Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

থানায় আটকে নির্যাতনের অভিযোগে এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা

এসপির বাসায় টাকা চুরির অপবাদ

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০২০, ৭:৫৭ পিএম

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত এক পুলিশ সুপারের বাসা থেকে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে থানায় তিন দিন আটকে রেখে নির্যাতন করে টাকা আদায়ের ঘটনায় মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।

রবিবার (১৬ আগষ্ট) পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে এই মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। সেইসাথে মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম শাহ্ চৌধুরীর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইলের মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম শাহ্ চৌধুরীর বিরুদ্ধে তার বাসা থেকে টাকা চুরির অভিযোগে পরিচ্ছন্ন কর্মী ফরিদ মিয়াকে নির্যাতন করে। নির্যাতনের পর ফরিদকে মির্জাপুর থানায় দেওয়া হলে সেখানে তিনদিন আটকে রেখে ওই পরিচ্ছন্নকর্মী ফরিদকে নির্যাতন করে উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল বাশার মোল্লা। নির্যাতন করে তার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ পরিচ্ছন্নতা কর্মী মো. ফরিদ মিয়ার। এ ঘটনায় ফরিদ পুলিশ সদর দফতরে অভিযোগ করেছেন।

নির্যাতি পরিচ্ছন্নকর্মী ফরিদ মিয়া বলেন, গত ১৩ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় এসপি স্যারের বাসায কাজ শুরু করি এবং দুপুর ১টার দিকে কাজ শেষ করে ফিরে আসি। বিকেল ৪টার দিকে ৫ মিনিটের মধ্যে এসপি স্যার ফোন দিয়ে আমাকে বাংলোতে যেতে বলেন।

সেখানে পৌছালে তিনি বলেন, তার ১ লাখ টাকা চুরি হয়েছে এবং এই টাকা আমি চুরি করেছি। আমি অস্বীকার করলে তিনি আমাকে বেদম মারধর করেন। এরপর তিনি থানায খবর দিলে বিকেল সাড়ে ৫টায় পুলিশের এসআই আবুল বাশার মোল্লা এসে আমাকে বাংলোতেই জেরা করেন এবং মারধর করেন। এরপর এসআই এবং আরেকজন পুলিশ সিএনজিতে আমাকে মির্জাপুর থানায় নিয়ে যান। থানায় নিয়ে আমার চোখ এবং হাত পিছনে বেঁধে ঝুলিয়ে লাঠিপেটা করতে থাকেন। তিনি বলেন এক লাখ টাকা না দিলে আমাকে জানে মেরে ফেলবে এবং মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবেন। এভাবে তিনদিন থানা হাজতে আটকে আমাকে এসআই বাশার নির্যাতন করেন।

আমি অত্যাচার সইতে না পেরে আমার আত্মীয়দের কাছে কান্নাকাটি করে টাকা জোগাড় করে আমাকে থানা থেকে নিয়ে যেতে বলি। ১৫ মার্চ বিকেলে এসপি স্যারের বাসায় আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে আমাকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয়।

ফরিদ মিয়া বলেন তাকে নির্যাতনের ব্যাপারে মির্জাপুর থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ তার অভিযোগ নেয়নি। এরপর থেকে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন তিনি। এ নির্যাতনের বিচারের দাবিতে পরিচ্ছন্নকর্মী ফরিদ মিয়া ১৮ জুলাই দুপুরে ঢাকার সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলন করেন।

মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক আবুল বাশার মোল্লার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি আবুল বাশার নয়, একথা বলে লাইন কেটে দেন।

মির্জাপুর থানায় অফিসার ইনচার্জ মো. সায়েদুর রহমান বলেন, ওই পরিচ্ছন্নকর্মী থানায় কোন অভিযোগ দিতে আসেনি। তিনি পুলিশ সদরদপ্তরে অভিযোগ করেছেন শুনেছি। এসআই আবুল বাশার মোল্লার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার কথা তিন স্বীকার করেন।

মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম শাহ্ চৌধুরীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, তার বাসায় টাকা চুরির ঘটনা মির্জাপুর থানায় অবহিত করেন। পুলিশ পরিচ্ছন্নকর্মী ফরিদকে আটক করলে সে পুলিশর কাছে দোষ স্বীকার করে। পরে আংশিক টাকা দিয়ে চাকুরী ছেড়ে সে চলে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