বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী দলই চা বাগান চালুর বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মালিক পক্ষ পূর্বের নোটিশ প্রত্যাহার করে বুধবার থেকে চা বাগান চালুর নোটিশ টাঙ্গিয়ে দিয়েছে। তবে সোমবার রাতের আঁধারে বিতর্কিত ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম দলই চা বাগানে অনুপ্রবেশ করলে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ফলে চা বাগান চালু নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। গত সোমবার (১৭ আগস্ট) বিকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে দলই চা বাগানের আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ও সার্বিক বিষয় নিয়ে বাগান ম্যানেজমেন্ট, পঞ্চায়েত ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় মালিক পক্ষের বন্ধের নোটিশ প্রত্যাহার করে দলই চা বাগান চালুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
দলই চা বাগান সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ২১ দিন বন্ধ থাকা দলই চা বাগান চালুর বিষয়ে গত সোমবার (১৭ আগস্ট) বিকাল ৪টায় মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার ফারুক আহমদ বিপিএমকে সাথে নিয়ে সরেজমিন দলই চা বাগানে গিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বৈঠকে বসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুর রহমান, কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক, কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিছ বেগম, শ্রম অধিদপ্তরের শ্রীমঙ্গল কার্যালয়ের শ্রম কর্মকর্তা মোশাহিদ বক্স চৌধুরী, দলই চা বাগান কোম্পানীর এজিএম খালেদ খান ও চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৭ জুলাই সন্ধ্যায় মালিক পক্ষের লে-অফ দেয়া নোটিশ প্রত্যাহার করে দলই চা বাগান চালুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
তবে এই সিদ্ধান্তের পর সোমবার রাতে পুলিশ প্রহরায় দলই চা বাগানের বিতর্কিত ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম বাগানে নিজ বাংলোয় প্রবেশ করেন। এই সংবাদ পেয়ে দলই চা বাগান পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দসহ শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ব্যবস্থাপকের বাগানে প্রবেশ নিয়ে নেতৃবৃন্দ মৌখিকভাবে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন।
অভিযোগ করে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামভজন কৈরী জানান, দীর্ঘ ২১ দিন চা বাগান বন্ধ থাকার পর সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি’র উদোগে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সোমবার দলই চা বাগানে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে চা বাগান কর্তৃপক্ষের বে-আইনী নোটিশ প্রত্যাহার করে অবিলম্বে চা বাগান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একই সাথে চা শ্রমিকদের মজুরি ও বিতর্কিত ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলামের বিষয়টি পরবর্তীতে আলোচনাক্রমে সমাধানের সিদ্ধান্ত হয়। ব্যবস্থাপক আপাতত দলই চা বাগানের বাহিরে থেকে কোম্পানীর প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকারও সিদ্ধান্ত হয়। এসব সিদ্ধান্তে দলই চা বাগান কর্তৃপক্ষ ও চা শ্রমিকরা একমত হন। তবে সোমবার রাতের আঁধারে ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম দলই চা বাগানে পুলিশ প্রহরায় অনুপ্রবেশ করায় শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিতর্কিত এই ব্যবস্থাপককে রাতের আঁধারে চা বাগানে প্রবেশ করিয়ে শ্রমিকদের উত্তেজিত করে নতুন করে সমস্যা সৃষ্টি করে চা শ্রমিকদের দায়ী করার পায়তারা করছে কোম্পানী।
তবে দলই চা বাগান ব্যবস্থাপক আমিনুল ইসলাম বলেন, বুধবার থেকে বাগান চালুর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তবে একটি চক্র চা বাগানে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে। এটি মোটেও কাম্য নয়।
দলই চা বাগান কোম্পানীর এজিএম খালেদ খান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে চা বাগান খোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাই বুধবার থেকে চা বাগান খোলার নোটিশ দেয়া হয়েছে। এর চেয়ে বেশ কিছু তিনি বলতে রাজি হননি।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, সোমবার বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বুধবার থেকে দলই চা বাগান খুলবে। তবে দলই চা বাগানে রাতের আঁধারে ব্যবস্থাপকের প্রবেশের বিষয়টি চা শ্রমিকদের কাছ থেকে শুনেছেন। এর প্রতিবাদে এখন যে, দলই চা বাগানে নতুন করে উত্তেজনা ও ব্যবস্থাপকের বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলেও জানান।
নোট: সোমবারের মিটিংয়ের ছবি সংযুক্ত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।