বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল ব্যুরো/ দক্ষিণাঞ্চলে দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার যথেষ্ঠ উন্নতি হলেও ভয়াবহ প্লাবন মূক্ত হতে কিছুটা বিলম্ব ঘটছে। সোমবার সুন্দর সূর্যের হাসি নিয়ে শরতের সকাল শুরু হওয়া দিনটিতে সন্ধা পর্যন্ত পরিচ্ছন্ন আবহাওয়া থাকলেও উত্তর বঙ্গোপসাগরে আরেকটি লঘুচাপ নতুন করে ¯œায়ু চাপ বৃদ্ধি করছে। আগের লঘু চাপটি ভারতের মধ্য প্রদশে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে। নতুন এ লঘুচাপ কতটা বিরূপ প্রভাব ফেলবে আবহাওয়া বুলেটিনে তা সুস্পষ্ট করা না হলেও দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের নদী বন্দরগুলোকে ১নম্বর ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩নম্বর স্থানীয় সতর্কতার আওতায় রাখা হয়েছে। এমনকি মঙ্গলবার সকালের পরবর্তি ৪৮ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবনতা বৃদ্ধির কথাও বলা হয়েছে আবহাওয়া বিভাগ থেকে।
এদিকে গত ৩৬ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সব নদ-নদীর পানিই কম-বেশী ৩০Ñ৪৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হ্রাস পেলেও প্রবাহমান ৯০টি নদ-নদীর বেশীরভাগই সোমবার দুপুর পর্যন্ত বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। বরিশাল মহানগরীর প্রায় ৫০ ভাগ এলাকা এখনো ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কবলে। পটুয়াখালী ও বরগুনা শহরেও জোয়ারের পানি প্রবেস করছে। তবে উচ্চতা গত কয়েক দিনেরর তুলনায় কম।
ভাদ্রের বড় অমাবশ্যায় ভর করে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে ফুসে ওঠা সাগর রবিবার মধ্যরাত থেকে স্তিমিত হলে জোয়ারের উচ্চতা হ্রাস পেতে থাকে। সোমবার সকাল থেকে সাগর উজানের বণ্যার পানিও গ্রহন করতে শুরু করেছে। ফলে দক্ষিণাঞ্চল সহ উপক’লভাগ ধীরে ধীরে প্লাবন মূক্ত হতে শুরু করলেও নতুন আরেকটি লঘুচাপ নিয়ে স্বস্তিতে নেই কৃষি বিভাগ উপক’লবাসি। তবে বুধবার থেকে পরিস্থিতির আরো কিছুটা উন্নতি আশা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল মহল। উজানের ঢলের প্রবল শ্রোত না থাকলে মঙ্গলবারই পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি হতে পারত বলেও মনে করছেন মহলটি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মতে, পানি হ্রাসের সাথে নদী ভাঙনের তীব্রতাও বাড়বে। ফলে শুক্রবার নাগাদ দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকায়ই নদী ভাঙন পরিস্থিতি নতুন সংকট তৈরীর আশংকা রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকেই ভাদ্রের অমাবশ্যায় ভর করে লঘু চাপের প্রভাবে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়রের সাথে উজান থেকে নেমে আসা বণ্যার পানি আর মাঝারী মাত্রার ভারি বর্ষনে উপক’লভাগ সহ দক্ষিণাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করে। দক্ষিণাঞ্চলের ৯০টি নদ-নদীই বিপদসীমা অতিক্রম করে বুধবার মধ্যরাতের মধ্যেই। বুধবার শেষ রাত থেকে শণিবার পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে ২শ মিলিমিটারের ওপর বৃষ্টিপাত হয়েছে ।
অমাবশ্যার বৃষ্টি, উজানের ঢল আর ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার সবগুলো জনপদই পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। আকষ্মিক এ প্লাবনে দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সোয়া ৪ লাখ পুকুর, দীঘি ও বরোপিট থেকে কোটি কোটি মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। মাঠে থাকা ৩ লাখ হেক্টর জমির উঠতি আউশ ও রোপা আমন এবং বিভিন্ন ধরনের ফসল সোমবার বিকেল পর্যন্ত প্লাবন মূক্ত হয়নি। সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল সহ উপক’লভাগের কৃষি অর্থনীতিতে এ ভয়াবহ বিপর্যয়ের কারনে অন্তত ৫ লাখ কৃষক সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের মতে, যত দ্রুত ফসলি জমি প্লাবন মূক্ত হবে, ফসল ততটাই রক্ষা পাবে। তবে পানি সরে গেলে প্রকৃত ক্ষতি বোঝা যাবে বলে মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগন মনে করলেও প্লাবিত হওয়া প্রায় দেড় লাখ হেক্টর জমির উঠতি আউশের ধান রক্ষার খুব একটা সুযোগ নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।