Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জিয়াউর রহমানের অপরাধ বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০২০, ৭:২৪ পিএম

১৫ আগস্টের ঘটনায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে যুক্ত করতে সরকার নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দুর্যোগময় মুহূর্তে জাতীয় নেতৃত্বের ব্যর্থতায় স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দায়িত্ব পালন করে জাতির কা-ারী হিসেবে ভূমিকা পালন করেছিলেন একজন মেজর। আজকে তার বিরুদ্ধে মিডিয়ায় বিষেদগার করছেন। অথচ ১৫ আগস্ট মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু নিয়ে আপনারা (আওয়ামী লীগ) যে মামলা করেছিলেন সেই মামলাতেও জিয়াউর রহমানের নাম ছিল না। তিনি তখন ছিলেন সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় ব্যক্তি, প্রথম ব্যক্তি তার কোনো দায়-দায়িত্ব নেই? কারণ তিনি আওয়ামী লীগ করেন। আওয়ামী লীগের এমপি মন্ত্রী ছিলেন এজন্য তিনি বাদ। আর জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন এটাই ছিল তার অপরাধ। তিনি যদি বাকশালকে সাপোর্ট করতেন তাহলে এ ধরনের কোনো কথাই আসতো না।

সোমবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত মরহুম ড. এমাজউদ্দিন আহমেদের স্মরণে শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের গর্বিত সন্তান সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমান তার রাজনৈতিক দর্শন এবং কর্মকা-ে শুধু বহুদলীয় গণতন্ত্র নিশ্চিতকরণে নয় উৎপাদন উন্নয়নের রাজনীতি এবং বাংলাদেশ যে একটি আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র এটা জনগণ উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন জিয়াউর রহমানের সময়। এখানেই কষ্ট হচ্ছে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের নেত্রীর। তার এত জনপ্রিয়তা কেন? তার রাজনৈতিক দর্শন বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ এবং বহুদলীয় যে চেতনা এই চেতনা কেন এখানে প্রতিষ্ঠা করেছে এটাই তাদের কষ্ট। তাকে হত্যা করল চিটাগাং সার্কিট হাউসে, এরপর সেই পতাকাটি বহন করলো তার সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়া। এই কারণেই সমস্ত প্রতি হিংসা জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার ওপরে। শেখ হাসিনার চেয়ে গণতন্ত্রের কমিটমেন্ট বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন চ্যাম্পিয়ন। এই জন্যেই বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যত রাগ, ঈর্ষা। যে মামলার সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই কোনো সাক্ষী নেই সেই মামলায় সাজা দিয়ে তাকে কারাগারে রাখা হয়েছিল। আর আজকে জিয়াউর রহমানকে নানা ষড়যন্ত্র চক্রান্ত করে যুক্ত করতে চাচ্ছে ১৫ আগস্টের সাথে।

তিনি বলেন, খন্দকার মোশতাক বাকশালের প্রভাবশালী নেতা ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা তিনি প্রেসিডেন্ট হলেন পাশাপাশি ক্যাবিনেট পার্লামেন্ট সবই আওয়ামী লীগের তাদেরকে তো আপনি তেমন কিছু বললেন না? ৭২ থেকে ৭৫ ক্যাবিনেটে আব্দুল মান্নান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন মুশতাকের ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন তারপরেও বিভিন্ন আমলা ও সামরিক কর্মকর্তারা পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন সে সময় তারা চাকরি করেছেন তারপরে আপনার আওয়ামী লীগের এমপি হয়েছে মন্ত্রী হয়েছে, তাদেরকে তো কিছু বলেন না। ওই রক্তাক্ত লাশ নিয়ে শপথ পড়ালেন তিনি এখন উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম কই তাকে তো কিছু বলছেন না। আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক তোফায়েল আহমেদ একটি মিছিল বের করতে পারিনি সেদিন।

রিজভী বলেন, দেশে প্রথম সুশাসনের ব্যবস্থা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তার সময়ে দেশের মানুষ ঘরের দরজা খুলে ঘুমাতে পারতো। আর আপনার শাসন হচ্ছে ক্যাসিনো, জেকেজি, রিজেন্ট সাহেদ, সাবরিনা। কারন যখনই দুর্বৃত্তের বৈশিষ্ট্য দ্বারা শাসন দেখাবে তখন গণতন্ত্র থাকবে না। গত ১০ বছরে ঢাকা শহরে পঞ্চাশটি ক্যাসিনো হয়ে গেল, হাসপাতালগুলোতে লাইসেন্স নাই এবং যাকে করোনা টেস্ট এর সনদ দেয়া হলো তিনি ভুনা সনদ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিল। তারা হলো সাবরিনা শাহেদ। এদেরকে কারা সৃষ্টি করেছে?

