পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিটি সংস্থাকে ডিএসসিসির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে : মেয়র তাপস
বর্ষা এলেই রাজধানীতে বেড়ে যায় খোঁড়াখুঁড়ি। বর্ষার আগেই মে মাসের মধ্যে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শেষ করার নির্দেশনা থাকলেও তা কেউই মানে না। বরং এ সময়ে বেশ তৎপর হয়ে ওঠে সরকারি সংস্থাগুলো। সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়িতে রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হয়ে লেগে থাকে যানজট। তাতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে। বর্ষকালের এই কর্মতৎপরতা সারা বছরেও যেন আর শেষ হতে চায় না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত অর্থবছরে ঢাকা দুই সিটির চার শতাধিক সড়ক খনন করা হয়েছে। চলতি বছর খননের জমা পড়া আবেদনের সংখ্যাও কম নয়। ঠিক এই মুহূর্তে দুই সিটির কয়টি এলাকায় রাস্তা খনন কাজ চলছে সেই হিসেব নেই খোদ সিটি করপোরেশনের হাতে। তবে গত এক বছরের ঢাকা উত্তর আর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৪০৬টি খননের আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ওয়াসার আবেদন ৬৯টি, ডিপিডিসি আবেদন করেছে ৫৩টি, আর বিটিসিএল করেছে ৩২টি আবেদন। তবে সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়ির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেছেন, উন্নয়নের নামে এক রাস্তা আর তিনবার কাটতে দেয়া হবে না। এক রাস্তা একবারই কেটে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য ডিএসসিসির অনুমতি নিতে হবে। নগর পরিকল্পনাবিদদের মতে, সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে বোঝাপড়া না থাকায় বছর না ঘুরতেই আবারো হাত দিতে হয় একই কাজে। যার খড়গ নেমে আসে নগরজীবনে। শুধু সেবা সংস্থাগুলোই নয়, এজন্য সিটি করপোরেশনকেও দুষছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভরা বর্ষার মধ্যে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় খোঁড়াখুুঁড়ি চলছে। করোনা সংক্রমণের দোহাই দিয়ে জানুয়ারির পর নগরীতে কোনো কাজ হয়নি বলেলেই চলে। বরং গত বছরের কাজও ফেলে রাখা হয়েছে। বর্ষা আসার সাথে সাথে সেই কাজগুলো শুরু হয়েছে। নতুন করে শুরু হয়েছে খোঁড়াখুঁড়ি। কমলাপুরের পীরজঙ্গী মাজার থেকে শাহজাহানপুর পর্যন্ত রাস্তা নতুন করে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়েছে। তাতে এক লেন দিয়ে যান চলাচল করছে। এতে করে প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে শাহজাহানপুর থেকে পল্টন পর্যন্ত। অন্যদিকে, পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকার ভাট মসজিদ, রামগঙ্গা রোড, বক্শিবাজার বোর্ড অফিস, নিউপল্টন খালেক লেন, চকমোগলটুলি রোড, ইমামগঞ্জ, চকবাজার থেকে মিটফোর্ড হাসপাতাল রোডসহ বেশ কিছু এলাকায় রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। ইমামগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এর মধ্যে কোনো কোনো রাস্তা এক বছর ধরে কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। আবার কোনোটার কাটা শুরু হয়েছে কয়েকদিন আগে। রাস্তা কেটে ফেলে রাখায় সেখানে কাদা ও পানি জমে থাকছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রাস্তাগুলো একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। চকবাজারের ব্যবসায়ী জুনায়েদ হোসেন বলেন, বর্ষার মধ্যে রাস্তার একপাশে কেটে আরেক পাশে মাটির স্তুপ দেয়া হয়েছে। এতে করে ওই সব রাস্তা দিয়ে পথচারিও চলাচল করতে পারছে না। ব্যবসার জন্য মানুষ এখানে আসলেও চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। তিনি বলেন, এসব রাস্তা দিয়ে এখন রিকশাও চলে না। মালামাল বহনের জন্য অনেক কষ্টে ভ্যান প্রবেশ করে। তাতেও ভোগান্তি