কিছু করা হচ্ছে বলেও দাবী করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।