ড.এমাজ উদ্দিন এর মৃত্যুতে সরকার শোকবাণী না দেয়ায় ছোট হয়েছে মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রফেসর এমাজউদ্দিনের ছাত্র শুধু বিএনপি নয় আওয়ামী লীগ এবং অন্যান্য দলের রয়েছে। শোকবাণী না দিয়ে তারা কি বড় হয়েছেন না তারা বড় হননি। তিনি তো রাজনৈতিক মতবাদের উদ্ধে সবার উপরে তিনি ছিলেন শিক্ষক এই অভিভাবকের ছোঁয়া যারা পেয়েছেন তারাই শুধু বলতে পারবেন তিনি কেমন মানুষ ছিলেন।আমরা আজকে এমন সংকীর্ণতায় ভুগছি যে এই রকম একজন মহীরুহের মৃত্যুতে আমরা শোক বাণী পর্যন্ত দিতে পারছিনা।

আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. সুকুমাল বড়ুয়া, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আবদুল লতিফ মাসুম, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম প্রমুখ।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ১৭ আগস্ট, ২০২০, ১১:২৫ পিএম says : 0
    একটা কথা বিএনপির দলের আবিষ্কৃত সেটা হচ্ছে বহুদলীয় রাজনীতি এই রাজনীতির কথা আমি ১৯৬৫ সাল থেকে ছাত্র রাজনীতির সাথে পরে মূল রাজনীতিতে জড়িত হয়েও শুনিনি। কিন্তু জিয়া মিয়াকে বিরাট কিছু প্রমাণ করার জন্যে তাঁর দল বহুদলীয় রাজনীতি শব্দটা প্রচার করতে শুরু করে। বহুদলীয় রাজনীতি এটা রাজনৈতিক মাঠে গণতন্ত্রের একটা নতুন নাম নিয়ে বিএনপি মাঠে নামে যানাকি গ্রহণযোগ্য নয়। জাতীর জনকে হত্যা করে জিয়া মিয়া ক্ষমতা দখল করে দেশে সকল রাজনীতি বন্ধ করে দিয়ে সামরিক শাসন জারি করেছিলেন তারপর জিয়া মিয়া পূর্ব পাকিস্থানের একমাত্র নাগরিক গোলাম আযম (গোআযম) যিনি মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাননি। জিয়া মিয়া ক্ষমতা নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যে রাজনীতি করার ইচ্ছা হলে সেই গো-আযমকে রাজনৈতিক গুরু বানিয়ে পাকিস্তান থেকে পাকিস্তানী নাগরিক হিসাবে বাংলাদেশের ভিসা দিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসে এবং তাঁর বাড়ি যেটা সরকার বাজেয়াপ্ত করেছিল সেই বাড়িতেই থাকতে দেয়। শুধু তাইনয় তাঁর ছেলেকেও সেনাবাহিনীতে সেনা কর্মকর্তা হিসাবে নিয়ে নেয়। এভাবেই জিয়া মিয়া জামাতকে বৈধ্য করার জন্যেই রাজনীতির মাঠে নামেন নিজের একটা দল (বিএনপি) বানিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকেরা কোনদিনও জামাতকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনা এটাই নিন্দুকদের বিশ্বাস। তাই এখন কেহই সমাজের চিহ্নিত বিগমাউথ বাবুর কথায় মাথা ঘামায় না এটাই দেখা যাচ্ছে। আল্লাহ্‌ সবই জানেন তিনিই একমাত্র শক্তি যিনি নির্দ্বিধায় মানুষের মঙ্গল করে থাকেন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