সীমাহীন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের হাবিবুল্লাহ রোড গত ছয় মাসে একের পর এক উন্নয়ন কাজ করছে সিটি কর্পোরেশন, বিদ্যুৎ বিভাগ ও ওয়াসা। একই সড়কে বার বার কাটায় ৬ মাস ধরে ভোগান্তিতে এলাকাবাসী। পুরান ঢাকার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিমুদ্দিন রোড এলাকার বিভিন্ন সড়কে ফেলে রাখা হয়েছে সুয়ারেজ লাইনের পাইপ। সরু পথ পুরোটাই বন্ধ হবার উপক্রম। মতিঝিলের ব্যস্ত এই সড়কে সুয়ারেজ লাইনের কাজ শেষ হলেও ম্যানহোলের ঢাকনা লাগানো হয়নি। কাজের সময় ফুরিয়েছে অন্তত ছয়মাস আগেই।
একই চিত্র দেখা গেছে, গ্রিন রোড, ধানমন্ডির বিভিন্ন এলাকা, জিগাতলাসহ বিভিন্ন সড়কে। রাস্তা কেটে রাখলেও কাজ শেষ না করে ফেলে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন। কোথাও সড়কে পড়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী। বর্ষা এলেই কেন খোঁড়াখুঁড়ি এমন প্রশ্ন রেখে ইমামগঞ্জের ব্যবসায়ী নূর হোসেন বলেন, বহু বছর ধরে শুনে আসছি সমন্বয়হীনতার কথা। সেই সমন্বয় কবে হবে? বর্ষা এলে আমরা আর কতো কষ্ট করবো?
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নতুন অন্তর্ভুক্ত ওয়ার্ডগুলোতেও সমানে চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। বিশেষ করে উত্তরখান, দক্ষিণ খান, বেরাইদ এলাকার বাসিন্দারা কর্দমাক্ত রাস্তায় চলতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এসব এলাকায় কোথাও ওয়াসা, কোথাও ডেসকো কাজ করছে। ডিএনসিসি প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেন আমিরুল ইসলাম বলেন, আমরা করোনার মধ্যেও কাজ চালিয়ে গিয়েছি। কিন্তু তখন ওয়াসা ডেসকো তারা কাজ করতে পারেনি। এখন তারা কাজ করছে। এ প্রসঙ্গে ডিপিডিসির এমডি বিকাশ দেওয়ান বলেন, আমাদের বিভিন্ন প্রকল্প চলমান আছে, সেই প্রকল্পগুলোর যে কাজ আছে তা আগামী সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হবে।
এদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস ঘোষণা দিয়েছেন, উন্নয়নের নামে এক রাস্তা তিনবার কাটতে দেয়া হবে না। গত ১৩ আগস্ট রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সভায় বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এ কথা বলেন।
আধুনিক ও জনকল্যাণমূলক মহানগরী বিনির্মাণে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন সংক্রান্ত সভাটি আয়োজন করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কার্যক্রমে প্রতিটি সেবামূলক সংস্থার সমন্বয় প্রয়োজন। যাতে একই কাজের পুনরাবৃত্তি না হয়। এ জন্য ঢাকাকেন্দ্রিক সকল উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিটি সংস্থাকে সিটি কর্পোরেশনে সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। এর মধ্যে কোনো সংস্থা সমন্বয় না করলে তাদের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আগামী বছরের অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়ে মেয়র তাপস বলেন, যারা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায় তাদেরকে আগামী ১ অক্টোবরের মধ্যে ডিএসসিসির কার্যক্রমের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। এ সময়ের পর কেউ তদবির করলেও তাদের প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমতি দেওয়া হবে না। এবার সেটা এডিবি, বিশ্বব্যাংক, জিওবি বা অন্য কোনো সংস্থার ফান্ডিংয়ে করা হোক না কেনো। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে সবাইকে ১ অক্টোবরের মধ্যে অবশ্যই ডিএসসিসির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। এ প্রসঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, সরকারের সেবা সংস্থাগুলো যদি একসাথে হয়ে সময়ের মধ্যে সকল কর্ম এক জায়গায় নেয় তাহলে খরচ কমবে, দুর্ভোগও কমবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।